নতুন বাজার সড়কে বর্জ্য ফেলে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের প্রতিবাদ, তীব্র যানজট
Published: 22nd, April 2025 GMT
রাজধানীর নতুন বাজারের মূল সড়কে বাসা-বাড়ির সংগ্রহ করা বর্জ্য ফেলে প্রতিবাদ জানিয়েছেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। এতে সড়কটিতে যান চলাচল ব্যাহত হয়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বর্জ্যের দুর্গন্ধে এই পথে চলাচল করা পথচারীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, দুপুর ১২টার দিকে নতুন বাজারে রামপুরা-কুড়িল সড়কে ময়লা ফেলা শুরু করেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। তারা বেতনের দাবিতে এভাবে এখানে ময়লা ফেলেছে। তাদের এভাবে সড়কে ময়লা ফেলার কারণে সড়কের পশ্চিম পাশ তথা বাড্ডা থেকে কুড়িলের দিকে যাওয়া যানবাহনগুলো চলাচলে ধীরগতি সৃষ্টি হয়েছে।
সড়কে ময়লা ফেলে আন্দোলনে অংশ নেওয়া পরিচ্ছন্নতাকর্মী কামরুল বলেন, তারা সিটি করপোরেশনের একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের অধীনে বাসাবাড়ি থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করেন। কিন্তু তিন মাস ধরে তাদের বেতন-ভাতা ঠিকমতো দিচ্ছেন না ঠিকাদার। এ কারণে তারা এভাবে রাস্তায় ময়লা ফেলে দাবি আদায়ে নেমেছেন। বেতন পরিশোধের প্রতিশ্রুতি পেলে তারা নিজেরাই সড়ক থেকে ময়লা তুলে নেবেন।
তবে ভিন্ন কথা বলছেন ডিএনসিসির উপ-প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মফিজুর রহমান ভূঁইয়া। তিনি বলেন, নতুন বাজারে আমাদের একটি এসটিএস ময়লা রাখার ঘর রয়েছে। গত রাতে সেখানে অতিরিক্ত বর্জ্য থাকায় কিছু বর্জ্য রাস্তায় পড়েছে। এর মধ্যে পেলোডার নষ্ট থাকার কারণে বর্জ্যগুলো সরানো যাচ্ছে না। পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের বেতন-ভাতার কোনো সংযুক্তি এখানে নেই বলে দাবি করেন তিনি।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা বেতনের দাবিতেই সড়কে ময়লা ফেলে আন্দোলন করছেন। তবে তাদের পাওনা সিটি করপোরেশনের কাছে নয়। তাদের দাবি তাদের পরিচালনা করা কন্ট্রাক্টর বা ইজারা যারা নিয়েছে তাদের কাছে। সেখানকার পরিস্থিতিসহ কেন তারা এমন করছে, কারা তাদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করেনি, এখানে ফল্ট কার, সার্বিক বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছে ডিএনসিসি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: নত ন ব জ র বর জ য
এছাড়াও পড়ুন:
ইবি নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বাতিলের দাবি
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে গোল টেবিল বৈঠক করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সেন্টার ফর পিচ অ্যান্ড রিসার্চ (সিপিআর)। এতে কমিশনের প্রতিবেদন কোরআন-সুন্নাহর সঙ্গে সাংঘর্ষিক দাবি করে তা বাতিল, নতুন সংস্কার কমিশনের গঠনের দাবি জানায় সংগঠনটি।
মঙ্গলবার (২২এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় আইন অনুষদের সভাকক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. আ ছ ম তরীকুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন একই বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান।
আরো পড়ুন:
বিভাগের নাম পরিবর্তনের দাবিতে ইবির প্রশাসন ভবনে তালা
ছাত্রশিবিরের শিক্ষাবৃত্তি পেলেন ইবির অর্ধশত শিক্ষার্থী
এছাড়া আলোচক হিসেবে ছিলেন আল কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. নাছির উদ্দিন মিঝি, অধ্যাপক ড. ময়নুল হক, আল ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু বকর মো. জাকারিয়া, ধর্মতত্ত্ব অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আ ব ম সিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু সিনা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, নারী অধিকার সংস্কার কমিশন যে প্রস্তাব দিয়েছে, সেখানে অত্যন্ত আপত্তিকরভাবে ধর্মীয় বিধিবিধান, বিশেষ করে ইসলামি উত্তরাধিকার আইন ও ইসলামি পারিবারিক আইনকে নারীর প্রতি বৈষম্যের কারণ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের বিতর্কিত, ইসলামবিদ্বেষী, ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতকারী, কোরআন-সুন্নাহর সঙ্গে সাংঘর্ষিক, ন্যাক্কারজনক কটাক্ষপূর্ণ প্রস্তাব দেওয়ার কারণে এই কমিশন বাতিলের দাবি করছি।
তারা আরো বলেন, যারা সমাজের প্রতিনিধিত্ব করে না, যাদের কেউ চেনে না, তারা এ কমিশনে কাজ করেছে। কমিশনে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে এমন কাউকে রাখা হয়নি। এ কমিশনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা এ অঞ্চলের ধর্মীয়, সামাজিক, রাজনৈতিক বাস্তবতা সম্পর্কে অজ্ঞ। তারা নারীর অধিকারের কথা বলে পাশ্চাত্যের প্রেসক্রিপশন এ দেশে বাস্তবায়ন করতে চায়।
বক্তাদের দাবি, স্পষ্টতই এ প্রতিবেদনে ইসলামবিদ্বেষী মনোভাব লক্ষ্যণীয়। আমাদের এখন থেকে এর বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকতে হবে। কোনোভাবেই পাশ্চাত্যের চেপে দেওয়া কোনো আদর্শকে প্রতিষ্ঠা হতে দেওয়া যাবে না।
বেসরকারি সংস্থা ‘নারীপক্ষ’ এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শিরীন পারভীন হককে প্রধান করে গত ১৮ নভেম্বর নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। এ কমিটি সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে ৪৩৩টি সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দেয়।
কমিশন মোটা দাগে সংবিধান, আইন ও নারীর অধিকার— এই তিন বিষয়ে সুপারিশ করেছে। সেখানে সমতা ও সুরক্ষার ভিত্তি জোরালো করার কথা বলা হয়েছে। সুপারিশগুলো অন্যতম হলো- অভিন্ন পারিবারিক আইনের মাধ্যমে সব ধর্মের নারীদের জন্য বিয়ে, তালাক, উত্তরাধিকার ও ভরণপোষণে সমান অধিকার নিশ্চিত করা।
অভিভাবক ও প্রতিপাল্য আইন, ১৮৯০ সংশোধন করে সন্তানের ওপর নারীর জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করা। সংসদীয় আসন বাড়িয়ে ৬০০ করে সেখানে ৩০০ আসন নারীর জন্য সংরক্ষিত রেখে সরাসরি নির্বাচন। শ্রম আইন সংশোধন করে যৌনকর্মীদের মর্যাদা ও শ্রম অধিকার নিশ্চিত করা।
ঢাকা/তানিম/মেহেদী