পঞ্চগড়ে স্বর্ণালংকারের দোকান থেকে ৫০ ভরি সোনা চুরির অভিযোগ
Published: 22nd, April 2025 GMT
পঞ্চগড় জেলা শহরের একটি স্বর্ণালংকারের দোকানের তালা ভেঙে ৫০ ভরি সোনা চুরি হয়েছে। মঙ্গলবার ভোর ৫টা ৫৪ মিনিট থেকে সকাল সোয়া ৬টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী। এ ঘটনার পর জেলা শহরের সব জুয়েলার্স ও স্বর্ণালংকারের দোকান বন্ধ রেখে প্রতিবাদ জানান স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা।
যে দোকান থেকে স্বর্ণ চুরির অভিযোগ উঠেছে, সেটির নাম গিনি হাউস জুয়েলার্স। মঙ্গলবার ওই দোকানের মালিক লব বণিকের মেয়ের বিয়েরও আয়োজন ছিল বলে জানা গেছে। মেয়ের বিয়ের আয়োজনের দিনে আর দোকানের থাকা সব স্বর্ণালংকার চুরির ঘটনায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন লব বণিক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গিনি হাউস জুয়েলার্সের মালিক লব বণিকের মেয়ের গায়েহলুদ ছিল সোমবার। মঙ্গলবার দিনভর ছিল বিয়ের আয়োজন। মঙ্গলবার সকালে লব বণিকের ভাগনে নন্দ দত্ত দোকান খুলতে গিয়ে দেখতে পান দোকানের সব স্বর্ণালংকার চুরি হয়ে গেছে। পরে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায় ১০ থেকে ১২ জনের একটি সংঘবদ্ধ চোরচক্র ভোরে দোকানের তালা ভেঙে প্রবেশ করে সব চুরি করে নিয়ে যায়। পরে বিষয়টি তাঁরা পঞ্চগড় সদর থানা–পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
গিনি হাউস জুয়েলার্সের মালিক লব বণিক বলেন, ‘আমার ৫০ ভরির মতো স্বর্ণালংকার ও স্বর্ণ নিয়ে গেছে চোরেরা, এর মূল্য প্রায় ৭৫ লাখ টাকা হবে। আজকে বাড়িতে আমার মেয়ের বিয়ের দিন। বিয়ের আনন্দ আজকে বিষাদে পরিণত হয়েছে। আমরা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পুলিশকে দিয়েছি। পুলিশের কাছে অনুরোধ আপনারা দোষীদের শনাক্ত করে আমার হারানো স্বর্ণ উদ্ধারের ব্যবস্থা করুন।’
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন পঞ্চগড় জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মধুসুধন বণিক (রনি) জানান, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায় ৫টা ৫৪ মিনিটের পর ১০ থেকে ১২ জনের একটি চোরচক্র দোকানের তালা কেটে প্রবেশ করে অন্তত ৫০ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায়। কয়েকজনের মুখে মাস্ক থাকলেও বেশির ভাগের মুখে কোনো মাস্ক ছিল না। তবে মানুষগুলো অপরিচিত মনে হচ্ছে।
মধুসুধন বলেন, ‘এ ঘটনায় দোকানমালিকের পক্ষ থেকে থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। একজন ব্যবসায়ীকে শেষ করে দেওয়া এমন চুরির ঘটনার প্রতিবাদে আমরা আজ সারা দিন সব জুয়েলারি দোকান বন্ধ রেখেছি। আশা করছি, পুলিশ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।’
জুয়েলারি দোকান থেকে স্বর্ণালংকার চুরির খবর জানার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বলে জানান পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ হিল জামান। তিনি বলেন, চুরির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করতে এবং মালামাল উদ্ধারে কাজ করা হচ্ছে। দোকানের মালিকপক্ষের লোকজন থানায় এসেছেন, এ ঘটনায় মামলা হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স বর ণ ল ক র এ ঘটন ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
নিজের যত্ন নিন
আপন স্বাস্থ্য কার না প্রিয়? অথচ কর্মমুখী ব্যস্ততা, চারপাশের দায়িত্ব ও সামাজিক চাপে আমরা নিজের যত্ন নেওয়ার বিষয়টি ভুলে যাই। যার ফলে রোগব্যাধি কিংবা বিষণ্নতায় দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গী হয়ে দাঁড়ায়। নিজের যত্ন নেওয়া বলতে দামি স্কিন কেয়ার কিংবা স্পা নয়। নিজের যত্ন বলতে আপনার শারীরিক, আধ্যাত্মিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য– সবকিছু যত্ন নিতে হবে।
শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি মানসিক সুস্থতাও জীবনকে রঙিন করতে পারে। অনেকে শারীরিক সুস্থতাকে প্রাধান্য দিলেও মানসিক সুস্থতাকে গুরুত্বহীন মনে করে, যা একদম করা উচিত নয়। মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার কিছু অভ্যাস আমাদের জীবনকে আরও বেশি প্রাণবন্ত করতে পারে।
মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কী করবেন
মেডিটেশন বা ধ্যান: মেডিটেশন এবং গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম, কর্টিসলের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেয়। প্রতিদিন মাত্র কয়েক মিনিট সময় মেডিটেশন করলে, শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করলে মন শান্ত থাকবে। একই সঙ্গে স্ট্রেস হরমোনের উৎপাদন কমাতে সাহায্য করতে পারে।
অবসরে নিজের পছন্দের কাজগুলো উপভোগ করুন
অবসরের ভালো লাগা ও প্রশান্তির জন্য বেছে নিন নিজের পছন্দের কাজের অনুশীলন। সেটি হতে পারে বই পড়া, গান শোনা, নিজের জন্য বা আপনার প্রিয়জনের জন্য রান্না করা, আপনার কোনো পোষা প্রাণী থাকলে তার সান্নিধ্যে সময় কাটানো, ছোটদের সঙ্গে গল্প করা বা পরিবারের সঙ্গে কোনো সিনেমা দেখা। সর্বোপরি যেসব কাজ আপনাকে খুশি করে, তা করার চেষ্টা করুন।
ইলেকট্রনিক ডিভাইস থেকে নিজেকে দূরে রাখুন
অবসর বলতে এখন আমরা অনেকেই মনে করি কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস বা সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় কাটানো। এ অভ্যাস আমাদের মস্তিষ্কে উদ্বেগ, উত্তেজনা ও হতাশার জন্ম দেয়। তাই কখনও কখনও ইলেকট্রনিক ডিভাইস থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখলে সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা যায়। এর পাশাপাশি মনে প্রশান্তিও বাড়ে।
বিশ্বস্ত কারও সঙ্গে কথা বলুন
একাকিত্ব মানসিক রোগের একটি প্রধান কারণ। তাই সময় পেলে নিজের বিশ্বস্ত কারও সঙ্গে কথা বলুন। তাদের সঙ্গে কথা বললে মনে প্রশান্তি অনুভব করবেন। আপনার প্রতিদিনের ভাবনা কিংবা জীবনের অভিজ্ঞতা অন্যজনের সঙ্গে ভাগ করে নিলে অনেক সময় বিষণ্ন মনও হালকা হয়ে যায়। এতে হতাশা কিংবা হীনম্মন্নতা মন থেকে দূর হয়। অনুকূল পারিবারিক পরিবেশ এবং কাছের মানুষের সান্নিধ্য বিচ্ছিন্নতা কমায়।
নতুন দক্ষতা চর্চা করুন
গবেষণায় দেখা যায়, নতুন দক্ষতা শেখা মানসিক সুস্থতা উন্নয়নে সহায়ক। কর্মক্ষেত্রে অথবা শখের বসে নতুন কোনো দক্ষতা আপনার মনের কোণে সুখের দোলা দেয়। এটি হতে পারে ক্রাফটিং, চিত্রাঙ্কন, সেলাই, রংতুলি দিয়ে রাঙানো, নতুন স্কিল অর্জন বা উদ্ভাবনী চিন্তা করা। এটি আপনার মন ফুরফুরে রাখবে। একই সঙ্গে আত্মবিশ্বাসী করতে সাহায্য করবে।
ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখুন
যেকোনো সিদ্ধান্ত, মতামত বা অভিজ্ঞতা থেকে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করা উচিত। কারণ নেতিবাচক মনোভাব আমাদের মনকে বিষিয়ে তোলে। কোনো কাজে ব্যর্থ হলে হতাশ না হয়ে, তা থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন উদ্যমে সেই কাজ শুরু করতে হবে। অতীতে ঘটে যাওয়া খারাপ অভিজ্ঞতা নিয়ে চিন্তা করে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বিষয়ে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করা সহায়ক নয়। নেতিবাচক ভাবনা থেকে দূরে থাকুন। নেতিবাচক চিন্তা আমাদের মনকে দুর্বল করে এবং হতাশা তৈরি করতে পারে।
বর্তমান মুহূর্তের প্রতি মনোযোগ দিন
বর্তমান মুহূর্তের প্রতি মনোযোগ দিলে আপনার মানসিক সুস্থতা উন্নত হবে। এ মুহূর্তের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে আপনার চিন্তাভাবনা, অনুভূতি, শরীর ও চারপাশের জগৎ। কেউ কেউ এ আত্মসচেতনতাকে ‘মাইন্ডফুলনেস’ বলে। মাইন্ডফুলনেস আপনার জীবনকে আরও উপভোগ করতে ও নিজেকে ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করে।
না বলতে শিখুন
সময় বাঁচাতে না বলতে শিখুন। প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত কাজ এড়িয়ে যান।
‘মেন্টাল হেলথ আমেরিকা’-এর তথ্য অনুযায়ী, আপনি যদি সবসময় অন্যদের খুশি করার চেষ্টা করেন, তাহলে আপনার নিজের মানসিক চাপ বেড়ে যায়। তাই সময়মতো না বলতে শিখুন।
এতে আত্মমর্যাদা ও আত্মবিশ্বাস বাড়ে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, নিজের যত্ন নেওয়া মানে
নিজেকে ভালোবাসতে হবে। মনে রাখবেন, এ ভালোবাসা স্বার্থপরতা নয়, বরং আত্মসচেতনতার একটি রূপ।