কুয়েট শিক্ষার্থীদের অনশন প্রত্যাহারের অনুরোধ শিক্ষা উপদেষ্টার
Published: 22nd, April 2025 GMT
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সি. আর. আবরার কুয়েটে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অনশন প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার কুয়েটে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ফোনালাপে তিনি এ আহ্বান জানান।
উপদেষ্টা খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) আন্দোলন ও অনশনরত শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি অনশনরত শিক্ষার্থীদের সাথে মুঠোফোনে কথা বলার সময় জানান, শিক্ষার্থীরা উষ্ম আবহাওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়বেন এবং তাদের শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে অনশন প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানান। শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনের প্রতি উদ্বেগের কথাও তাদের জানান উপদেষ্টা।
তিনি আরও আশ্বস্ত করেন শিক্ষার্থীদের দাবি সম্পর্কে সরকার সচেতন রয়েছে। একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল অতি দ্রুত খুলনা যাবে কুয়েট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, শিক্ষক এবং ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে আলোচনা করে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে চলতি সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের তালা ভেঙে প্রবেশ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ২০-২৫ জন শিক্ষার্থীর একটি দল হলের তালা ভেঙে প্রবেশ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড.
এর আগে, গত ১৫ এপ্রিল পাঁচটি আবাসিক হলের তালা ভেঙে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। সেদিন দুপুরে কয়েকশ শিক্ষার্থী প্রথমে ফজলুল হক হলের তালা ভাঙেন। তারপর অমর একুশে হল, ড. এম এ রশিদ হলসহ আরও দুটি হলের তালা ভেঙে প্রবেশ করেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ ক ষ উপদ ষ ট অনশন হল র ত ল উপদ ষ ট শ কর ন
এছাড়াও পড়ুন:
কুয়েটে দ্রুত জটিলতা কাটার আশা ছাত্র কল্যাণ পরিচালকের
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল্লাহ ইলিয়াস আক্তার। তিনি বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আশা করছে দ্রুতই কুয়েটের জটিলতার সমাধান আসবে।
আজ সোমবার দুপুরে কুয়েট স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন আব্দুল্লাহ ইলিয়াস আক্তার। যদিও এমন কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারী একজন শিক্ষার্থী।
ছাত্র কল্যাণ পরিচালক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, কুয়েটের সমস্যার সমাধানের জন্য আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আলোচনার আহ্বান জানানো হয়েছিল। আহ্বানে সাড়া দেওয়া তাঁদের একটি অংশের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সাময়িক বহিষ্কার হওয়া ৩৭ শিক্ষার্থীর বিষয়টি বিবেচনা হবে বলেও আলোচনায় শিক্ষার্থীদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এ ছাড়া কুয়েট শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে করা মামলার বিষয়েও প্রশাসনের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করা হয়। অন্যান্য দাবি নিয়েও ভালো আলোচনা হয়েছে বলে জানান আব্দুল্লাহ ইলিয়াস। তিনি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বন্ধের আহ্বান জানান।
ছাত্র কল্যাণ পরিচালকের এই বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একজন আজ বেলা তিনটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ও রকম কোনো আলোচনা হয়নি। ছাত্র কল্যাণ পরিচালক স্যার নতুন যোগ দিয়েছেন। ছাত্র কল্যাণ কমিটিতে আমরাও আছি। স্যার আমাদের দেখা করতে বলছিলেন, আমরা দেখা করেছি। কিন্তু ও রকম কোনোরকমের আলোচনা হয়নি। আমরা বলেছি সব শিক্ষার্থী আমরা একসঙ্গে আগে আলোচনা করি তারপর স্যারের সঙ্গে কথা বলব।’
এর আগে গতকাল রোববার উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদকে পদত্যাগ করতে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেন শিক্ষার্থীরা। এ সময়ের মধ্যে পদত্যাগ না করলে তাঁরা আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করবেন বলে ঘোষণা দেন।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক লোক আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়ার দাবিতে কুয়েটের শিক্ষার্থীরা ১৩ এপ্রিল বিকেল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিলে আন্দোলন আবারও দানা বাঁধতে থাকে। গত সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্তের কথা জানায় কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে আগামী ২ মে থেকে সব আবাসিক হল শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া ও ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়।
এর মধ্যে গত মঙ্গলবার শিক্ষার্থীরা উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা দেন। ঘোষণার পর আন্দোলনকারীরা কুয়েটের ছেলেদের ছয়টি হলের তালা ভেঙে হলগুলোতে অবস্থান নেন। বুধবার দুপুরে উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের মিছিলের পরপরই উপাচার্যের পদত্যাগের দাবির বিপক্ষে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। শনিবার বিকেলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে প্রতীকী গদিতে আগুন জ্বালানোর কর্মসূচি পালন করেন।
আরও পড়ুনকুয়েটে গ্রাফিতি ও দেয়াললিখনে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি আন্দোলনকারীদের১৮ এপ্রিল ২০২৫আরও পড়ুনকুয়েটে উপাচার্যের সমর্থনে কর্মচারীদের মানববন্ধন, সন্ধ্যায় পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মশালমিছিল১৭ এপ্রিল ২০২৫আরও পড়ুনকুয়েটে উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল১৬ এপ্রিল ২০২৫