রাজধানীর ধানমন্ডিতে ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আবারও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে এই ঘটনার সূত্রপাত হয়। পরে পুলিশ গিয়ে দুপুর ১টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

বর্তমানে ওই এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলে সমকালকে জানিয়েছেন নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহসীন উদ্দীন।

পুলিশ জানায়, গতকাল সোমবার ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেন সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনা ঢাকা কলেজের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনার প্রতিশোধ নিতে আজ মঙ্গলবার সকালে সিটি কলেজের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সকাল ১১টার দিকে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। এ সময় দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে দুপুর ১টার দিকে দুই কলেজের শিক্ষার্থীদেরকে যার যার ক্যাম্পাসের দিকে নিয়ে যায়।

নিউমার্কেট থানার ওসি মোহসীন উদ্দীন বলেন, শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জেনেছি। এ ঘটনার পর আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঢ ক কল জ স ট কল জ স ঘর ষ কল জ র শ ক ষ র থ স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

ডিএনসিসির সব নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা 

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) আওতাধীন সব নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং মাতৃসদন কেন্দ্রে বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। 

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশান-২ নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ তথ্য জানান।

সভায় বর্ষা মৌসুমে সম্ভাব্য ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় মশার প্রজনন ও ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণে করণীয় বিষয়ে ডিএনসিসির আওতাধীন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের প্রতিনিধি এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা হয়। সভায় সভাপতির বক্তব্যে প্রশাসক বলেন, “এ বছর আমাদের দেশে গরম শুরুর আগেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ফলে ডেঙ্গুর ঝুঁকি বেড়েছে। এই পরিস্থিতি সবাইকে মিলে মোকাবিলা করতে হবে।”

তিনি বলেন, “বাসাবাড়িতেই এডিস মশার লার্ভা জন্মায়। আমাদের কর্মীরা নিরাপত্তার কারণে অনেক সময় বাসায় প্রবেশ করতে পারে না। তাই নাগরিকদের সচেতন হতে হবে, বাসাবাড়ি পরিষ্কার রাখতে হবে এবং আশপাশে পানি জমতে না দেওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।”

ডিএনসিসি প্রশাসক জানান, আগামী সপ্তাহ থেকে স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে সচেতনতা ক্যাম্পেইন শুরু করা হবে। এক সপ্তাহের প্রচারণার পর কোনো বাসাবাড়িতে বা স্থাপনায় লার্ভা পাওয়া গেলে জরিমানা করা হবে। তিনি বলেন, “আমরা শুধু জরিমানা করবো না, মানুষকে সচেতন করবো—এটাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য।”

মশক নিধন কার্যক্রমের স্বচ্ছতা নিয়ে তিনি বলেন, “আমরা দেখেছি, মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের জন্য বরাদ্দকৃত বিলের বড় অংশ তারা পান না। একেকজন কর্মীর নামেই ১৭-১৮ হাজার টাকা বিল আসে, কিন্তু তারা হাতে পান মাত্র ৬-৮ হাজার টাকা। প্রায় ১০ হাজার টাকা মাঝখানে হারিয়ে যায়। হাজারজন কর্মীর বেলায় এটা কোটি টাকার দুর্নীতি।”

এই সমস্যা সমাধানে সিটি কর্পোরেশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের বিল সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পরিশোধ করা হবে। আউটসোর্সিং কোম্পানিগুলো কেবল কর্মীদের তালিকা, ফোন নম্বর এবং ব্যাংক তথ্য দেবে। এ ছাড়া, যেসব এলাকায় মশার ওষুধ ছিটানো হচ্ছে, সেই এলাকার সুপারভাইজারদের ফোন নম্বর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। নাগরিকরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন।

সভায় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বেনজীর আহমেদ বলেন, “ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে অনেকেই জানে না কী করতে হবে। প্রতিটি হাসপাতালে একটি কাউন্সেলিং টিম থাকলে রোগী ও স্বজনরা দিক-নির্দেশনা পাবে।” তিনি সরকারি-বেসরকারি সকল হাসপাতালে বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা চালুর আহ্বান জানান।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক ডা. মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, “ডেঙ্গু এখন আর শুধু শহরকেন্দ্রিক নয়, গ্রামেও ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিরোধ ও চিকিৎসা—দুটোই জরুরি। নির্মাণাধীন ভবনে সাধারণত এডিসের লার্ভা বেশি পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহিতা দরকার।”

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. কবিরুল বাসার বলেন, “বিশ্বের অন্য দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এত মানুষের মৃত্যু হয় না। আমাদের দেশে মৃত্যুহার বেশি কেন, তা নিয়ে গবেষণা দরকার। প্রতিটি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর জন্য আলাদা ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং রোগীদের সার্বক্ষণিক মশারির ভিতরে রাখতে হবে।”

সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী এবং বিভিন্ন হাসপাতালের প্রতিনিধি ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

ঢাকা/আসাদ/এনএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ