ইবি নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বাতিলের দাবি
Published: 22nd, April 2025 GMT
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে গোল টেবিল বৈঠক করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সেন্টার ফর পিচ অ্যান্ড রিসার্চ (সিপিআর)। এতে কমিশনের প্রতিবেদন কোরআন-সুন্নাহর সঙ্গে সাংঘর্ষিক দাবি করে তা বাতিল, নতুন সংস্কার কমিশনের গঠনের দাবি জানায় সংগঠনটি।
মঙ্গলবার (২২এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় আইন অনুষদের সভাকক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড.
আরো পড়ুন:
বিভাগের নাম পরিবর্তনের দাবিতে ইবির প্রশাসন ভবনে তালা
ছাত্রশিবিরের শিক্ষাবৃত্তি পেলেন ইবির অর্ধশত শিক্ষার্থী
এছাড়া আলোচক হিসেবে ছিলেন আল কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. নাছির উদ্দিন মিঝি, অধ্যাপক ড. ময়নুল হক, আল ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু বকর মো. জাকারিয়া, ধর্মতত্ত্ব অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আ ব ম সিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু সিনা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, নারী অধিকার সংস্কার কমিশন যে প্রস্তাব দিয়েছে, সেখানে অত্যন্ত আপত্তিকরভাবে ধর্মীয় বিধিবিধান, বিশেষ করে ইসলামি উত্তরাধিকার আইন ও ইসলামি পারিবারিক আইনকে নারীর প্রতি বৈষম্যের কারণ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের বিতর্কিত, ইসলামবিদ্বেষী, ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতকারী, কোরআন-সুন্নাহর সঙ্গে সাংঘর্ষিক, ন্যাক্কারজনক কটাক্ষপূর্ণ প্রস্তাব দেওয়ার কারণে এই কমিশন বাতিলের দাবি করছি।
তারা আরো বলেন, যারা সমাজের প্রতিনিধিত্ব করে না, যাদের কেউ চেনে না, তারা এ কমিশনে কাজ করেছে। কমিশনে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে এমন কাউকে রাখা হয়নি। এ কমিশনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা এ অঞ্চলের ধর্মীয়, সামাজিক, রাজনৈতিক বাস্তবতা সম্পর্কে অজ্ঞ। তারা নারীর অধিকারের কথা বলে পাশ্চাত্যের প্রেসক্রিপশন এ দেশে বাস্তবায়ন করতে চায়।
বক্তাদের দাবি, স্পষ্টতই এ প্রতিবেদনে ইসলামবিদ্বেষী মনোভাব লক্ষ্যণীয়। আমাদের এখন থেকে এর বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকতে হবে। কোনোভাবেই পাশ্চাত্যের চেপে দেওয়া কোনো আদর্শকে প্রতিষ্ঠা হতে দেওয়া যাবে না।
বেসরকারি সংস্থা ‘নারীপক্ষ’ এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শিরীন পারভীন হককে প্রধান করে গত ১৮ নভেম্বর নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। এ কমিটি সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে ৪৩৩টি সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দেয়।
কমিশন মোটা দাগে সংবিধান, আইন ও নারীর অধিকার— এই তিন বিষয়ে সুপারিশ করেছে। সেখানে সমতা ও সুরক্ষার ভিত্তি জোরালো করার কথা বলা হয়েছে। সুপারিশগুলো অন্যতম হলো- অভিন্ন পারিবারিক আইনের মাধ্যমে সব ধর্মের নারীদের জন্য বিয়ে, তালাক, উত্তরাধিকার ও ভরণপোষণে সমান অধিকার নিশ্চিত করা।
অভিভাবক ও প্রতিপাল্য আইন, ১৮৯০ সংশোধন করে সন্তানের ওপর নারীর জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করা। সংসদীয় আসন বাড়িয়ে ৬০০ করে সেখানে ৩০০ আসন নারীর জন্য সংরক্ষিত রেখে সরাসরি নির্বাচন। শ্রম আইন সংশোধন করে যৌনকর্মীদের মর্যাদা ও শ্রম অধিকার নিশ্চিত করা।
ঢাকা/তানিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ফরিদপুরে শিশুকে ধর্ষণের দায়ে যুবকের যাবজ্জীবন
ফরিদপুরে ৮ বছরের শিশুকে ধর্ষণের দায়ে যুবক আমিরুল মৃধাকে (৩২) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) শামীমা পারভীন এ আদেশ দেন। সাজাপ্রাপ্ত আমিরুল ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার খরসূতি গ্রামের মৃত আনোয়ার মৃধার ছেলে।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১৯ জুন ফরিদপুর পৌরসভার কমলাপুর পিয়ন কলোনিতে ধর্ষণের শিকার হয় শিশুটি। ওই দিন শিশুটি স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পর তার মামার দোকানে চিপস কেনার জন্য যায়। ওই সময় আমিরুল দোকানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি শিশুটিকে কলোনির একটি হোস্টেলের পিছনের জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করে পালিয়ে যান। পরে শিশুটির মা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে এবং মামলা করেন।
এ বিষয়ে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি আইনজীবী গোলাম রব্বানী ভূঁইয়া রতন জানান, আমরা রাষ্ট্রপক্ষ মামলার এ রায়ে সন্তুষ্ট। এই মামলা একটি উজ্জ্বল উদাহরণ হয়ে থাকবে ধর্ষকদের জন্য।