অর্থ আত্মসাতের মামলায় মহেশ বাবুকে ইডির তলব
Published: 22nd, April 2025 GMT
ভারতের দক্ষিণী সিনেমার সুপারস্টার মহেশ বাবু। এবার অর্থ আত্মসাতের মামলায় তাঁকে তলব করেছে ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। আগামী ২৭ এপ্রিল জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজির হতে বলা হয়েছে তাঁকে।
ভারতীয় একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হায়দরাবাদের রিয়েল এস্টেট সংস্থা সাই সূর্য ডেভেলপারস এবং সুরানা গ্রুপের বিরুদ্ধে ওঠা অর্থ আত্মসাতের মামলায় ডাকা হয়েছে মহেশকে। এ দুই প্রতিষ্ঠান থেকে জমি কিনে নিঃস্ব হয়েছেন অনেকে। কোম্পানি দুটির বিজ্ঞাপনের মুখ হয়ে মামলায় নাম উঠেছে মহেশের।
তদন্তে যে তথ্য উঠে এসেছে, সেই অনুযায়ী, সাই সুরিয়া ডেভেলপারস মহেশবাবুকে প্রায় ৬ কোটি টাকা দিয়েছিল। এর মধ্যে ব্যাংকের মাধ্যমে সাড়ে ৩ কোটি টাকা দেওয়া হয়। বাকি আড়াই কোটি দেওয়া হয় নগদে। তদন্তকারীদের সন্দেহ, মহেশ বাবুকে যে নগদ টাকা দেওয়া হয়েছিল, তা রিয়েল এস্টেট জালিয়াতি সংক্রান্ত অপরাধের অংশ।
তদন্তে নেমে গেল ১৬ এপ্রিল হায়দরাবাদ, সেকেন্দ্রাবাদের চারটি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালায় ইডি। ২০০২ সালের আর্থিক তছরুপ আইনে এ মামলার তদন্ত চলছে।
মহেশবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁকে দেখে বহু মানুষ সম্পত্তি কিনতে উৎসাহিত হয়ে পড়েন। আর তাতেই প্রতারণা, জালিয়াতির শিকার হতে হয় তাদের। অভিনেতা সরাসরি দুর্নীতি না করলেও নগদে তিনি যে টাকা নিয়েছেন, সে পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে ইডির। যেখানে ১০০ কোটি টাকার লেনদেনে অনিয়ম চোখে পড়েছে।
ওই রিয়েল এস্টেট প্রজেক্টের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবে যেহেতু প্রচারের মুখ ছিলেন মহেশবাবু, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান তদন্তকারীরা।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইবি নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বাতিলের দাবি
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে গোল টেবিল বৈঠক করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সেন্টার ফর পিচ অ্যান্ড রিসার্চ (সিপিআর)। এতে কমিশনের প্রতিবেদন কোরআন-সুন্নাহর সঙ্গে সাংঘর্ষিক দাবি করে তা বাতিল, নতুন সংস্কার কমিশনের গঠনের দাবি জানায় সংগঠনটি।
মঙ্গলবার (২২এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় আইন অনুষদের সভাকক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. আ ছ ম তরীকুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন একই বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান।
আরো পড়ুন:
বিভাগের নাম পরিবর্তনের দাবিতে ইবির প্রশাসন ভবনে তালা
ছাত্রশিবিরের শিক্ষাবৃত্তি পেলেন ইবির অর্ধশত শিক্ষার্থী
এছাড়া আলোচক হিসেবে ছিলেন আল কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. নাছির উদ্দিন মিঝি, অধ্যাপক ড. ময়নুল হক, আল ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু বকর মো. জাকারিয়া, ধর্মতত্ত্ব অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আ ব ম সিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু সিনা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, নারী অধিকার সংস্কার কমিশন যে প্রস্তাব দিয়েছে, সেখানে অত্যন্ত আপত্তিকরভাবে ধর্মীয় বিধিবিধান, বিশেষ করে ইসলামি উত্তরাধিকার আইন ও ইসলামি পারিবারিক আইনকে নারীর প্রতি বৈষম্যের কারণ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের বিতর্কিত, ইসলামবিদ্বেষী, ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতকারী, কোরআন-সুন্নাহর সঙ্গে সাংঘর্ষিক, ন্যাক্কারজনক কটাক্ষপূর্ণ প্রস্তাব দেওয়ার কারণে এই কমিশন বাতিলের দাবি করছি।
তারা আরো বলেন, যারা সমাজের প্রতিনিধিত্ব করে না, যাদের কেউ চেনে না, তারা এ কমিশনে কাজ করেছে। কমিশনে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে এমন কাউকে রাখা হয়নি। এ কমিশনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা এ অঞ্চলের ধর্মীয়, সামাজিক, রাজনৈতিক বাস্তবতা সম্পর্কে অজ্ঞ। তারা নারীর অধিকারের কথা বলে পাশ্চাত্যের প্রেসক্রিপশন এ দেশে বাস্তবায়ন করতে চায়।
বক্তাদের দাবি, স্পষ্টতই এ প্রতিবেদনে ইসলামবিদ্বেষী মনোভাব লক্ষ্যণীয়। আমাদের এখন থেকে এর বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকতে হবে। কোনোভাবেই পাশ্চাত্যের চেপে দেওয়া কোনো আদর্শকে প্রতিষ্ঠা হতে দেওয়া যাবে না।
বেসরকারি সংস্থা ‘নারীপক্ষ’ এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শিরীন পারভীন হককে প্রধান করে গত ১৮ নভেম্বর নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। এ কমিটি সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে ৪৩৩টি সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দেয়।
কমিশন মোটা দাগে সংবিধান, আইন ও নারীর অধিকার— এই তিন বিষয়ে সুপারিশ করেছে। সেখানে সমতা ও সুরক্ষার ভিত্তি জোরালো করার কথা বলা হয়েছে। সুপারিশগুলো অন্যতম হলো- অভিন্ন পারিবারিক আইনের মাধ্যমে সব ধর্মের নারীদের জন্য বিয়ে, তালাক, উত্তরাধিকার ও ভরণপোষণে সমান অধিকার নিশ্চিত করা।
অভিভাবক ও প্রতিপাল্য আইন, ১৮৯০ সংশোধন করে সন্তানের ওপর নারীর জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করা। সংসদীয় আসন বাড়িয়ে ৬০০ করে সেখানে ৩০০ আসন নারীর জন্য সংরক্ষিত রেখে সরাসরি নির্বাচন। শ্রম আইন সংশোধন করে যৌনকর্মীদের মর্যাদা ও শ্রম অধিকার নিশ্চিত করা।
ঢাকা/তানিম/মেহেদী