রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় করা প্রতারণা ও চাঁদাবাজির মামলায় ব্যবসায়ী দেওয়ান সমিরকে আরও চার দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। এর আগে এ মামলায় ১৭ এপ্রিল তাঁকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল।

আজ দেওয়ান সমিরকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিন রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ। আসামিপক্ষ থেকে এই আবেদনের বিরোধিতা করে তা বাতিল চাওয়া হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত চার দিন মঞ্জুর করেন।

সৌদি রাষ্ট্রদূতের কাছে ৫ মিলিয়ন ডলার চাঁদা দাবির অভিযোগ ভাটারা থানা–পুলিশ ব্যবসায়ী দেওয়ান সমিরের বিরুদ্ধে মামলা করে। ওই মামলায় ১১ এপ্রিল গ্রেপ্তার হন তিনি। এরপর ১২ এপ্রিল তাঁকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।

এদিকে চাঁদাবাজি-প্রতারণার অভিযোগে ১৫ এপ্রিল মডেল মেঘনা আলম, ব্যবসায়ী দেওয়ান সমিরসহ অজ্ঞাতপরিচয় দু-তিনজনের বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় আরেকটি মামলা হয়। মামলাটি করেন ধানমন্ডি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আবদুল আলীম।

ধানমন্ডি থানার মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ২৯ মার্চ ধানমন্ডির একটি রেস্তোরাঁয় একটি গোপন বৈঠক হয়। বৈঠকে মেঘনা, সমিরসহ কয়েক ব্যক্তি অংশ নেন। বৈঠকে কূটনীতিকের কাছে পাঁচ মিলিয়ন ডলার দাবি ও আদায়ের সিদ্ধান্ত হয়। এই গোপন বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল ব্ল্যাকমেল করে অর্থ আদায় করা। আসামিদের এই কার্যক্রমের কারণে আন্তরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা পেনাল কোডের ৪২০, ৩৮৫ ও ১০৯ ধারার অপরাধ।

এই মামলায় দেওয়ান সমিরকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য ১৭ এপ্রিল পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজ তাঁকে আবারও আদালতের মাধ্যমে চার দিনের রিমান্ডে নেওয়া হলো।

দেওয়ান সমির বিশেষ ক্ষমতা আইনে আটক মডেল মেঘনা আলমের পূর্বপরিচিত বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে মেঘনা আদালতে বলেন, এটা সঠিক নয়। তিনি দেওয়ান সমিরকে চেনেন না।

মেঘনাকে ৯ এপ্রিল রাতে রাজধানীর বসুন্ধরার বাসা থেকে আটক করে হেফাজতে নেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশ অনুযায়ী, পরদিন বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) আদালত মেঘনাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিন আটক রাখার আদেশ দেন।

আরও পড়ুনশুধু সৌদি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গেই সম্পর্ক ছিল, আদালতে মডেল মেঘনা১৭ এপ্রিল ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ধ নমন ড ব যবস য়

এছাড়াও পড়ুন:

তালা ভেঙে হলে প্রবেশ করল কুয়েটের ছাত্রীরা, শিক্ষা উপদেষ্টার ফোন

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) রোকেয়া হলের তালা ভেঙে ফেলেছেন ছাত্রীরা। তারা হলে প্রবেশ করেছেন। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ছাত্রীরা হলটির ফটকে লাগিয়ে রাখা তালা ভাঙেন। তাদের এ কাজে সহায়তা করেন ছাত্র হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী।

এদিকে, কুয়েটের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অনশন প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। মঙ্গলবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ফোনালাপকালে তিনি এ আহ্বান জানান। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

রোকেয়া হলে সামনে অবস্থানকারী ছাত্রীরা বলেন, এখন আমরা ১০-১৫ জন এসেছি। আমাদের অনেক শিক্ষার্থী বাইরে রয়েছে। তারাও আজ কালকের মধ্যে হলে প্রবেশ করবেন।

আরো পড়ুন:

পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সাময়িক স্থগিত

শেবাচিমে অত্যাধুনিক সিমুলেশন ল্যাব উদ্বোধন

এর আগে, গত ১৫ এপ্রিল বন্ধ থাকা কুয়েটের ছাত্র হলগুলোর তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। গত দুই মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রী আবাসিক হল তালাবদ্ধ ছিল। আজ সেটিরও তালা ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। 

 

কুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের দাবিতে সোমবার (২১ এপ্রিল) বিকেল ৪টা থেকে অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের মধ্যে চার শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। দুইজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হয়েছে। তাদের একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকাট্রনিক্স ২৩ এবং অন্যজন সিএসই ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী। অপর দুইজনকে অভিভাবকরা বাড়িতে নিয়ে গেছেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফোনে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার সময় উপদেষ্টা তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি জানান, উষ্ম আবহাওয়ায় শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়বেন। শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে অনশন প্রত্যাহার করতে শিক্ষার্থীদের অনুরোধ জানান তিনি।

তিনি আশ্বস্ত করেন, শিক্ষার্থীদের দাবি সম্পর্কে সরকার সচেতন রয়েছে। একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল অতি দ্রুত খুলনা যাবে। কুয়েট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, শিক্ষক এবং ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে চলতি সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনশনরত এক শিক্ষার্থী বলেন, কুয়েট ভিসিকে অপসারণ করতে হবে। অথবা তাকে নিজ থেকে পদত্যাগ করতে হবে। খুলনায় প্রায় ৪৫ ডিগ্রির মতো তাপ অনুভব হচ্ছে। এমন অবস্থায় আমরা কতক্ষণ বেঁচে থাকব জানি না। শিক্ষা উপদেষ্টা আমাদের জানিয়েছেন বুধবার (২৩ এপ্রিল) কুয়েটে তদন্ত কমিটি আসছে। আমরা এই তদন্ত কমিটির নিন্দা জানিয়েছি। ভিসিকে অপসারণ না করে তদন্ত কমিটি কেন আসবে?

ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ