শেবাচিমে অত্যাধুনিক সিমুলেশন ল্যাব উদ্বোধন
Published: 22nd, April 2025 GMT
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেলে (শেবাচিম) শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের জন্য অত্যাধুনিক সিমুলেশন ল্যাব উদ্বোধন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সকালে ৮টি কক্ষের সমন্বয়ে গঠিত এ ল্যাবের উদ্বোধন করেন শেবাচিম অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. ফয়জুল বাশার।
ল্যাবে থাকা কৃত্রিম মানব শরীরের সাহায্যে হাতে-কলমে চাহিদা অনুযায়ী প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন শেবাচিমের শিক্ষার্থীরা। ফলে জীবন্ত মানবদেহ ছাড়াই সহজেই সিপিআর, নরমাল ডেলিভারি, বেসিক ও অ্যাডভান্স লাইফ সাপোর্ট সম্পর্কে
জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন তারা। উন্নত বিশ্বের এ অত্যাধুনিক উপকরণ পেয়ে আনন্দ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
ল্যাব উদ্বোধনের সময় অন্যদের মধ্য উপস্থিত ছিলেন- শেবাচিমের উপাধ্যক্ষ ডা.
আরো পড়ুন:
ও লেভেল-এ লেভেলসহ বিভিন্ন পরীক্ষার ফি পাঠাতে নতুন নির্দেশনা
এসএসসি ও সমমান
পাস-ফেল দূরের কথা, যে স্কুলের কেউ পরীক্ষাই দিচ্ছে না
শেবাচিম সূত্র জানায়, এই মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা ল্যাব থেকে বিভিন্ন অপারেশনসহ তাৎক্ষণিক সেবা দেওয়ার পদ্ধতি হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। কৃত্রিম মানবদেহে শিক্ষার্থীদের করা কাটাছেড়া কিছুক্ষণ পর মিলিয়ে আগের রূপে ফিরে যাবে। ফলে শিক্ষার্থীরা সহজেই দক্ষতা অর্জন না করা পর্যন্ত একাধিকবার প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। যার ফলাফল উঠবে পাশে থাকা কম্পিউটার মনিটরে। এর মধ্যদিয়ে শিক্ষার্থীরা দ্রুত দক্ষতা অর্জন করে রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে পারবেন। পাশাপাশি হাসপাতালে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের চাপ কমবে।
শেবাচিম শিক্ষার্থী আবদুর রহমান বলেন, “ক্যাম্পাসের মধ্যেই এখন হাতে-কলমে একাধিকবার কৃত্রিম মানবদেহ কাটাছেড়া করে প্রশিক্ষণ নিতে পারব। উন্নত বিশ্বের এ মডেল ব্যবহারের মধ্যদিয়ে আমাদের শিক্ষা কার্যক্রমে আরো গতি আসবে।”
শেবাচিম অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. ফয়জুল বাশার বলেন, “অত্যাধুনিক এ উপকরণগুলোর মধ্যদিয়ে কম সময়ে ও কার্যকরী পদ্ধতিতে স্বাস্থ্য বিষয়ক শিক্ষা নিতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিতে এ উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
তিনি আরো বলেন, “শিক্ষার্থীদের শেখানোর পদ্ধতিগুলোর মধ্যে সিমুলেশন একটি আধুনিক কৌশল। এ প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীরা বাস্তবজীবনের বিভিন্ন সমস্যার বিষয়ে জীবন্ত দেহের পরিবর্তে কৃত্রিম উপকরণ বা পরিবেশ ব্যবহার করে প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকেন।”
ঢাকা/পলাশ/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ওষুধ তৈরিতে কাঁচামাল প্রয়োজন ৪০০ ধরনের, দেশে উৎপাদন ৪১
ওষুধ তৈরিতে ৪০০ ধরনের অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট (এপিআই) বা কাঁচামাল প্রয়োজন হয়। আর দেশে ৪১ ধরনের কাঁচামাল উৎপাদন হয়। এই কাজে ২১টি কোম্পানি কাজ করে। এখনও ৯০ শতাংশ এপিআই আমদানি নির্ভর হওয়ায় দেশে ওষুধের দাম কমানো এবং রপ্তানির বাজার ধরা চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠছে বলে জানিয়েছে ওষুধ শিল্প সমিতি।
সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওতে বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক কর্মশালায় এসব কথা বলেন খাত সংশ্লিষ্টরা। বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সঙ্গে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ডেল্টা ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মো. জাকির হোসেন, হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মুহাম্মদ হালিমুজ্জামান, এসিআই হেলথকেয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এম মহিবুজ্জামান, হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল।
কর্মশালার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জাবাবে ডা. মো. জাকির হোসেন বলেন, ওষুধের কাঁচামাল তৈরির জন্য ৪৯ সংস্থার কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হয়। এই সব সংস্থার অনুমোদন নিতে ছয় মাসের বেশি সময় চলে যায়। এরপর কাঁচামাল উৎপাদনের জন্য যদি ৫০০ টন উপকরণ প্রয়োজন হলেও আমদানির অনুমোদন মেলে ১০০ টনের মতো। এছাড়া ওষুধের কাঁচামাল তৈরিতে আলাদা আলাদা মেশিন প্রয়োজন হয়। এই যন্ত্রের দাম অনেক। এসব সমস্যা যতদিন আমরা সমাধান না করতে পারবো ততক্ষণ ওষুধের কাঁচামাল শিল্প হয়ে দাঁড়াতে পারবে না। ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে এক ছাতার মধ্যে সব সেবা আনার প্রস্তাব থাকলেও সরকার এটা করতে পারেনি।
তিনি বলেন, ওষুধের কাঁচামাল তৈরি করে চীন ও ভারত। এসব দেশে থেকেই আমরা কাঁচমাল তৈরি উপকরণ আমদানি করছি। তারা ইচ্ছাকৃতভাবে বেশি দামে এসব উপকরণ বিক্রি করছে। তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে আমরা পারবো না।
ডা. মো. জাকির হোসেন বলেন, ১৮ বছর আগে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় এ শিল্প প্রতিষ্ঠার জন্য ২০০ একর জমি বরাদ্দ দিয়েছিল সরকার। চায়নার একটি বিশেষজ্ঞ টিম পরিদর্শন করে বলেন, এতো ছোট জায়গায় এখানে কীভাবে ওষুধের কাঁচামাল তৈরি হবে। চীনের একটি করখানার ৫৫০ একর আয়তন। এজন্য এই পার্কে কারখানা স্থাপন ও এপিআই তৈরিতে কোম্পানিগুলোর আগ্রহ কম। মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় ওষুধ শিল্প পার্কে ৪২টি প্লট ২৭টি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৫টি কোম্পানি সেখানে উৎপাদনে যাবে বাকীরা হয়তো এ প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে একীভূত (মার্জ) হবে।
এম মহিবুজ্জামান বলেন, এলডিসির কারণে আমাদের ওষুধ শিল্পে বেশ কিছু বিষয় মওকুফ করা হয়েছে। কিন্তু মধ্যম আয়ের দেশে পৌঁছালে এই ছাড়গুলো আর থাকবে না। তখন মূল (মাদার) কোম্পানি থেকে তাদের চাহিদা মতো দামে এপিআই কিনতে হবে। এর প্রভাব পড়বে ওষুধের বাজারে,বেড়ে যাবে ওষুধের দাম। তাই আমদানি নির্ভরতা কমাতে দেশে এপিআই উৎপাদনে নজর দিতে হবে। মুহাম্মদ হালিমুজ্জামান বলেন, দেশে এপিআই উৎপাদন না হওয়ায় বিদেশের মার্কেটে অন্য দেশের কোম্পানির সাথে প্রতিযোগীতার মুখে পড়তে হচ্ছে।