সংবিধান সংশোধনীর সব ক্ষেত্রে গণভোট প্রয়োজন নয়: সালাহউদ্দিন আহমেদ
Published: 22nd, April 2025 GMT
সংবিধান সংশোধনের প্রতিটি প্রস্তাবে গণভোট আয়োজনের প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তবে সংবিধানের নির্দিষ্ট অনুচ্ছেদ নিয়ে গণভোটের উদ্যোগ নিতে চাইলে, তা পরবর্তী সংসদে আলোচনা সাপেক্ষে নির্ধারণ করা যেতে পারে বলেও মত দেন তিনি।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের লেডিস ক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংলাপের তৃতীয় দফা বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “প্রধানমন্ত্রী পদে টানা দুই মেয়াদের বেশি কেউ থাকতে পারবেন না— এমন প্রস্তাবে আমরা ভিন্নমত দিয়েছি। আমাদের প্রস্তাব হলো, টানা দুই মেয়াদের বেশি না থাকলেও এক মেয়াদ বিরতি দিয়ে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ রাখা যেতে পারে।”
আরো পড়ুন:
শেখ হাসিনা-রেহানা-জয় ও পুতুলসহ ১০ জনের ‘এনআইডি লক’
ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা
রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংবিধানের ৪৮(৩) অনুচ্ছেদের পর নতুন একটি ধারা সংযোজনের পক্ষে মত দিয়েছে বিএনপি। এ বিষয়ে পরবর্তী সময়ে সংসদে আলোচনা হবে বলে জানান তিনি। এ ছাড়া, রাষ্ট্রপতি সংসদের উভয়কক্ষের সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হওয়ার প্রস্তাবে বিএনপি একমত বলেও জানান সালাহউদ্দিন।
ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব—একই ব্যক্তি সরকারপ্রধান, দলপ্রধান ও সংসদ নেতা হতে পারবেন না—বিষয়ে বিএনপি দ্বিমত জানিয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা বিষয়টি উন্মুক্ত রাখার প্রস্তাব দিয়েছি। কারণ, একই ব্যক্তি দলীয় প্রধান ও সরকারপ্রধান হতে পারবেন না—এমন চর্চা বিশ্বের কোথাও দেখা যায় না।”
বিএনপি সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল করে পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে বলেও জানান তিনি। সালাহউদ্দিন বলেন, “পঞ্চদশ সংশোধনীতে ধর্মনিরপেক্ষতা বা বহুত্ববাদ কোনোটিই নেই। তবে কমিশনের প্রস্তাবে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে উল্লেখিত সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার যুক্ত করার বিষয়টি আমরা সমর্থন করেছি।”
তথ্যপ্রযুক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সংবিধানে জনগণের মৌলিক অধিকার হিসেবে ইন্টারনেট প্রাপ্তির প্রস্তাবের সঙ্গে বিএনপি একমত। তবে একে শুধু অন্তর্ভুক্ত করলেই হবে না, রাষ্ট্র যেন এই ইন্টারনেট সুবিধা থেকে জনগণকে বঞ্চিত করতে না পারে— সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।”
ঢাকা/আসাদ/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ স ল হউদ দ ন র প রস ত ব ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধির পক্ষে বিএনপি
ক্ষমতার ভারসাম্যের জন্য রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধির পক্ষে বিএনপি। এর জন্য সংবিধানের ৪৮(৩) অনুচ্ছেদের পর আরেকটি অনুচ্ছেদ যুক্ত করা হবে পরবর্তী সময়ে সংসদে আলোচনার মাধ্যমে। রাষ্ট্রপতি সংসদের উভয়কক্ষের সদস্যদের ভোটেই নির্বাচিত হবেন। সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ‘ইলেক্টোরাল কলেজে’র মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে একমত নয় বিএনপি।
রোববার বেলা ১১টায় জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপের পর এসব কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। ২২ এপ্রিল আবার বিএনপির সঙ্গে সংলাপ হবে।
এর আগে দুপুরে সংলাপের বিরতিতে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, টানা দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর পদে দায়িত্বপালন করে একবার বিরতি দিয়ে আবারও দায়িত্বে আসতে পারবে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে এমন প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি।
তিনি বলেন, আমাদের প্রস্তাব ‘নট মোর টু কনজিকিউটিভ টার্ম’ অর্থাৎ পরপর দু’বারের বেশি কেউ থাকতে পারবেন না। তার মানে দাঁড়াচ্ছে যদি দু’বারের পর একবার বিরতি হয় তার পরবর্তী সময়ে যদি জনগণ নির্বাচন করে সেই পার্টিকে মেজরিটি পার্টি হিসেবে সেই পার্টি যদি সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে সেই একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হতেও পারেন। কিন্তু কথা হচ্ছে কেন ধরে নিচ্ছেন, একই লিডার বা একই ব্যক্তি বারবার হবেন। আমরা তো এখানে সুযোগটা রাখতে চাই।
একই ব্যক্তি সরকার প্রধান, দলের প্রধান ও সংসদ নেতা হতে পারবেন না- ঐকমত্য কমিশন এই প্রস্তাবে বিএনপি একমত নয় বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি উন্মুক্ত রাখতে প্রস্তাব দিয়েছি।
তিনি বলেন, একই ব্যক্তি সরকার প্রধান ও দলীয় প্রধান হতে পারবে না- এমন চর্চা আমরা দেখি না। যুক্তরাজ্যেও আমরা দেখি, পার্টি প্রধানকে সরকারপ্রধান। এটি গণতান্ত্রিক চর্চা। যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রচলন হয় এবং নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রচলন করা যায়, তাহলে সেই ভোটে যারা ক্ষমতায় আসবে, মনে করতে হবে জনগণ তাদের সেই ক্ষমতা দিয়েছে।
বিএনপি সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার প্রস্তাব করেছে জানিয়ে সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, সেখানে ধর্মনিরপেক্ষ বা বহুত্ববাদ কোনোটাই নেই। তবে, কমিশন তাদের প্রস্তাবে- স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে থাকা সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের কথা যুক্ত করতে বলেছেন। আমরা সেখানে একমত হয়েছি।
সালাহউদ্দিন বলেন, সংবিধান জনগণের মৌলিক অধিকার হিসেবে ইন্টারনেট প্রাপ্তির বিষয়ে একমত বিএনপি। তবে মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে হয় রাষ্ট্রকে। মৌলিক অধিকারের বাড়ানোর ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক অবস্থার বিষয়টিও দেখতে হবে। তাই আমরা বলেছি, সংবিধানের অনেকগুলো বিষয় যুক্ত না করে, যা রাষ্ট্র বাস্তবায়নের সক্ষমতা রয়েছে তাই করতে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, সংস্কার নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বেশকিছু বিষয়ে আমরা কাছাকাছি এসেছি। কিছু কিছু বিষয়ে তাদের সঙ্গে দ্বিমত জানিয়েছি। গণতন্ত্রে মত-দ্বিমত থাকাই স্বাভাবিক। কারণ আমরা বাকশালে বিশ্বাস করি না। যেখানে এমন কিছু করা হয়, যাতে সবাই একমত হতে হয়।
তিনি আরও বলেন, দেশ ও জনগণের স্বার্থ চিন্তা করে যা সঙ্গত ও উত্তম তেমন কিছুই হওয়ায় উচিত।