ইংল্যান্ডপ্রবাসী হামজা দেওয়ান চৌধুরীর লাল-সবুজের জার্সিতে অভিষেকের পরই বাংলাদেশের ফুটবল উন্মাদনা বেড়েছে বহুগুণ। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা হামজার পথ ধরে বাংলাদেশের হয়ে খেলতে আগ্রহী দেখিয়েছেন সামিত সোম-কিউবার মতো প্রবাসীরা। দেশের ফুটবলে যেন গণজোয়ার বইছে। এর মধ্যে আজ ঘরোয়া ফুটবলের বিগ ম্যাচ। ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে ফুটবলের মহারণই বলা চলে। মঙ্গলবার ফেডারেশন কাপের ফাইনালে মুখোমুখি ঢাকা আবাহনী লিমিটেড এবং বসুন্ধরা কিংস।
২০১৮ সালে কিংস পেশাদার ফুটবলে আসার পর থেকে লিগ ট্রফি জিততে ব্যর্থ হওয়া আবাহনীর জন্য ফেডারেশন কাপের ফাইনালটি পুনর্জন্মই বলা চলে। গত মৌসুমে শিরোপাহীন থাকা দলটির সমর্থকরা এবার আত্মবিশ্বাসী ডাগ আউটে এ কে এম মারুফুল হকের মতো কোচ থাকায়। আর দুঃসময়ের মধ্য দিয়ে যাওয়া কিংসের সামনে সুযোগ নিজেদের রাজত্ব ধরে রাখা। দেশের ফুটবলের দুই হেভিওয়েটের এ লড়াইটি শুরু হবে দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে। ফেড কাপের ট্রফির এ লড়াইটি দেখা যাবে টি স্পোর্টসে।
ময়মনসিংহে গত মৌসুমেও ফেডারেশন কাপের ফাইনাল হয়েছিল। মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে হারিয়ে টুর্নামেন্টে নিজেদের তৃতীয় ট্রফি জিতেছিল কিংস। আজ জিতলে তাদের শোকেসে জমা হবে ফেড কাপের চার নাম্বার ট্রফিটি। ঘরোয়া ফুটবলে এ প্রতিযোগিতা মানেই আবাহনীর দাপট। সর্বোচ্চ ১২ বার চ্যাম্পিয়ন প্রমাণ করে আকাশি-নীল জার্সিধারীদের আধিপত্য। এবার সংখ্যাটা ১৩তে নিয়ে যাওয়ার হাতছানি তাদের সামনে। আবাহনী আত্মবিশ্বাসী এই জন্য যে গত ৮ এপ্রিল প্রথম কোয়ালিফায়ারে টাইব্রেকারে কিংসকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেছিল। সেই ম্যাচে পরাজিত বসুন্ধরাকে শিরোপা মঞ্চে উঠতে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে হারাতে হয়েছে রহমতগঞ্জকে। অতীতের মতো কিংস ব্যালান্স টিম নয়। তাদের খেলাতেও পুরোনো সেই ধার নেই। প্রিমিয়ার লিগে পয়েন্ট টেবিলের তিন নাম্বারে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। কোচ ভ্যালেরিও তিতার অধীনে ছন্নছাড়া বসুন্ধরা। এবারের মৌসুমে যে অবস্থা তাতে লিগ শিরোপা জেতা দলটির জন্য কঠিন।
তাই ফেডারেশন কাপকে পাখির চোখ করেছেন কিংস কোচ তিতা, ‘আগের ম্যাচে আমরা আবাহনীর কাছে হেরেছি। সেটি ভুলে যেতে চাই। যেহেতু আগামীকালের (মঙ্গলবার) ম্যাচটি ফাইনাল, তাই আমরাও সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। আশা করি জিততে পারব।’
পেশাদার ফুটবলে অভিষেক মৌসুমে এই ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আবাহনীর মুখোমুখি হয়েছিল বসুন্ধরা কিংস। দু’দলের ফুটবলারদের মধ্যে মারামারিতে ২০১৮ সালের সেই ফাইনালটি কলংকিত হয়ে আছে। সেদিন থেকে দেশের ফুটবলে কিংস-আবাহনীর দ্বৈরথের সূচনা হয়েছিল। ২০১৮ সালে আবাহনীর কাছে হারার পরের আসরের মধ্যে তিনবারই ট্রফি জিতেছে কিংস। অনুপযোগী মাঠে খেলা সম্ভব নয় বলে ২০২১-২২ মৌসুমে ফেডারেশন কাপ থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে বসুন্ধরা। সেই মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আবাহনী। তার পরের আসরে আবাহনীকে হারিয়ে ট্রফি জিতেছিল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব।
গত মৌসুমে শিরোপা পুনরুদ্ধার করা বসুন্ধরা জিতেছিল ঘরোয়া ট্রেবল। এবার শিরোপা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ ভ্যালেরিও তিতার দলের। কারণ, অন্য পাশে ডাগ আউটে যে আছেন মারুফুল হকের মতো দারুণ মস্তিষ্কের কোচ। এই মৌসুমে লিগ এবং ফেড কাপ– দু’বারই কিংসকে হারিয়েছে আবাহনী।
কক্ষপথে ফেরার জন্য এই ট্রফিটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা ভালো করেই জানা মারুফুলের, ‘ফাইনাল বলে আমরা কোনো চাপ নিচ্ছি না। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ব্যাপারে আমি পুরোপুরি আশাবাদী। যদিও বসুন্ধরা বর্তমান চ্যাম্পিয়ন এবং খুব ভালো একটা টিম, তারপরেও আমি আশাবাদী। মুখোমুখি হওয়া সর্বশেষ দুই ম্যাচে তাদের আমরা হারিয়েছি।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: দ শ র ফ টবল ফ টবল র হয় ছ ল
এছাড়াও পড়ুন:
এসএসসির চতুর্থ পরীক্ষার দিনে বহিষ্কার ৭৮
মাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষার চতুর্থ দিনে ৭৫ পরীক্ষার্থী এবং তিনজন কক্ষ পরিদর্শকসহ মোট ৭৮ জন বহিষ্কার হয়েছেন; আর অনুপস্থিত ছিল ২৮ হাজার ১২০ পরীক্ষার্থী।
এসএসসি ও সমমানের চতুর্থ দিনের পরীক্ষা শেষে সোমবার (২১ এপ্রিল) এই তথ্য দিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি।
এদিন এসএসসিতে গণিত ও দাখিলে বাংলা দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা হয়। এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনালে কোনো পরীক্ষা ছিল না।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দোকার এহসানুল কবিরের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে চতুর্থ দিনে ২৮ হাজার ১২০ জন পরীক্ষার্থীর অনুপস্থিতি এবং ৭৮ জনের বহিষ্কৃত হওয়ার তথ্য দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, সোমবারের পরীক্ষায় ১৬ লাখ ৬২ হাজার ১৪৩ পরীক্ষার্থীর অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও অংশ নেন ১৬ লাখ ৩৪ হাজার ২৩ জন। বাকি ২৮ হাজার ১২০ পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল।
পরীক্ষার ৩ হাজার ১৪টি কেন্দ্রের মধ্যে বিদেশের ৯টি কেন্দ্র ছাড়া ৩ হাজার ৭টি কেন্দ্রের তথ্য দিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি।
গণিত পরীক্ষায় বহিষ্কার অর্ধশত
৯টি সাধারণ ধারার শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২ হাজার ২৯১টি কেন্দ্রে এসএসসির গণিত পরীক্ষায় ৪৭ পরীক্ষার্থী এবং তিনজন পরিদর্শক বহিষ্কৃত হয়েছেন।
বিদেশের ৯টি কেন্দ্র ছাড়া ২ হাজার ২৮২টি কেন্দ্রের তথ্য তুলে ধরে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি বলেছে, ঢাকা বোর্ডে সাতজন, রাজশাহী বোর্ডে দুজন, কুমিল্লা বোর্ডের ১২ জন, যশোর বোর্ডের চারজন, বরিশাল বোর্ডের চারজন, দিনাজপুর বোর্ডের পাঁচজন ও ময়মনসিংহ বোর্ডের ১১ পরীক্ষার্থী বহিষ্কৃত হয়েছে।
ময়মনসিংহ বোর্ডে দুজন পরিদর্শক এবং সিলেট বোর্ডে একজন পরিদর্শককে বহিষ্কার করা হয়েছে সোমবার।
১৩ লাখ ৫৭ হাজার ৩৭৪ পরীক্ষার্থীর এই বিষয়ের পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল, যেখানে অংশ নেয় ১৩ লাখ ৪১ হাজার ৫৬১ জন; আর অনুপস্থিত ছিল ১৫ হাজার ৮১৩ জন।
ঢাকা বোর্ডের ৪৩৮টি কেন্দ্রে ৪ হাজার ৭৬৬ জন, রাজশাহী বোর্ডের ২৬৯টি কেন্দ্রে ২ হাজার ৭ জন, কুমিল্লা বোর্ডের ২৭৩টি কেন্দ্রে ২ হাজার ১০১ জন, যশোর বোর্ডের ২৯৯টি কেন্দ্রে ১ হাজার ৯৭৩ জন, চট্টগ্রাম বোর্ডের ২১৯ টি কেন্দ্রে ১ হাজার ৩৮৪ জন, সিলেট বোর্ডের ১৫৪টি কেন্দ্রে ১ হাজার ১০৭ জন, বরিশাল বোর্ডের ১৯৪টি কেন্দ্রে ১ হাজার ২৭৪ জন, দিনাজপুর বোর্ডের ২৮০টি কেন্দ্রে ১ হাজার ৭০৭ জন এবং ময়মনসিংহ বোর্ডের ১৫৬টি কেন্দ্রে ১ হাজার ১৭১ পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল।
দাখিলের বাংলা পরীক্ষায় বহিষ্কার ২৮
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে দাখিলের বাংলা দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষায় ২৮ জন পরীক্ষার্থীর বহিষ্কৃত হওয়ার তথ্য দিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি।
কমিটির তথ্য বলছে, ৭২৫টি কেন্দ্রে ২ লাখ ৫৫ হাজার ৭০৩ পরীক্ষার্থীর এদিন পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও অংশ নেয় ২ লাখ ৪৫ হাজার ৭৩ জন। ১০ হাজার ৬৩০ জন অনুপস্থিত ছিল।
আরো পড়ুন:
কৃষিবিদদের বৈষম্য নিরসনে বাকৃবি শিক্ষার্থীদের ৬ দাবি
জবি শিক্ষার্থীদের কাঁথা-বালিশ কর্মসূচি ঘোষণা
ঢাকা/হাসান/রাসেল