বরিশালের আগৈলঝাড়ায় র‍্যাবের মাদকবিরোধী অভিযানে গুলিতে নিহত কলেজছাত্র সিয়াম মোল্লার (২২) মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়নি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে গৌরনদী থানা–পুলিশ সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর মরদেহ বরিশালের শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠিয়েছে।

তবে হাসপাতালের ময়নাতদন্তের কাজে নিয়োজিত ডোম বিজয় কুমার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখনো লাশ বরিশালের মর্গে পৌঁছায়নি। সন্ধ্যায় পৌঁছাতে পারে। তবে ময়নাতদন্ত আগামীকাল বুধবার ছাড়া সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা নেই।’

গৌরনদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

ইউনুস আলী বলেন, নিহত সিয়ামের লাশ গতকাল সোমবার রাতে গৌরনদী থানা–পুলিশ গ্রহণ করে। তবে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তির লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে করার আইনি বাধ্যবাধকতা থাকায় আজ দুপুরে তা সম্পন্ন হয়েছে। বিকেলে তাঁরা লাশ বরিশালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।

এদিকে গতকাল মাদকবিরোধী অভিযানে গুলির ঘটনায় আগৈলঝাড়া থানায় দুটি মামলা করার প্রস্তুতি চলছে। র‍্যাব–৮–এর পক্ষে জ্যেষ্ঠ ওয়ারেন্ট অফিসার শেখ রিয়াজুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি করবেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে আগৈলঝাড়া থানার ওসি অলিউল ইসলাম বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ও সরকারি কাজে বাধাদান ও হত্যাকাণ্ড সংঘটনে পরস্পর সহযোগিতাসহ হামলার অভিযোগে পৃথক দুটি মামলার প্রস্তুতি চলছে। তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো গ্রেপ্তার বা আটক নেই। মামলায় ১০ থেকে ১২ জন অজ্ঞাত আসামি ছাড়া আহত ও নিহত ব্যক্তিদের নাম আছে।

পুলিশের ভাষ্য, গতকাল সন্ধ্যায় আগৈলঝাড়া উপজেলার রত্নপুর ইউনিয়নের মোল্লাপাড়ায় র‍্যাব–৮–এর মাদকবিরোধী অভিযানে গুলিবিদ্ধ হয়ে সিয়াম মোল্লা (২২) নিহত হন। সিয়াম বরিশালের উজিরপুর উপজেলার বাহেরঘাট এলাকার বাসিন্দা মো. রিপন মোল্লার ছেলে। এ ঘটনায় সিয়ামের ফুফাতো ভাই রাকিব মোল্লা (১৮) আহত হয়েছেন। রাকিব বরিশালের শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি ওই এলাকার খালেক মোল্লার ছেলে।

নিহত সিয়ামের পরিবার জানায়, সিয়াম মোল্লা স্থানীয় জল্লা ইউনিয়নের কারফা আইডিয়াল কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। আর তাঁর ফুফাতো ভাই রাকিব সাহেবের হাট মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন।

সিয়ামের চাচা লিটন মোল্লা সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ভাইয়ের ছেলে সিয়াম ও ভাগনে রাকিব ছাত্র। তাঁরা মাদকের কারবার বা মাদকাসক্ত নন। এই অভিযোগ সত্য নয়। এখন কেন এমন ঘটনা ঘটল, আমরা তা বুঝতে পারছি না। পরিবারের দুই সদস্যের এমন পরিণতির কারণে আমরা বিধ্বস্ত।’

এ ব্যাপারে র‍্যাব–৮–এর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুনবরিশালে র‌্যাবের মাদকবিরোধী অভিযানে হামলা, গুলিতে তরুণ নিহত২১ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ম দকব র ধ ময়ন তদন ত বর শ ল র

এছাড়াও পড়ুন:

শুষ্ক চুলে প্রাণ ফেরাতে

‘চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা’– কবির এমন বাণী বলে দেয়, নারীর ঘন, কালো, লম্বা, নরম, পেলব, ঝলমলে চুল প্রশংসা কুড়িয়েছে যুগ যুগ ধরে। ঝলমলে সুকেশিনীতে সবার দৃষ্টি কাড়বে, এমন স্বপ্ন প্রায় সব বয়সী নারীর।
সুন্দর, ঝলমলে চুল সবার প্রত্যাশা হলেও সবার চুল একই রকম হয় না। কারও চুল সোজা, কারোর বা কোঁকড়ানো। কারোর নরম, কারোর রুক্ষ, শুষ্ক। কারোর ঘন কালো, কারোর রঙিন। বিভিন্ন ধরনের চুল সময়ের অভাবে, অযত্নে, আবহাওয়ার পরিবর্তনে, কেমিক্যালের প্রভাবসহ নানা কারণে হয়ে পড়ে নিষ্প্রাণ, ম্রিয়মাণ, শুষ্ক। তা দেখে তো শুধু মন খারাপ করে বসে থাকার উপায় নেই– কী করলে মিলবে সমাধান, আজ জানাব সেটিই। 
চুল রুক্ষ বা শুষ্ক হয়ে গেছে সেটি বোঝার উপায় হলো চুল ফুলে থাকবে, চুলে প্রাণ থাকবে না, খসখসে দেখাবে ও ধীরে ধীরে ভেঙে পড়তে থাকবে। সহজে বুঝতে চাইলে চুল উড়তে থাকবে আর আগা ফাটতে থাকবে। চুল আঁচড়ানোর সময় প্লাস্টিকের চিরুনির আকর্ষণে ওপরের দিকে উঠে যাওয়াও শুষ্ক চুলের লক্ষণ। মূলত পুষ্টির অভাবে চুল শুষ্ক ও প্রাণহীন হয়ে পড়ে। খাদ্যাভ্যাসের তারতম্যের কারণে এমনটা হয়ে থাকে। সরাসরি সূর্যের তাপ, আবহাওয়া পরিবর্তন ও শরীরে পানির ঘাটতি হলে চুল হয়ে পড়ে ম্যাড়ম্যাড়ে। এ ছাড়া ভুলভাল শ্যাম্পুর ব্যবহারও হতে পারে শুষ্কতার কারণ। স্টাইলার, রোলার, স্ট্রেইটনার, হেয়ার সেটিং স্প্রে ইত্যাদির অতি ব্যবহারেও শখের কেশ যায় রুক্ষ হয়ে। এমনটাই জানাচ্ছিলেন বিন্দিয়া এক্সক্লুসিভ বিউটি কেয়ারের স্বত্বাধিকারী ও বিউটি কনসালট্যান্ট শারমিন কচি। 
তিনি আরও জানান, শুষ্ক চুলকে সাময়িকভাবে মোলায়েম করতে চাইলে কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে অথবা কন্ডিশনারযুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। এগ প্রোটিন শ্যাম্পুর ব্যবহারেও দ্রুত চুলের শুষ্কতা দূর করা যায়। এমন চুলে যতবার শ্যাম্পু করা হবে ততবারই কন্ডিশনার ব্যবহার করা উচিত। এ ছাড়া গোসলের পর সিরাম ব্যবহার করতে হবে। স্থায়ীভাবে চুলকে রুক্ষতার হাত থেকে বাঁচাতে চাইলে স্মুদিং ট্রিটমেন্ট, ক্যারাটিন ট্রিটমেন্ট, প্রোটিন ট্রিটমেন্ট, ডিপ শাইন ইত্যাদি ভালো মানের পার্লার থেকে করালে উপকার মিলবে। এ ছাড়াও চুলের মান, গন্ধ, উপাদান বুঝে বাজারে কিনতে পাওয়া যায় এমন হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করা যায়। এমন মাস্ক সপ্তাহে তিন দিন ব্যবহারে ভালো ফল মিলবে। 
রুক্ষ চুলের ঘরোয়া যত্ন নিতে
হট অয়েল ট্রিটমেন্ট হেয়ার মাস্ক: ঘরোয়া উপায়ের মধ্যে ‘হট অয়েল ট্রিটমেন্ট হেয়ার মাস্ক’ সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি। এটি করার জন্য ৩-৪ (বাদাম তেল, জলপাই তেল, নারকেল তেল, জোজোবা তেল ইত্যাদি) ধরনের তেল নিয়ে তাতে ভিটামিন ই-ক্যাপ ও অল্প পরিমাণে টক দই মিশিয়ে লোশনের মতো পাতলা মিশ্রণ তৈরি করে মাথায় ও চুলে লাগিয়ে গরম পানিতে ভেজানো তোয়ালে মাথায় ৩ মিনিট করে পেঁচিয়ে রাখতে হবে ২-৩ বার। মাস্কটি বানিয়ে সপ্তাহে দু’দিন ব্যবহারে চুল হবে মোলায়েম, সিল্কি, পেলব।      
ডিম, তেল ও মধুর মাস্ক: একটি ডিমের কুসুম থেকে ডিমের সাদা অংশ আলাদা করে নিন। ১ চা চামচ মধু ও ১ টেবিল চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে ভালো করে ফেটিয়ে নিন। ভেজা চুলে খুব ভালো করে লাগিয়ে নিন। আঙুলের ডগায় ৫ মিনিট ধরে ম্যাসাজ করুন এবং তারপর একটি গরম তোয়ালে মাথায় জড়িয়ে নিন। ২০ মিনিট রেখে দিন মাথার ত্বককে তার পুষ্টি শোষণ করে নেওয়ার জন্য। এবার ভালো করে মাথা ধুয়ে নিয়ে আলতো করে মুছে নিন।
ডিম, কলা ও মধুর হেয়ারপ্যাক: কলা চুলের জন্য ময়েশ্চারাইজার হিসেবে দারুণ কাজ করে। আবার অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ মধু নিয়মিত ব্যবহারে চুল দ্রুত লম্বা হয়। হেয়ারপ্যাকে মধু মিশিয়ে ব্যবহার করলে বিবর্ণ চুল হয়ে ওঠে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও ঝলমলে। একটি কলা ভালোভাবে চটকে এর সঙ্গে একটা ডিম ফেটে আর খানিকটা মধু মিশিয়ে সবটা একসঙ্গে মেশাতে হবে। পুরো চুলে লাগানোর ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলে শ্যাম্পু করে নিন।
এভাবে মিলবে চুলের রুক্ষতা আর শুষ্কতার সমাধান। আর দেরি কেন? এবার যত্নের ছোঁয়ায় ঝলমলে চুল হয়ে উঠবে আপনারও। 
মডেল: আলভি; ছবি: মঞ্জু আলম

সম্পর্কিত নিবন্ধ