অস্ট্রেলিয়ার সাধারণ নির্বাচনের আগাম ভোট গ্রহণ আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজের নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টি বিরোধী জোটের তুলনায় সামান্য এগিয়ে রয়েছে বলে সাম্প্রতিক জরিপে জানা গেছে। আগামী ৩ মে শনিবার ভোটের দিনের আগেই প্রায় ৫০ শতাংশ ভোটার ডাকযোগে বা আগাম ভোট দিয়ে দেবেন।

সিডনির একটি কেন্দ্রে আগাম ভোট দিতে আসা বাংলাদেশিপ্রবাসী ইস্টলেকের বাসিন্দা হায়দার খান বলেন, ‘ভোটের দিন কাজে যেতে হবে বলে আজই ভোট দিয়ে দিলাম।’

লেবার পার্টির নির্বাচনী সমন্বয়ক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রিজওয়ান চৌধুরী ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘গত জানুয়ারিতে আমরা যখন ৬ পয়েন্ট পিছিয়ে ছিলাম, তখন এই উত্তরণ আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং ছিল। বর্তমানে ৯ পয়েন্ট এগিয়ে থাকলেও অস্ট্রেলিয়ার প্রেফারেন্সিয়াল ভোটিং পদ্ধতি অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। তবে আমরা খুবই আশাবাদী, এবারও লেবার পার্টিই সরকার গঠন করবে।’

অন্যদিকে বিরোধীদলীয় নেতা পিটার ডাটনের জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ার পেছনে বিশেষজ্ঞরা দুটি কারণ চিহ্নিত করেছেন। প্রথমত, তাঁর কিছু নীতিকে যুক্তরাষ্টের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতির অনুরূপ মনে করেন অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকেরা। দ্বিতীয়ত, সরকারি চাকরিজীবীদের ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ সুবিধা বাতিলের প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।

আরেক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অভিবাসন আইনজীবী সুরজিত রায় বলেন, ২০১৯ সালের নির্বাচনে লেবার পার্টি যখন জয়ের খুব কাছাকাছি ছিল, তখন শেষ মুহূর্তে স্কট মরিসনের নেতৃত্বে লিবারেল পার্টি জয়ী হয়েছিল। এই ইতিহাস আলবানিজকে এবার সতর্ক করেছে। এবার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলেই মনে হচ্ছে।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তৃতীয় ও শেষ টেলিভিশন বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে আলবানিজ ও ডাটন সরাসরি মুখোমুখি হবেন। তবে পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুর পর সব দল নির্বাচনী প্রচার কিছুটা মন্থর করেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আলব ন জ

এছাড়াও পড়ুন:

কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পরমাণু শক্তি কমিশনের কর্মকর্তা–কর্মচারীরা

কলম ও কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁও পরমাণু ভবনে বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

এ সময় বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পরমাণু শক্তি কমিশনের স্বায়ত্তশাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ‘অযাচিত হস্তক্ষেপের’ প্রতিবাদ জানান।

এতে অংশ নেন পরমাণু শক্তি কমিশনের বিভিন্ন স্তরের বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা–কর্মচারীসহ কমিশনের আওতাধীন রাজধানী ও বিভিন্ন স্থানে ৪০টি ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা জানান, কমিশনে পূর্ণ দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও সদস্য না থাকায় বর্তমান কমিশনে স্বায়ত্তশাসনের সংকট দেখা দিয়েছে। সব কাজে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।

এ ছাড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় কর্তৃক কমিশনের বিজ্ঞানীদের উচ্চশিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে বঞ্চিত করারও অভিযোগ তোলেন তাঁরা।

এ ছাড়া বিজ্ঞানীদের উচ্চশিক্ষা ও প্রশিক্ষণে বাধা, বেতন–বৈষম্য, উপযোগিতা যাচাই না করে সরকারি অন্য প্রতিষ্ঠানের মতো আইবাস++ সিস্টেম ব্যবহারে কমিশনকে বাধ্য করা, রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পে কমিশনের অধিকার খর্বের চেষ্টার অভিযোগ তোলা হয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে।

বাংলাদেশ অ্যাটমিক এনার্জি সায়েন্টিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এস এম সাইফুল্লাহ অভিযোগ তুলে বলেন, কমিশনের বিজ্ঞানীদের ৫৮টি, কর্মকর্তাদের ৬টি এবং কর্মচারীদের ৪৪টি পদ বিভিন্ন অবনমন করেছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের এমন পদক্ষেপে বিজ্ঞানী ও কর্মকর্তারা অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

মন্ত্রণালয়ের এ ধরনের হস্তক্ষেপের ফলে নবীন বিজ্ঞানীরা কাজের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন উল্লেখ করে এস এম সাইফুল্লাহ বলেন, ‘আমরা মন্ত্রণালয়ের বিধিবহির্ভূত কর্তৃত্ব এবং আমাদের বঞ্চনার অবসান চাই। দ্রুত সময়ে সমাধানের আশ্বাস না পেলে বড় কর্মসূচি দেওয়া হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন বিজ্ঞানী সমিতির সভাপতি এস এম সাইফুল্লাহ, সাধারণ গোলাম রসুল, কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি আরেফিন সিদ্দিকী, সাধারণ গোলাম কিবরিয়া, কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি ইসমাইল হোমেন মামুন এবং সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান উজ্জ্বল।

যুক্তরাষ্ট্রে ফুলব্রাইট স্কলারশিপ পেয়েও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বাধার মুখে পড়তে যেতে পারেননি বলে উল্লেখ করেন পরমাণু শক্তি কমিশনের মুখ্য ভূতত্ত্ববিদ মনিরুজ্জামান সুমন। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের বৃত্তি খুব কম মেধাবীরা পেয়ে থাকেন। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়া আমাকে যেতে দেওয়া হয়নি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ