রাজধানীর হাতিরপুল এলাকায় একটি বাসার দরজা ভেঙে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র পিনাক রঞ্জন সরকারের (২৪) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার রাতে তার মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। 

পিনাক রঞ্জন বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ড্রয়িং অ্যান্ড পেইন্টিং বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। মৃত্যুর আগে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (মেসেঞ্জারের নোটসে) ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়’– লিখে রেখেছিলেন। 

কলাবাগান থানার ওসি মো.

মোক্তারুজ্জামান সমকালকে বলেন, প্রাথমিকভাবে এ ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। ওই শিক্ষার্থীর বাসার দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। 

ওসি জানান, মাসখানেক আগে প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন পিনাক। বন্ধুদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথাও বলেছিলেন। তবে সম্প্রতি তিনি সেই অবস্থা অনেকটা কাটিয়ে ওঠেন। একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে চাকরির জন্য আবেদনও করেছিলেন। এর মধ্যেই হঠাৎ এমন ঘটনা ঘটে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত ৮টার দিকে হাতিরপুল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় পাওয়া যায়। মরদেহ উদ্ধার করে প্রথমে কলাবাগান থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। থানার আনুষ্ঠানিকতা শেষে মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।

পিনাক রঞ্জনের সহপাঠী অর্নব চন্দ্র দেব সাংবাদিকদের বলেন, সোমবার রাতে পিনাক রঞ্জনের মেসেঞ্জার নোটসে 'আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়' লেখাটি দেখতে পাই। তখনই তার রুমমেট ও সহপাঠী জাহিদুল ইসলামকে জানাই। জাহিদ দ্রুত অফিস থেকে ফিরে দেখেন, ভেতর থেকে দরজা বন্ধ। তাৎক্ষণিকভাবে ৯৯৯ নম্বরে কল দিলে পুলিশ এসে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলার ঘটনায় জাতিসংঘ মহাসচিবের তীব্র নিন্দা

সুদানে জাতিসংঘের এক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় ছয় শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন। তাঁরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘আমি সুদানের কাদুগলিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর লজিস্টিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে নৃশংস ড্রোন হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের লক্ষ্য করে হামলা আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।’

সুদানের কোরদোফান অঞ্চলের কাদুগলি শহরে অবস্থিত জাতিসংঘের ভবনটিতে গতকাল শনিবার এ হামলা হয়।

গুতেরেসের বিবৃতিতে বলা হয়, হামলায় আরও আট শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন। হতাহত ব্যক্তিদের সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। তাঁরা ইউএন ইন্টারিম সিকিউরিটি ফোর্স ফর আবেইয়ের (ইউএনআইএসএফএ) হয়ে দায়িত্বরত ছিলেন।

গুতেরেস বলেন, ‘দক্ষিণ কোরদোফানে আজ (শনিবার) শান্তিরক্ষীদের ওপর যে হামলা হয়েছে, তা অগ্রহণযোগ্য। এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।’

হামলায় নিহত শান্তিরক্ষীদের সবাই বাংলাদেশি। তাঁরা ইউএন ইন্টারিম সিকিউরিটি ফোর্স ফর আবেইয়ের (ইউএনআইএসএফএ) হয়ে দায়িত্বরত ছিলেন। হামলায় আরও আট শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন।

সুদানের সেনাবাহিনী ওই হামলার দায় র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) নামে দেশটির আধা সামরিক বাহিনীর ওপর চাপিয়েছে।

সুদানে দুই বছরের বেশি সময় ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে। দেশটির সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে এ লড়াই চলছে।

আরএসএফ তাৎক্ষণিকভাবে হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

সুদানের সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, এ হামলা বিদ্রোহী মিলিশিয়া এবং এর পেছনে যাঁরা আছেন, তাঁদের ধ্বংসাত্মক কৌশলের স্পষ্ট প্রকাশ।

সুদান সেনাবাহিনী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। ভিডিওতে একটি স্থান থেকে ঘন কালো ধোঁয়া আকাশে উঠতে দেখা যাচ্ছে। তারা বলেছে, এটি জাতিসংঘের স্থাপনা।

বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী হতাহত হওয়ার এ ঘটনায় গভীর শোক ও উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

দক্ষিণ কোরদোফানে আজ (শনিবার) শান্তিরক্ষীদের ওপর যে হামলা হয়েছে, তা অগ্রহণযোগ্য। এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।.আন্তোনিও গুতেরেস, জাতিসংঘ মহাসচিব

যেখানে হামলা হয়েছে, সেই তেলসমৃদ্ধ অঞ্চল আবেই নিয়ে সুদান ও দক্ষিণ সুদানের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। ২০১১ সালে সুদান থেকে আলাদা হয়ে দক্ষিণ সুদান একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এর পর থেকে সেখানে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশন মোতায়েন রয়েছে।

দুই দেশের সীমান্তে অবস্থিত আবেই বিশেষ প্রশাসনিক মর্যাদার অঞ্চল।

সুদানের আবেই অঞ্চলে একটি সড়কে দায়িত্ব পালন করছেন জাতিসংঘের একজন শান্তিরক্ষী

সম্পর্কিত নিবন্ধ