পরীমণির বিরুদ্ধে গৃহপরিচারিকার মামলা, তদন্তে পিবিআই
Published: 22nd, April 2025 GMT
চিত্রনায়িকা শামসুন নাহার স্মৃতি ওরফে পরীমণির বিরুদ্ধে গৃহপরিচারিকাকে নির্যাতনের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগকারী গৃহপরিচারিকা পিংকি আক্তার মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন।
আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট নাজমিন আক্তার বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-কে তদন্ত করে আগামী ৮ মের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় পরীমণির পাশাপাশি একই ফ্ল্যাটে বসবাসকারী সৌরভ (২৮) নামের একজনকেও আসামি করা হয়েছে।
এজাহারে বলা হয়, কাদের এজেন্সির মাধ্যমে ২০২৪ সালের মার্চ মাসে পিংকি আক্তার পরীমণির বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ শুরু করেন। একটি শিশুকে দেখাশোনার দায়িত্ব বলে নিয়োগ দেওয়া হলেও বাস্তবে তাকে দুই শিশুর দেখাশোনা এবং দিন-রাত রান্নার কাজ করতে হতো। জীবিকার তাগিদে সবকিছু সহ্য করে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি।
অভিযোগে বলা হয়, চলতি বছরের ২ এপ্রিল দুপুর ১টার দিকে পরীমণি মেকআপ রুমে মাদক গ্রহণ করে এসে পিংকিকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। কারণ জানতে চাইলে পরীমণি বলেন, “তুই আমার বাচ্চার জন্য দুধ কেন তৈরি করছিস, এখন ওকে সলিড খাবার দিবি।” জবাবে পিংকি বলেন, “বাচ্চার রুটিন অনুযায়ী এখন দুধ খাওয়ানোর কথা, তাই দুধ করেছি।”
এরপর পরীমণি ক্ষিপ্ত হয়ে পিংকির মাথা, মুখ ও চোখে এলোপাথাড়ি চড়-থাপ্পড় মারতে থাকেন। এতে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এ সময় সৌরভ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন এবং পরীমণিকে নির্যাতনে উৎসাহিত করেন।
পরবর্তীতে পিংকি আক্তার ৯৯৯-এ কল করে পুলিশের সহায়তায় ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন এবং ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। ঘটনার পর ৪ এপ্রিল ভাটারা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তিনি। কিন্তু কোনো অগ্রগতি না দেখে আদালতের দ্বারস্থ হন।
ঢাকা/মামুন/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ হপর চ র ক
এছাড়াও পড়ুন:
শতবর্ষী রাস্তার ওপর সবজি চাষ আওয়ামী লীগ নেতার
চারঘাটের সরদহ ইউনিয়নের খোর্দগোবিন্দপুর মাঠপাড়ার গ্রামীণ রাস্তা দিয়ে শত বছর ধরে গ্রামের মানুষ চলাচল করছেন। রাস্তাটি পাকা করতে দরপত্রও করা হয়েছে। সেই রাস্তার জমি নিজের দাবি করে পটোল রোপণ করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সমজান আলী। এতে মানুষের চলাচল ও মাঠের ফসল পরিবহনে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয়রা প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এক যুগে কয়েক দফা কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় শতবর্ষী মাটির রাস্তাটির সংস্কার করা হয়। উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ থেকে রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য দরপত্র হয়েছে। এর মধ্যে পাশের জমির মালিক সমজান আলী শ্রমিক দিয়ে রাস্তা কেটে ফসলি জমি বানিয়েছেন। তিনি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হলেও গত পাঁচ আগস্টের পর থেকে বিএনপি-জামায়াতের লোকজনের সঙ্গে চলাফেরা করছেন।
সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, দৈর্ঘ্যে ১২০ ফুট ও প্রস্থে ৪ ফুট অংশ কেটে নিজের জমির সঙ্গে মিলিয়ে দিয়েছেন সমজান আলী। সেখানে পটোল রোপণ করা হয়েছে। ১৩ ফুট প্রস্থের সড়ক থেকে আরও ৪ ফুট কেটে নেওয়া হবে বলে স্থানীয়দের জানিয়েছেন তিনি। এ অবস্থায় প্রকৌশল বিভাগের রাস্তা পাকাকরণ কাজ অনিশ্চয়তায় পড়েছে। স্থানীয়রা বাধা দিলেও রাস্তা কাটা বন্ধ না করে উল্টো হুমকি দেন সমজান আলী।
স্থানীয় ষাটোর্ধ্ব রেজাউল করিম বলেন, রাস্তাটি পাকাকরণের দরপত্র হয়েছে। এখন সেই রাস্তার বেশির ভাগ অংশ নিজের দাবি করে কেটে ফেলেছেন আওয়ামী লীগ নেতা সমজান আলী।
নাইমুর রহমান বলেন, বাবা-দাদা সবাই এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করেছেন। এখন শত শত মানুষের চলাচল। মাঠপাড়ার ফসল ভ্যান, ট্রলি ও মিনি ট্রাকে করে এই রাস্তা দিয়ে বাজারে নেওয়া হয়। কাউকে কিছু না জানিয়ে রাস্তাটি কেটে ফেলা হলো। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছি।
সমজান আলী বলেন, রাস্তার বেশির ভাগ অংশই আমার জমিতে। এ জন্য কিছু অংশ কেটে নিয়েছি। শুধু আমি রাস্তায় জমি দেব– তা হবে না। অন্যদেরও দিতে হবে। জমির কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি বলেন, কাগজপত্র এখন কাছে নেই। তবে স্থানীয় আমিন সুবল চন্দ্র ছয় মাসে দুই দফা জমি পরিমাপ করেছে। মাপ অনুযায়ী রাস্তার বেশির ভাগ অংশ আমার জমিতে পড়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
স্থানীয় আমিন বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবল চন্দ্র বলেন, জমিটি দেড় থেকে দুই বছর আগে পরিমাপ করেছি। কিছু অংশ রাস্তার ভেতরে ছিল। রাস্তাটি এখন সরকারি সম্পদ। তাই সমজান আলী জমি নিতে পারবে না– এ তথ্য তাঁকে জানানো হয়েছিল।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ হোসেন বলেন, কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের জন্য শুনানির নোটিশ করা হয়েছে। কাগজপত্র নিয়ে সমজান আলীকে আসতে বলা হয়েছে। তবে কোনো জমি ব্যক্তির সম্পত্তি হলেও ২০ বছর সেখানে মানুষজন হাঁটলেই তা সরকারি হয়ে যাবে।