বিভাগের নাম পরিবর্তন ও সেশনজট নিরসনের দাবিতে প্রশাসন ভবনে তালা দিয়ে আন্দোলন করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের একদল শিক্ষার্থী। 

এদিকে বিভাগের নাম পরিবর্তন না করার দাবিতে প্রশাসন ভবনের অন্য অংশে অবস্থান নেন বিভাগটির আরেকদল শিক্ষার্থীরা। 

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে তারা এ অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেন। দীর্ঘ ৩ ঘণ্টা পরে দুপুর ২টার দিকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আলোচনা হয়। আলোচনায় পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ প্রত্যাহার করেন শিক্ষার্থীরা।

আরো পড়ুন:

ছাত্রশিবিরের শিক্ষাবৃত্তি পেলেন ইবির অর্ধশত শিক্ষার্থী 

ইবি অর্থনীতি ক্লাবের কমিটি গঠন

শিক্ষার্থীরা বলেন, গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর বিভাগে দাবি উত্থাপন করা থেকে শুরু করে দীর্ঘ ৮ মাস যাবত আমরা দাবি আদায়ে আন্দোলন করে যাচ্ছি। বিভাগের প্রসেস অনুযায়ী আবেদন প্রেরণ থেকে শুরু করে প্রশাসনিক প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে আমরা নিয়ম মেনেই এ আন্দোলন শুরু করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলে আমাদের নাম পরিবর্তনের বিষয়টি উত্থাপিত হলে উপাচার্যের একটি এক্সপার্ট কমিটি গঠন করেন।

সেই একডেমিক কাউন্সিল পরবর্তী সিন্ডিকেটে আমাদের নাম পরিবর্তন সংক্রান্ত কোনো সিদ্ধান্ত প্রশাসন হতে আসেনি। আমরা প্রশাসনের তালবাহানা ছাড়া এখন পর্যন্ত কিছুই দেখতে পাইনি। আমরা নাম পরিবর্তন সংক্রান্ত কোনো আপডেট পাইনি এবং এক্সপার্ট কমিটির রিপোর্টের সিদ্ধান্তও আমরা পাইনি। আমাদের আন্দোলনরত শিক্ষার্থী এ প্রহসনের কড়া জবাব দিতে আজ প্রশাসন ভবনে তালা দিতে বাধ্য হয়েছে।

শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, আমরা আজকে বিভাগের নাম পরিবর্তনের জন্যে গঠিত এক্সপার্ট কমিটির রিপোর্ট সাবমিট এবং নাম পরিবর্তন করে এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি করার চূড়ান্ত আপডেট নিয়েই এখান থেকে অবরোধ বন্ধ করবো।

তারা আরো বলেন, আমাদের বিভাগের পরীক্ষা কমিটির সদস্যদের মধ্যে মতনৈক্য ও ক্লাস পরীক্ষা নিতে স্বেচ্ছাচারিতা আমাদেরকে একাডেমিক জটে ফেলে দিচ্ছে। যেখানে আমরা চাচ্ছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে আমাদের পরীক্ষা শেষ করতে সেখানে আমাদের পরীক্ষা কমিটির দুইজন সদস্য শিক্ষক মিটিংয়ে বসে সিদ্ধান্ত দিতে রাজি নন। আমাদের দাবি হচ্ছে আজকের মধ্যে বিভাগের পূর্বের পরীক্ষা কমিটি তাৎক্ষনিকভাবে বাতিল করে নতুন কমিটি দিয়ে আমাদের বিভাগের একাডেমিক কার্যক্রম সচল করা হোক। 

এদিকে, বিভাগের নাম পরিবর্তন না করার দাবিতে প্রশাসন ভবনে অবস্থান গ্রহণ করেন বিভাগটির আরেকাংশের শিক্ষার্থীরা। তবে বিভাগের শিক্ষকরা তাদের বুঝালে তারা অবস্থান ছেড়ে চলে যায়। 

তাদের দাবি হলো- বিভাগের পূর্ব নাম ছিল এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড জিওগ্রাফি। পরে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে মিলেয়ে বিভাগের নাম জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট করার দাবি জানিয়েছি। সকল চাকরিতে জিওগ্রাফির গুরুত্ব একটু বেশি। আর জিওগ্রাফি মূল সাবজেক্ট। তাই আমরা কখনো মূল সাবজেক্ট হারাতে চাই না। তাই আমরা চাই আমাদের বিভাগের যেই নাম বর্তমানে আছে, সেটাই নামই বহাল থাকবে। 

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড.

নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। এ বিষয়ে গঠিত কমিটি আগামী মাসের ২০ তারিখের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করবে। সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

এর আগে, একই দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করেন বিভাগটির শিক্ষার্থীরা। পরে বিভাগীয় সভাপতি ও প্রক্টরিয়াল বডির আশ্বাসে তালা খুলে দেয় শিক্ষার্থীরা।

পরবর্তীতে এ বছরের ২৬ জানুয়ারি আবারো প্রশাসন ভবনের সামনে একই দাবিতে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও বিভাগের নাম পরিবর্তন না করার দাবিতেও মানববন্ধন ও আন্দোলন করেছে বিভাগের আরেকদল শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা/তানিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এনভ য়রনম ন ট র পর ক ষ কর র দ ব কম ট র আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনায় আ.লীগের মিছিলকারীদের গ্রেপ্তার দাবি এনসিপির

খুলনায় বিভিন্নস্থানে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল করায় প্রশাসনের নীরব ভূমিকার প্রতিবাদ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) খুলনার নেতারা। এছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়। 

রবিবার ( ২০ এপ্রিল) বিকাল সাড়ে ৩টায় খুলনা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এনসিপি খুলনার নেতা আহম্মদ হামীম রাহাত ও ডা. আব্দুল্লাহ চৌধুরী।

আরো পড়ুন:

যশোরে আত্মগোপনে থাকা আ.লীগ নেতাদের বাড়িতে পুলিশ

বরগুনায় শ্রমিক লীগ নেতা ৯ মামলায় গ্রেপ্তার 

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘‘সম্প্রতি খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি, গণহত্যায় অভিযুক্ত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আওয়ামী লীগ প্রকাশ্যে মিছিল করেছে। ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সন্ত্রাসী সংগঠন আওয়ামী লীগের হাতে প্রায় দুই হাজার নাগরিককে হত্যার রক্ত লেগে আছে ও হাজার হাজার মানুষকে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছে। ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে খুনি হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে বিতাড়িত করার ৮ মাসের মধ্যে এই সন্ত্রাসী সংগঠনের দেশব্যাপী সিরিজ কর্মসূচি জুলাই-পরবর্তী বাংলাদেশের অস্তিত্বে বারবার আঘাত হানার অপচেষ্টা। ছাত্রজনতা এই অপচেষ্টা এবার কঠোরভাবে প্রতিহত করবে।’’

সম্মেলনে আরো বলা হয়, ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ছাত্রজনতা রাজপথে অবস্থানকালে এই সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রাস্তায় নামতে সাহস পায়নি। কিন্তু অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় হলো, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে ছাত্রজনতা নিজ কাজে ফিরে যাওয়ার পর দেশবাসী প্রায়শই এমন অরাজকতার শিকার হয়েছে। 

আরো বলা হয়, ‘‘৮ মাস পূর্বে খুলনা শহরের যে জিরো পয়েন্টে ছাত্ররা রক্ত দিয়েছে, জুলাই অভ্যুত্থানের শহিদ মীর মুগ্ধের তোরণের সন্নিকটে পরাজিত শক্তির এমন আস্ফালন আমাদের পীড়া দেয়। প্রশাসনের এই নির্লিপ্ততা ও নিষ্ক্রিয়তা প্রশ্নবিদ্ধ ও নিন্দনীয়। এটি শুধু স্থানীয় প্রশাসনের ব্যর্থতা নয়, বরং গোটা রাষ্ট্রব্যবস্থায় নিয়োজিত প্রশাসনের দুর্বলতার প্রতিফলন।’’ 

লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয় দেশের সকল গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল ও দেশপ্রেমিক শক্তির প্রতি মতপার্থক্য ভুলে জাতির বৃহত্তর স্বার্থে এই অপশক্তির বিরুদ্ধে সম্মিলিত অবস্থান গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়।  

অন্তর্বর্তী সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে এনসিপি নেতারা বলেন, অতি দ্রুত এই সন্ত্রাসী সংগঠনকে নিষিদ্ধ করতে উদ্যোগ না নেওয়া হলে তীব্র আন্দোলনের মুখোমুখি হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিন। 

ঢাকা/নুরুজ্জামান/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গুম হত্যার চেয়েও ভয়াবহ অপরাধ, বিচার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার: আইন উপদেষ্টা
  • তালিকায় ১ হাজার ৪১৫ নদী, এবার কি বাঁচবে
  • ভ্যাটিকানের অন্তর্বর্তী প্রধান কেভিন ফ্যারেল সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে
  • যুক্তরাষ্ট্র-ইরান পরবর্তী বৈঠক মাসকটে
  • আগামী তিনদিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাস 
  • বাংলার অজানা স্বর্ণমুদ্রার খোঁজ
  • বৃষ্টি নিয়ে যে বার্তা দিল আবহাওয়া অধিদপ্তর
  • মামলায় আটকে আছে ইকোপার্ক
  • খুলনায় আ.লীগের মিছিলকারীদের গ্রেপ্তার দাবি এনসিপির