সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার দায়ে দৈনিক কালেরকণ্ঠ পত্রিকার তালা (সাতক্ষীরা) উপজেলা প্রতিনিধি রোকনুজ্জামান টিপুকে ১০ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) উপজেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মো. রাসেল এ রায় দেন।

তালা উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন তৈরির কাজে অনিয়ম বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে যায় রোকনুজ্জামান টিপু। এ সময় তালা উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী এম এম মামুন আলম তথ্য দিতে অস্বীকার করায় কথাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তা মারামারিতে রূপ নেয়। এ ঘটনা উভয় পক্ষ তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তিনি সরেজমিন উপস্থিত হয়ে স্থানীয়দের স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে এ রায় দেন।

তালা উপ-সহকারী প্রকৌশলী এম এম মামুন আলম বলেন, ‘‘তিনি উপজেলা কমপ্লেক্স ভবনের কাজ তদারকির সময় সাংবাদিক টিপু সুলতান কিছু বুঝে উঠার আগেই আমার মুখে ঘুষি মারেন। বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তিনি উপস্থিত সকলের স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে সাংবাদিক টিপু সুলতানকে ১০ দিনের সাজা দেন।’’ 

আরো পড়ুন:

ডেমরায় রাজউকের মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, দেড় লাখ টাকা জরিমানা

নাটোরে অবৈধভাবে মাটি বিক্রি করায় জরিমানা

সাংবাদিক টিপু সুলতান বলেন, ‘‘কাজের মান খারাপ হচ্ছে¬- এমন সংবাদের ভিত্তিতে আমি সেখানে তথ্য সংগ্রহ করতে যাই। এ সময় উপ-সহকারী প্রকৌশলী এম এম মামুন আলম আমাকে সহযোগিতা না করে কাছে থাকা ছাতা দিয়ে আমাকে মারতে শুরু করেন। আমি তাকে প্রতিরোধ করতে গেলে হাতাহাতি হয়।’’ 

তালা উপজেলা প্রকৌশলী রথীন্দ্রনাথ হালদার বলেন, ‘‘এ সময় আমি অফিসের কাজে বাইরে ছিলাম। অফিসে ফিরে শুনি আমার অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে মারধর করা হয়েছে।’’ 

তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মো.

রাসেল বলেন, ‘‘সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে সাংবাদিক রোকনুজ্জামান টিপুকে ১০ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছি।’’ 

তিনি আরো বলেন, ‘‘আমার একজন কর্মকর্তাকে মারধর করা হয়েছে এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উপস্থিত শ্রমিকদের স্বাক্ষ্য নিয়ে ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে।’’

এ ঘটনায় কর্মরত সকল সাংবাদিক নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

ঢাকা/শাহীন/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর মকর ত ১০ দ ন উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

বুয়েট নির্দেশিত ব্যাটারি রিকশা নামানোর চিন্তা

রাজধানীর সড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার দৌরাত্ম্য ঠেকাতে বিকল্প পথে হাঁটছে অন্তর্বর্তী সরকার। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) নির্দেশিত নতুন মডেলের ব্যাটারি রিকশা সড়কে নামানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর অভিজাত এলাকায় বিদেশি নাগরিকসহ বাসিন্দাদের নিরাপত্তায় ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের বিকল্প খুঁজতে গুলশান সোসাইটি, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) কর্তৃপক্ষ।

সূত্র জানায়, বৈঠকে ডিএসসিসি কর্মকর্তারা বুয়েটের দেওয়া ব্যাটারিচালিত রিকশার একটি মডেল উপস্থাপন করেন। এটি তারা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে সুপারিশসহ জমা দেবেন। মন্ত্রণালয় ডিজাইন ও সুপারিশ অনুমোদন দিলে, এর আলোকে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে মডেল অনুসরণ করে রিকশা তৈরি করতে বলা হবে। বুয়েটের সুপারিশে তৈরি রিকশাকে টেকনিক্যাল কমিটির মাধ্যমে সিটি করপোরেশন লাইসেন্স দেবে। লাইসেন্সের বাইরে নগরীতে কোনো রিকশা চলতে দেওয়া হবে না। এটি চালু করার পর ধীরে ধীরে বর্তমানের ব্যাটারিচালিত রিকশা ঢাকা শহর থেকে উঠিয়ে নেওয়া হবে। বুয়েটের নতুন মডেলের রিকশা ডিএনসিসি নয়, ঢাকাসহ সারাদেশে চালানোর সুপারিশ করা হবে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ সমকালকে বলেন, ‘ঢাকার সড়কে এখন যে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলছে, সেগুলো থাকবে না। বুয়েট আমাদের ব্যাটারিচালিত রিকশার একটি নকশা তৈরি করে দিয়েছে। এটি নিয়ে মঙ্গলবার ব্যাটারিচালিত রিকশা নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছি। বুয়েটের নকশা অনুযায়ী তাদের রিকশা তৈরি করতে বলা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘নতুন মডেলে এখন ব্যাটারিচালিত রিকশায় যে ধরনের হাতে ব্রেক থাকে, তেমন থাকবে না। পায়ে ব্রেক থাকবে। রিকশার গতি নিয়ন্ত্রণে নির্দিষ্ট মোটর থাকবে। এ মডেলের রিকশা যারা তৈরি করবে, তাদের টেকনিক্যাল কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে লাইসেন্স দেওয়া হবে। গুলশান-বনানী নয়, লাইসেন্স ছাড়া নগরীতে কোনো রিকশা চলতে দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে আমরা চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করব।’
ঢাকার গলিপথ ছেড়ে প্রধান সড়কেও অবাধে চলছে ব্যাটারিচালিত এসব অটোরিকশা। কিছুতেই তাদের আটকানো যাচ্ছে না। গত সোমবার বনানী এলাকায় সাধারণ যাত্রী ও মোটরসাইকেল চালকদের ওপর চড়াও হন তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ