ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ, যা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তবে সম্পূর্ণভাবে নিরাময় করা সম্ভব নয়। অথচ ডায়াবেটিস বিষয়ে আমাদের অনেকের মাঝে বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তিসহ অজ্ঞতার কারণে কুসংস্কার বিরাজ করছে।

কেউ কেউ ভাবেন, ডায়াবেটিস একটি ছোঁয়াচে রোগ। এটি ঠিক নয়। এটি ছোঁয়াচে রোগ নয়।

কেউবা মনে করেন, মিষ্টি খেলে বা টেনশন করলে ডায়াবেটিস হয়! এ ধারণাও সঠিক না।  ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার পর মিষ্টি বা গ্লুকোজসমৃদ্ধ খাবার খেলে ইনসুলিনের অভাবে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে শরীর আরও অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে।

অনেক সময় চিকিৎসক বলতে পারেন, ‘আপনার হালকা ডায়াবেটিস হয়েছে।’ হালকা বা মাইল্ড ডায়াবেটিস বলে কোনো কথা নেই। বলতে হবে, ডায়াবেটিস আছে কী, নেই।

কেউ কেউ ডায়াবেটিক রোগীদের খেলাধুলা করতে বা গাড়ি চালাতে নিষেধ করেন। এটিও ভুল ধারণা। বরং ডায়াবেটিসে খেলাধুলা করাকে উৎসাহ দেওয়া উচিত। এতে ডায়াবেটিসজনিত জটিলতা প্রতিরোধে সহায়ক হয়।

দায়িত্বশীল হলে ও রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকলে গাড়ি চালাতেও কোনো বাধা নেই। বিশেষ কিছু সতর্কতা নেওয়া জরুরি।
অনেকে ভাবেন, ডায়াবেটিসে আস্তে আস্তে চোখ নষ্ট হয়ে যায়। ডায়াবেটিস নির্ণয়ের পর খাওয়া-দাওয়ায় নিয়ম মানলে, নিয়মিত হাঁটলে ও ডায়াবেটিসের প্রয়োজনীয় ওষুধ খেলে কিংবা ইনসুলিন নিলে এমনটি হওয়ার কথা নয়। তবে রক্তে শর্করার মাত্রা অনিয়ন্ত্রিত থাকলে শুধু চোখ কেন হৃৎপিণ্ড, স্নায়ু বা নার্ভ, ত্বকসহ দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষতি হতে পারে।

কেউ কেউ বলেন– করলা, উচ্ছে, মেথি বা নিমপাতা খেলে ডায়াবেটিস সারে। এমন ধারণাও ভুল। কারণ, ডায়াবেটিস সারাজীবনের একটা রোগ। একবার হয়ে গেলে কোনোভাবেই এটিকে সারানো যায় না। সঠিক নিয়ম মেনে রোগটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় মাত্র। একথা সত্যি যে– করলা, উচ্ছে, মেথি বা নিমপাতা ডায়াটারি ফাইবারযুক্ত। দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, হজমে সহায়তা করতে, নানা প্রকার চর্মরোগ প্রতিরোধে বিভিন্নভাবে এসব খাবার উপকারী। তবে চিকিৎসার বিকল্প হিসেবে নয়।

কেউ কেউ দাবি করেন– স্পেশাল ডায়াবেটিক ডায়েট রোগীদের জন্য ভালো! এ কথাটিও সত্য নয়। বাজারে ‘ডায়াবেটিক’ সন্দেশ, বিস্কুট, জ্যাম, চকোলেট ইত্যাদি কিনতে পাওয়া যায়। এসব খাবারের গায়ে চমকপ্রদ কিছু লেখা আর চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে স্বাভাবিকভাবেই একজন ডায়াবেটিক রোগীর খেতে মন চায়। অথচ ব্রিটিশ ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশনের মতে, ডায়াবেটিক খাবারে বাড়তি তেমন উপকার কিছু নেই। এমন খাবার পরিহার করা উচিত।
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সাড়ে ৬ কেজি হেরোইন উদ্ধার, কারবারি গ্রেপ্তার

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে সাড়ে ৬ কেজি হেরোইন ও নগদ ১৩ লাখ টাকাসহ শীর্ষ মাদক কারবারি তারেক হোসেনকে (৩৬) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার তিরিন্দা ভাজানপুর এলাকা থেকে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় গোয়েন্দা অফিস অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করে।

বিকেলে নগরীর লিলি হলের মোড় এলাকায় সংস্থাটির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. গোলাম আজম এ সব তথ্য জানান। তারেক গোদাগাড়ী উপজেলার মাদারপুর এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও সেনা সদস্যরা অভিযান পরিচালনা করে তারেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার কাছে সাদা প্লাস্টিকের বস্তার ভেতরে বাদামী বর্ণের ৮টি পলি প্যাকেটে ৫০০ গ্রাম করে ৪ কেজি এবং একই বস্তায় ২৫ প্যাকেটে ১০০ গ্রাম করে আরো আড়াই কেজি হেরোইন পাওয়া গেছে। এছাড়া তার কাছে মাদক বিক্রির ১৩ লাখ টাকা, একটি মোবাইল ও ইলেকট্রিক সীল মেশিন উদ্ধার করা হয়েছে। গম ও ভুট্টার বস্তার আড়ালে এগুলো লুকানো ছিল।

আরো পড়ুন:

বাংলাদেশ থেকে ৭২৫ সেনা সদস্য নেবে কাতার: প্রেস সচিব

সেনাপ্রধান ও জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি সাক্ষাৎ

সংবাদ সম্মেলনে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. গোলাম আজম বলেন, ‘‘বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে তারেক হোসেন পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু আমাদের টিম তাকে ধরে ফেলে। পরে তিনি মাদকের কথা স্বীকার করেন। তার নিজস্ব খামার ও মার্কেট রয়েছে। সেখানে তাকে নিয়ে গিয়ে সাড়ে ৬ কেজি হেরোইন ও ১৩ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। অধিদপ্তরের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ হেরোইন চালান এটি।’’

অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. গোলাম আজম আরো বলেরন, ‘‘তারেক হোসেন হেরোইন চোরাচালানের গডফাদার। তার বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। চক্রের অন্যান্য হোতাদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। আগামীতেও এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’’

সংবাদ সম্মেলন থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদও জানান তিনি।

এ সময় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) মো. মাসুদ হোসেন বলেন, ‘‘আফগানিস্তানে আফিম নিষিদ্ধ হয়েছে, সেটা পুরোপুরি মিয়ানমারে শিফট হয়েছে। যেহেতু বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের বর্ডার আছে। তাই দেশে মাদক ঢোকা সহজ হয়েছে। সেক্ষেত্রে এখানে ঢুকছে। তবে আমরা বসে নেই। ধরা পড়ছে বেশি, আইনের আওতায় আসছে।’’ 

সংবাদ সম্মেলনে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর রাজশাহী বিভাগীয় গোয়েন্দা অফিসের উপপরিচালক মোহা. জিললুর রহমান জানান, উদ্ধারকৃত হেরোইনের দাম প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা।

ঢাকা/কেয়া/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ