বিয়ানীবাজারে জামায়াত ও শিবির নেতাকর্মীর হামলার শিকার হয়ে পুলিশের দুই সদস্য আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার বিকেলে উপজেলার ঘুঙ্গাদিয়া গ্রামে উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আবুল খয়েরের বাড়িতে আসামি ধরতে গেলে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় দুই পুলিশ সদস্যকে জিম্মি করে রাখা হয়। খবর পেয়ে প্রায় ৫ ঘণ্টা পর তাদের উদ্ধার করে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ। 

আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- বিয়ানীবাজার থানার উপপরিদর্শক সৌরভ ও কনস্টেবল দেলোয়ার হোসেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ এপ্রিল পৌর শহরের মাঝ বাজারে মতিন নামের এক যুবককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করেন পৌরসভার নয়াগ্রামের জামিল আহমদ। এ ঘটনায় ওই দিন আব্দুল মতিন বাদী হয়ে বিয়ানীবাজার থানায় মামলা করেন। মামলায় একমাত্র আসামি করা হয় ঘুঙ্গাদিয়া গ্রামের জামিল আহমদকে। 

গোপন সংবাদ পেয়ে পুলিশের এসআই সৌরভ ও কনস্টেবল দেলোয়ার হোসেন আসামি জামিল আহমদকে গ্রেপ্তারের জন্য ঘুঙ্গাদিয়া গ্রামে যান। এ সময় পুলিশ জানতে পারে, আসামি জামিল আহমদ উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির আবুল খয়েরের কেয়ারটেকার রুবেল আহমদের ঘরে অবস্থান করছেন। অভিযান চালাতে গেলে আবুল খয়ের তাদের বাধা দেন। বিনা অনুমতিতে অভিযান কেন করা হবে, সেটিও জানতে চান। একপর্যায়ে তিনি উপজেলা জামায়াত ও শিবিরের নেতাকর্মীকে বিষয়টি জানালে নেতাকর্মীরা আবুল খয়েরের বাড়ি ঘেরাও করে এসআই সৌরভ ও কনস্টেবল দেলোয়ারকে মারধর করেন।

খবর পেয়ে বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফ উজ্জামান এবং উপপরিদর্শক (তদন্ত) জুবেদ আলীসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে জিম্মিদশা থেকে দুই পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করেন।  

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, হঠাৎ চিৎকার শুনে তিনি সেখানে গিয়ে দেখতে পান, দুই পুলিশ সদস্য পৌর জামায়াতের নায়েবে আমির আবুল খয়েরের বাড়িতে বসে আছেন। কিছুক্ষণের মধ্যে শত শত লোক এসে জড়ো হন। তারা পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা করেন। এমনকি মারধরও করেন। পরে জামায়াতের আমির তাদের ভেতরে নিয়ে যান। খবর পেয়ে থানার ওসি এলে রাত ৯টার দিকে তাদের ছাড়া হয়। শুনেছি, পুলিশ আসামির মোবাইল ট্র্যাকিং করতে করতে জামায়াত নেতার বাড়ি পর্যন্ত চলে আসে। একপর্যায়ে তারা বুঝতে পারে, ওই বাড়ির কেয়াটেকার রুবেলের রুমেই জামিলের অবস্থান। 

এ বিষয়ে পৌর জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির আবুল খয়ের সমকালকে বলেন, তার গাড়িচালক বাড়িতে পুলিশ আসার বিষয়টি তাকে জানান। এর পর তিনি পুলিশ সদস্যদের কাছে তার বাড়িতে আসার কারণ জানতে চান। তখন ওই দুই পুলিশ সদস্য তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। সংবাদ পেয়ে এলাকার লোকজন তার বাড়িতে চলে আসেন। তখন এলাকাবাসী অনেকটা উত্তেজিত হয়ে উঠলে তিনি ওই দুই পুলিশ সদস্যকে তার ঘরে নিরাপদে রাখেন। পরে ঘটনাস্থলে থানার ওসি ও উপপরিদর্শক (তদন্ত) এলে ওই পুলিশ সদস্যরা তার কাছে ভুল স্বীকার করেন। এমনকি তার সঙ্গে খারাপ আচরণের জন্য ক্ষমাও চান। 

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, উপপরিদর্শক সৌরভ ও কনস্টেবল দেলওয়ারকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজন মারধর করেছে। পরে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশের একটি দল স্থানীয় জামায়াত নেতার বাড়ি থেকে ওই দুই পুলিশ সদস্যকে জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার করে। 

এ ব্যাপারে বিয়ানীবাজার থানার ওসি আশরাফ উজ্জামান সমকালকে বলেন, আমাদের লোকজন সেখানে অভিযানে গিয়েছিল। এ সময় এলাকাবাসীর সঙ্গে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম দ ই প ল শ সদস য ত কর ম উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

কক্সবাজারে কাজে গিয়ে ৬ শ্রমিক নিখোঁজ

কক্সবাজারে রাজমিস্ত্রীর কাজে গিয়ে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার একই গ্রামের ছয় জন পাঁচ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। 

নিখোঁজ যুবকরা হলেন, জকিগঞ্জ উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের মৃত লুকুছ মিয়ার ছেলে রশিদ আহমদ (২০), ফারুক আহমদের ছেলে মারুফ আহমদ (১৮), আজির উদ্দিনের ছেলে শাহিন আহমদ (২১), মৃত দুরাই মিয়ার ছেলে এমাদ উদ্দিন (২২), সফর উদ্দিনের ছেলে খালেদ হাসান (১৯) ও আব্দুল জলিল (৫৫)।

নিখোঁজ সবাই গত ১৫ এপ্রিল কাজের জন্য জকিগঞ্জ থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে বের হয়। পুলিশ বলছে, মোবাইলের লোকেশন ট্র্যাকিং করে দুজনের অবস্থান কক্সবাজারের টেকনাফ দেখাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।

আরো পড়ুন:

তুসুকা গ্রুপের ছয় কারখানায় ৩ দিনের ছুটি ঘোষণা

শ্রমিকের আত্মহত্যা: ২ কর্মকর্তাকে অব্যাহতি, পরিবারকে সহায়তা 

নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, তারা ১৬ এপ্রিল কক্সবাজার পৌঁছার পর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর থেকে তাদের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এ ঘটনায় নিখোঁজদের পরিবার উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। নিখোঁজ সবাই রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন।

নিখোঁজ এমাদ উদ্দিনের চাচাত ভাই ও নিখোঁজ খালেদ হাসানের চাচা আব্দুল বাছিত দুলাল জানান, ১৬ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টার দিকে এমাদ উদ্দিন কল দিয়ে বাড়িতে জানিয়েছে, তারা সবাই কর্মস্থলে পৌঁছেছে। এরপর আর বাড়িতে যোগাযোগ করেনি। তখন বাড়ি থেকে কল করা হলে মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর এমাদ ও খালেদের সঙ্গে থাকা অন্যদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তাদের মোবাইল নম্বরও বন্ধ পাওয়া যায়। প্রথমে বিষয়টিকে স্বাভাবিক মনে হয়েছে। কিন্তু পাঁচদিনেও কারো মোবাইলে কল না যাওয়ার কারণে বিষয়টি অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় জকিগঞ্জ থানায় জিডি করতে চাইলে পুলিশ পরামর্শ দিয়েছে কক্সবাজারে জিডি করার জন্য। সেখানের থানায় জকিগঞ্জ থানা থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে। স্বজনেরা কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। 

নিখোঁজ রশিদের ভাই আব্দুল বাছিত বলেন, রশিদ কয়েক বছর থেকে চট্টগ্রামে এক ঠিকাদারের অধীনে কাজ কাজ করতো। বিভিন্ন সময়ে বাড়িতে আসা-যাওয়া ছিল। চট্টগ্রামের ঠিকাদারের মাধ্যমে কক্সবাজার এইবার প্রথম গিয়েছে। কক্সবাজার যাওয়ার পর থেকে রশিদসহ সঙ্গে থাকা সবার মোবাইল ফোন বন্ধ দেখাচ্ছে। তবে ওই ঠিকাদারের নাম ও ঠিকানা তার জানা নেই।

এ ব্যাপারে জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, ‘‘নিখোঁজদের পরিবার থেকে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আমরা তাদের সহায়তা করে যাচ্ছি।’’
 

ঢাকা/নুর/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পুলিশের ওপর হামলা জামায়াত-শিবিরের, আহত ২ 
  • ঢাবিতে ১ বছরে চীনা শিক্ষার্থী বেড়ে দ্বিগুণ
  • ঢাবি উপাচার্যের সঙ্গে ইইউ রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
  • সিলেটের ‘আত্মগোপনে থাকা’ আওয়ামী লীগ নেতারা কে কোথায়
  • কক্সবাজারে কাজে গিয়ে ৬ শ্রমিক নিখোঁজ
  • দুদকের সাবেক শুভেচ্ছাদূত ক্রিকেটার সাকিবের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে দুদক
  • নারী সংস্কার কমিশন বাতিলসহ ৫ দাবি, হেফাজ‌তের মহাসমাবে‌শ ৩ মে
  • চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ২ হাজার বছরের পুরনো: ঢাবি উপাচার্য
  • টানা দুইবারের বেশি না পারলেও বিরতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ থাকার দাবি বিএনপির