শেরপুরের নালিতাবাড়ী পৌর এলাকার মধ্যকালিনগর গ্রামে বড় ভাই ফকির মিয়ার (৫৬) মৃত্যুর খবর শুনে ছোট ভাই গাজী মিয়া (৫০) মারা গেছেন। নিহত ফকির মিয়া ও গাজী মিয়া ওই গ্রামের মৃত আহালু মিয়ার ছেলে। 

মঙ্গলবার সকালে ফকির মিয়া ও গাজী মিয়ার জানাজা একই সঙ্গে কালিনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। পরে কালিনগর কবরস্থানে পাশাপাশি তাদেরকে দাফন করা হয়।

এর আগে, সোমবার রাত ৭.

৩০ মিনিটের দিকে ফকির মিয়া অসুস্থজনিত কারণে তার নিজ বাড়িতে মারা যান। বড় ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর আপন মেঝো ভাই গাজী মিয়া অসুস্থ বোধ করেন। তার ১০ মিনিটের মধ্যেই গাজী মিয়াও মারা যান। ১০ মিনিটের ব্যবধানে দুই ভাইয়ের মৃত্যুর খবরে স্বজন ও প্রতিবেশীরা সেখানে ভিড় করেন।

নিহতের স্বজনরা জানান, মধ্যকালিনগর গ্রামের বাসিন্দা মৃত আহালু মিয়ার তিন ছেলের মধ্যে বড় ছেলে ফকির মিয়া ও মেঝো ছেলে গাজী মিয়া ছোটকাল থেকে এক সাথে চলাফেরা করতেন। গত প্রায় ৪ বছর আগে ২ সন্তান রেখে ফকির মিয়ার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে মারা যান। এর ২ বছর আগে একইভাবে ১ সন্তান রেখে মারা যান গাজী মিয়ার স্ত্রীও। এ অবস্থায় কৃষিকাজ করে তাদের দিনাতিপাত ভালোই চলছিল তাদের পরিবারে। একই দিনে দুই ভাইয়ের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

নালিতাবাড়ী পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. আনোয়ার হোসেন ভিপি বলেন, আমাদের এলাকার মধ্যে ফকির মিয়া ও গাজী মিয়া অনেক ভালো মানুষ ছিলেন। তারা এক সঙ্গে চলাফেরাসহ সকল কাজ করতেন। তাদের মৃত্যুতে এলাকাবাসী শোকাহত।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক ল নগর

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামে নতুন কৌশলে এগোচ্ছে জামায়াত

সাধারণ মানুষের আরও কাছে যেতে নানা কৌশলে কাজ করছে জামায়াতে ইসলামী। দল শক্তিশালী করতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে তারা। চট্টগ্রামে প্রশিক্ষণ কর্মশালা, রুকন সম্মেলন, সভা-সমাবেশ, মিছিল, গণসংযোগসহ বিভিন্ন কর্মসূচি প্রায় প্রতিদিনই থাকছে কোনো না কোনো ইউনিটে। মাঠ পর্যায়ে বেশি বেশি যাচ্ছেন দলটির নেতারা।
গত ১১ এপ্রিল থেকে জামায়াতের ‘দাওয়াতি সপ্তাহ’ চলছে। ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পাড়া-মহল্লা, হাট-বাজারসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছেন নেতাকর্মীরা। কট্টর ধর্মীয় নীতির বদনাম ঘোচাতে কৌশলে পরিবর্তন আনছে দলটি। নেতাকর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। শেখানো হচ্ছে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হবে, দলকে কীভাবে উপস্থাপন করতে হবে– এসব বিষয়। মাঠে নামানো হয়েছে দলটির নারী শাখাকেও। এক সময় বোরকা, হিজাব ও হাত-পায়ে মোজা পরিহিত নারী কর্মীরা দলীয় কার্যক্রম চালালেও এখন কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। অনেক স্থানে শালীন পোশাকে কেবল বোরকা পরে ঘরে ঘরে দলের দাওয়াত নিয়ে যাচ্ছেন তারা।

এদিকে অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও বেশ সক্রিয় জামায়াতে ইসলামী। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের মধ্যে নেটওয়ার্ক গড়ে তুলে সংঘবদ্ধ ছিল দলটি। এখনও সেই প্ল্যাটফর্মগুলোকে কাজে লাগানো হচ্ছে।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বলছেন, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে এক প্রকার বাধ্য হয়ে তৃণমূল পর্যায়ে নতুনরূপে আবির্ভূত হতে চাচ্ছে জামায়াত। তারা সময়ের সুযোগ নিতে চাচ্ছে। তাদের সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাবে না। অন্যদিকে জামায়াত নেতারা বলছেন, তারা বরাবরই উদার রাজনীতিতে বিশ্বাসী। অনুকূল পরিবেশে তারা সেটারই বহিঃপ্রকাশের মাধ্যমে গণমানুষের আরও কাছাকাছি হওয়ার চেষ্টা করছেন।
এদিকে উন্নয়ন কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম নগরবাসীকে জলাবদ্ধতা থেকে রেহাই দিতে কোটি টাকা খরচ করে বির্জা খাল খনন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম চালাচ্ছে জামায়াত। নগরীর কাঁচা বাজারগুলোকে চীনের আদলে গড়ে তুলতে সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের কাছে কয়েকটি বাজারের দায়িত্বভার চেয়েছে দলটি। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন আদর্শ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে কয়েকটি স্কুলের দায়িত্বও নিতে চায় তারা। 

নগর জামায়াতের আমির শাহজাহান চৌধুরী বলেন, সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে জামায়াতে ইসলামী খাল খনন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালাচ্ছে।’
মহানগর জামায়াতের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ উল্লাহ সমকালকে বলেন, আমরা সাধারণ মানুষের কাছাকাছি যাচ্ছি। বেশ সাড়া পাচ্ছি। 
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে নগর জামায়াতের একাধিক নেতা সমকালকে বলেন, নানামুখী তৎপরতা ও কর্মসূচির মাধ্যমে জামায়াত সম্পর্কে মানুষের ভুল ধারণা পাল্টে দেওয়াই হচ্ছে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জামায়াতের উদারতার বিষয়টি তুলে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে। 
জামায়াতের কার্যক্রম প্রসঙ্গে বাসদের চট্টগ্রাম জেলা ইনচার্জ আল কাদেরী জয় সমকালকে বলেন, ‘উদারতা দেখানোর মধ্য দিয়ে জামায়াত ব্যবসায়ীদের কাছে পেতে চাইছে। সাম্প্রদায়িক চোহারা লুকিয়ে কাজ করছে তারা।’ বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি অশোক সাহা বলেন, ‘জামায়াত এখন সময়ের সুযোগকে কাজে লাগাতে চাইছে। তবে তারা প্রকৃত উদ্দেশ্য ও বৈশিষ্ট্য থেকে নড়বে বলে মনে হয় না।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ