যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্টের একটি গুরুত্বপূর্ণ রায়ের পর প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার এখন আর মনে করেন না, একজন ট্রান্স নারী আইনি বা প্রাকৃতিক অর্থে নারী।

প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র এমনটাই জানিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার সকালে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টের ঘোষিত এই রায় ‘সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা’ এনেছে। রায় অনুযায়ী, ট্রান্স নারীরা আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে নারীর সংজ্ঞায় পড়েন না।

২০২২ সালে এক সাক্ষাৎকারে স্যার কিয়ার বলেছিলেন, ‘ট্রান্স নারী অর্থই নারী’। তিনি এটাও বলেছিলেন, এটা ‘সঠিক নয়’ যে শুধু নারীর সার্ভিক্স (জরায়ুর মুখ) থাকে।

সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে স্টারমারের মুখপাত্র বলেন, ‘না, সুপ্রিম কোর্ট ইকুয়ালিটি অ্যাক্ট অনুযায়ী স্পষ্ট করেছেন, নারী মানে একজন জৈবিক নারী। আদালতের রায়ে এটি স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে।’

মুখপাত্র আরও যোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন নারী মানে একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী। আদালত এটাকে একেবারে পরিষ্কার করেছেন। তিনি এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন। কারণ, এটি পরিষ্কার নির্দেশনা দেয় এবং আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করে।

কখন মত পাল্টালেন স্টারমার

এক প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আগেও বলেছেন, নারী মানে একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী। আদালতের রায় সেই অবস্থানকেই সমর্থন করেছে।’

স্টারমার অতীতে নারী সংজ্ঞা নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন এবং তাঁর বক্তব্য বারবার পরিবর্তিত হয়েছে। ২০২৩ সালে তিনি বলেছিলেন, ‘৯৯ দশমিক ৯০ শতাংশ নারীর ‘পুরুষের জননাঙ্গ’ নেই। পরে আবার বলেন, নারী মানে ‘একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী’। এরপর স্যার টনি ব্লেয়ারের মতামতকে সমর্থন করে তিনি আবার বলেন, ‘নারীর থাকে নারীদের জননাঙ্গ’ এবং পুরুষের থাকে ‘পুরুষের জননাঙ্গ’।

টয়লেট ব্যবহার ও নতুন নির্দেশনা

নারী ও সমতাবিষয়ক মন্ত্রী ব্রিজেট ফিলিপসন বলেন, ট্রান্স নারীরা এখন নারীদের প্রসাধনাগার ব্যবহার করতে পারবেন না।

ফিলিপসন বলেন, প্রসাধনাগার বা অন্যান্য একক-লিঙ্গ সুবিধা জৈবিক লিঙ্গের (নারী-পুরুষ) ভিত্তিতে হওয়া উচিত।

তবে মন্ত্রী বলেন, অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও জনসমাগম এলাকায় ইতিমধ্যে নারী-পুরুষ সবার জন্য একক প্রসাধনাগার চালু করেছে। ভবিষ্যতেও ছোট-বড় প্রতিষ্ঠানগুলো এ বিষয়ে ‘উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে’।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র বল ন মন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

আবারও উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা, ক্ষমা চাইতে আলটিমেটাম

উপাচার্যের একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্তে বারবার অশান্ত হয়ে উঠছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি)। গত ২৩ সেপ্টেম্বর অধ্যাপক ড. শুচিতা শারমিন উপাচার্য নিযুক্ত হওয়ার পর গত ৭ মাসে একাধিকবার তাঁর পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। সর্বশেষ ইংরেজি বিভাগের  অধ্যাপক ড. মুহসিন উদ্দিনকে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর আখ্যা দিয়ে সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিল থেকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রতিবাদে তারা আবারও আন্দোলনে নেমেছেন। ড. মুহসিনকে পুনর্বহাল ও উপাচার্যকে ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে শিক্ষার্থীরা সোমবার ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন।

ড. মুহসিন জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষে এবং উপাচার্যের আস্থাভাজন শিক্ষকরা আন্দোলনের বিপক্ষে ছিলেন– তাঁর একটি ভার্চুয়াল সভার অডিও গত শনিবার ভাইরাল হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগের দিন ৪ আগস্ট তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষকদের নিয়ে ওই সভাটি করেছিলেন। অডিও ভাইরাল হওয়ার পর ড. মুহসিনকে পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।

সোমবার দুপুরে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন ও পরে উপাচার্যের দপ্তরে গিয়ে শিক্ষার্থীরা ৪ দফা দাবিসংবলিত স্মারকলিপি দেন। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দাবি না মানলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। দাবিগুলো হলো– অধ্যাপক মুহসিন উদ্দিনের বিরুদ্ধে মিথ্যা-অপমানজনক অপবাদ প্রত্যাহার, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য পদে পুনর্বহাল; অবসরের পর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামকে অপসারণ; ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারের দোসর শিক্ষকদের লাভজনক কমিটি থেকে অপসারণ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃশ্যমান উন্নয়ন না করে একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসন করায় উপাচার্যকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া।

আন্দোলনকারীদের অন্যতম ইংরেজি চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিন খান জানান, একজন নিরপরাধ শিক্ষককে মিথ্যা অপবাদ দেওয়ায় সাধারণ শিক্ষর্থীরা ক্ষুব্ধ। সোমবার তারা উপাচার্যের দপ্তরে গিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন। তারা জেনেছেন, গতকাল তিনি ক্যাম্পাসে ছিলেন না। চার দফা দাবি না মানলে বড় আন্দোলন গড়ে তুলবেন। 

উপাচার্যের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ
ড. শুচিতা যোগদানের পরই শিক্ষার্থীরা অভিযোগ তোলেন, তিনি রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহর অনুসারী। জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের ৩৫০ বিশিষ্টজন গত বছর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সমর্থনে বিবৃতি দিয়েছিলেন। উপাচার্যও সেই বিবৃতিদাতাদের একজন। এ ছাড়া কলিমুল্লাহকে ববির একাডেমিক কাউন্সিলর, পরীক্ষা কমিটি ও পূর্বের চাকরি গণনা কমিটির সদস্য করা হলে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে প্রত্যাহার করেন তিনি। 

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম রাব্বানীর অভিযোগ, তিনি সব একাডেমিক কাজের প্রশাসনিক তত্ত্বাবধান করবেন। কিন্তু উপাচার্য তাঁকে বাদ দিয়েই নথিভিত্তিক ও সভাভিত্তিক একাডেমিক সিদ্ধান্ত নেন। কোষাধ্যক্ষ ড. মামুন অর রশিদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিতে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত চেক কোষাধ্যক্ষ এবং তদূর্ধ্ব চেক উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ যৌথ স্বাক্ষর করবেন। কিন্তু উপাচার্য সব চেকে একাই স্বাক্ষর করেন। এসব অভিযোগ এর আগে শিক্ষার্থীরা দুইবার উপচার্যের পদত্যাগে এক দফার আন্দোলনে নেমেছিলেন। গত ২৮ নভেম্বর তাঁর কক্ষে তালাও লাগিয়েছিলেন তারা। 

শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে বক্তব্য জানতে উপাচার্য ড. শুচিতা শারমিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল ও মেসেজ দেওয়া হলেও তিনি সাড়া দেননি। পরে সোমবার রাতে তাঁর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা সাকিব হোসেন জানান, উপাচার্য সারাদিন একাধিক বৈঠক করেছেন। এখন তিনি বিশ্রামে রয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নেতৃত্বশূন্য পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ কী
  • পদ্মাপাড়ের মাটি বিক্রি করছেন সাবেক ছাত্রদল নেতা, হুমকিতে পুলিশ একাডেমিসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা
  • সিটি কলেজের স্থাপনায় হামলা পুলিশ দাঁড়িয়ে দেখেছে: ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ
  • মহানবীকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে মহাখালী-সাতরাস্তা সড়ক অবরোধ
  • শাশুড়িকে নারীর চোখে ‘দানব’ বানায় কে
  • সাগর-রুনি হত্যা মামলা তদন্তে সময় বাড়ানো হলো আরও ৬ মাস
  • ‘মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে ট্রেনিং-রিসার্চকে গুরুত্ব দিতে হবে’
  • বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়: আবারও উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা
  • আবারও উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা, ক্ষমা চাইতে আলটিমেটাম