পাবনার চাটমোহরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিক্রি করতে নিয়ে যাওয়ার সময় এলাকাবাসীর হাতে আটক হন জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা সেলিম রেজা। ইউএনও যাওয়ার আগেই তিনি কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় ওই নেতাকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

সোমবার (২১ এপ্রিল) বিকেলে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল ভাঙ্গুড়া উপজেলা শাখার সভাপতি আখিরুজ্জামান মাসুম ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বহিষ্কারের তথ্য জানা যায়। 

অভিযুক্ত সেলিম রেজা ভাঙ্গুড়া উপজেলার অষ্টমনিষা ইউনিয়ন কৃষক দলের আহ্বায়ক ছিলেন।

আরো পড়ুন:

বিএনপি নেতার বাড়ির সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

নারায়ণগঞ্জে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের মিছিলের প্রতিবাদে বিএনপির সমাবেশ

এলাকাবাসী জানান, অষ্টমনিষা ইউনিয়নের হতদরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ৩০ বস্তা চাল ব্যাটারিচালিত ভ্যানে সোমবার দুপুরে চাটমোহরে বিক্রি করতে নিয়ে আসেন সেলিম রেজা। বিষয়টি জানতে পেরে পৌর শহরের জারদিস মোড় এলাকায়  চালসহ সেলিম রেজাকে আটক করেন স্থানীয়রা। 

চাল কোথাকার এবং কোথায় যাবে স্থানীয়দের এমন প্রশ্নে একেক সময় একেক কথা বলেন ওই নেতা। স্থানীয়দের সন্দেহ হলে তারা ইউএনও মুসা নাসের চৌধুরীকে জানান। তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান সেলিম রেজা। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত দাম নির্ধারণ করে নিলামের মাধ্যমে জব্দকৃত চাল ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করে। 

ঘটনা জানাজানি হলে উপজেলা জুড়ে সমালোচনা শুরু হয়। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়। পরে পাবনা জেলা কৃষক দলের সভাপতি আবুল হাসেম ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আফিপ এর সিদ্ধান্ত মোতাবেক ভাঙ্গুড়া উপজেলার অষ্টমনিষা ইউনিয়ন কৃষক দল নেতা সেলিম রেজাকে বহিষ্কার করা হয়।

ভাঙ্গুড়া উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি আখিরুজ্জামান মাসুম বলেন, ‍“দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগের ভিত্তিতে অষ্টমনিষা ইউনিয়ন কৃষক দলের আহ্বায়কের পদ থেকে সেলিম রেজাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। চাল সংক্রান্ত ঘটনায় দলের অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা তা জানতে পাঁচ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে।”

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত সেলিম রেজার মোবাইলে কল করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

চাটমোহর উপজেলার ইউএনও মুসা নাসের চৌধুরী বলেন, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। চালগুলো ডিলার কর্তৃক বিক্রি করা হয়নি। এই চাল পার্শ্ববর্তী উপজেলার একটি ইউনিয়নের হতদরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া ছিল। যিনি চাল নিয়ে আসেন তাকে পাওয়া যায়নি। নিলামের মাধ্যমে খোলা বাজারে চাল বিক্রি করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে টাকা জমা দেওয়া হয়েছে।”

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ উপজ ল র

এছাড়াও পড়ুন:

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয়ে ইউএনওকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ, পরে নিজেই বিপাকে

সেন্ট মার্টিনে যাওয়ার উদ্দেশে সকালে কক্সবাজারের নুনিয়াছটায় বিআইডব্লিউটিএর জেটিঘাটে হাজির হয় ১১ পর্যটকের একটি দল। তবে ঘাটে পৌঁছানোর আগেই নির্ধারিত জাহাজ ছেড়ে যাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন দলের সদস্যরা। একপর্যায়ে তাঁরা বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান জাহাজ কর্তৃপক্ষ ও ঘাটে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে। দলের একজন নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এরপর ঘাটে থাকা এক পুলিশ সদস্যকে বলেন ইউএনওকে গ্রেপ্তার করতে। যদিও বিষয়টি নিয়ে পরে বিপাকে পড়তে হয় ওই পর্যটক দলের সদস্যদের। আজ শুক্রবার সকাল সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত জাহাজমালিকদের সংগঠন সি ক্রুজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, বাঁকখালী নদীর জোয়ার–ভাটা একেক সময় একেক রকম। জোয়ার–ভাটা বিবেচনায় নিয়ে জাহাজ ছাড়ার সময় নির্ধারণ করা হয়। ইউএনওর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা ওই পর্যটক ঘাটে এসে জাহাজ দেখতে না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়েছেন।

হোসাইন ইসলাম বাহাদুর আরও বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তির নাম ইব্রাহিম। তিনি হয়তো ঘাটে থাকা ইউএনওকে চিনতে পারেননি। সাধারণ নারী মনে করে গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়েছেন। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তিনি ইউএনওর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। পরে আরেকটি জাহাজে পর্যটকদের ওই দল সেন্ট মার্টিনে যায়।

জানতে চাইলে কক্সবাজার সদরের ইউএনও তানজিলা তাসনিম বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের আগে কেন জাহাজ ছেড়ে গেছে, এ বিষয়টি নিয়ে হট্টগোল শুরু করেন ইব্রাহিম নামের ওই ব্যক্তি। এ সময় নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা দাবি করে ঘটনাস্থলে থাকা এক পুলিশ সদস্যকে বলেন, আমাকে গ্রেপ্তার করতে। এ ঘটনার ভিডিও সংরক্ষণ করা হয়েছে। ওই ব্যক্তি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা হলেও এভাবে কাউকে গ্রেপ্তার করতে বলার এখতিয়ার রাখেন না।’

ইউএনও বলেন, পর্যটকদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে তাৎক্ষণিক এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ বিষয়টি এরই মধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। ওই ব্যক্তির পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নুনিয়াছটায় বিআইডব্লিউটিএর জেটিঘাট থেকে প্রতিদিন সকাল সাতটায় সেন্ট মার্টিনগামী জাহাজ ছাড়ে। কয়েকটি জাহাজে দৈনিক দুই হাজার পর্যটকের সেন্ট মার্টিন ভ্রমণের সুযোগ রাখা হয়। জাহাজে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন যাতে করা না হয়, সে বিষয়টি তদারকি করে ইউএনওর নেতৃত্বে গঠিত একটি কমিটি।

১ ডিসেম্বর কক্সবাজার–সেন্ট মার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। সেন্ট মার্টিনে রাত্রী যাপনের সুযোগও রাখা হয়। এ ক্ষেত্রে সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পর্যটকদের সরকার ঘোষিত ১২টি নির্দেশনা মেনে চলতে হচ্ছে। আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত দ্বীপটি ভ্রমণের সুযোগ থাকবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কক্সবাজারে ইউএনওকে গ্রেপ্তারের হুমকি পর্যটকের
  • স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয়ে ইউএনওকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ, পরে নিজেই বিপাকে
  • নবাগত সদর ইউএনও’র সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময়