স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় জিডি করেছেন খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্য
Published: 22nd, April 2025 GMT
স্বামী রেভিলিয়াম রোয়াজা (৩৫) এর বিরুদ্ধে থানায় জিডি করেছেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরা।
রবিবার (২০ এপ্রিল) তিনি খাগড়াছড়ি সদর মডেল থানায় তিনি এ জিডি করেন। জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন, ১৫ বছর পূর্বে তাদের বিয়ে হয়। বর্তমানে কাহাম নামে তাদের এক ছেলে আছে। বিয়ের পর থেকে স্বামী রেভিলিয়াম রোয়াজা তাকে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করে করতো।
বিশেষ করে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে অফিসিয়াল কার্যক্রমের বিষয় নিয়ে সাংসারিক জীবন অতিষ্ট করে তুলেছিলেন রোয়াজা।
তিনি আরো উল্লেখ করেন, তার স্বামী বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে তাকে গালমন্দ করেন ও হত্যার হুমকি দেন। আর স্ত্রীকে হত্যা করতে না পারলে নিজে আত্মহত্যা করে ফাঁসাবেন বলে হুমকি দেন। তাই তিনি খাগড়াছড়ি সদর মডেল থানায় জিডি করেছেন।
এ নিয়ে কথা বলার জন্য রেভিলিয়ার রোয়াজার মুঠোফোনে কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন মৃধা খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরা তার স্বামীর বিরুদ্ধে জিডি করার বিষয়টি স্বীকার করেছেন ।
ঢাকা/রূপায়ন/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই আন্দোলনকে ‘তথাকথিত’ বলায় ঢাবি ছাত্রদল সভাপতির দুঃখপ্রকাশ
জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে ‘তথাকথিত আন্দোলন’ এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা রাজনীতির ‘র’ও বোঝেনা বলায় সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে দুঃখপ্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস।
সোমবার (২১ এপ্রিল) রাজধানীর প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ঢাবির সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে শাখা ছাত্রদল আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এ বক্তব্য দিয়েছিলেন। এরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়।
সোমবার (২১ এপ্রিল) ১১টার দিকে নিজের ফেসবুকে এক বিবৃতি দিয়ে বক্তব্যের দুটি অংশ অসাবধানতাবশত বলেছেন দাবি করে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
আরো পড়ুন:
‘আল্লামা ইকবাল ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা এক সূত্রে গাঁথা’
‘নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব ইসলামবিরোধী’
গণেশ চন্দ্র রায় তার ফেসবুক পোস্টে বলেন, “ছাত্রদল নেতা পারভেজ হত্যার প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধনে আমার দেওয়া বক্তৃতার দুইটি অংশ নিয়ে আজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা লক্ষ্য করছি। আমি বলতে চেয়েছিলাম যে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অনেক সময় রাজনীতির অনেক বিষয় নিয়ে মাথা ঘামায়নি। কেননা ফ্যাসিবাদের আমলে সে পরিবেশ ছিল না। কিন্তু অসাবধানতাবশত বলে ফেলেছি সাধারণ শিক্ষার্থীরা অনেক সময় রাজনীতির ‘র’ নিয়েও মাথা ঘামায় না। আমি আমার বক্তব্যে অসাবধানতাবশত এ বাক্যটি বলেছি।”
তিনি বলেন, “আমি এ বাক্য দ্বারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক সচেতনতা বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক সচেতনতা নিয়ে কখনোই প্রশ্ন তুলিনি। আমি আমার পুরো রাজনৈতিক জীবনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে এরকম মনোভাব কখনো কোথাও পোষণ করিনি। বরং আমি সাধারণ শিক্ষার্থীদের সেন্টিমেন্ট ধারণ করি এবং আজীবন তা ধারণ করার জন্য বদ্ধপরিকর।”
তিনি আরও বলেন, “আমার এই কথায় কেউ মনোক্ষুণ্ন হয়ে থাকলে, তাদের প্রতি আমি আন্তরিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করছি।”
একইসঙ্গে বক্তব্যের আরেকটি অংশে জুলাই-আগস্টের আন্দোলন নিয়ে ‘তথাকথিত’ শব্দটি ব্যবহার করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এই বিষয়ে আমি অত্যন্ত দুঃখিত। আমার আরও বেশি সচেতন হতে হবে। আমার অনাকাঙ্ক্ষিত এ কথাটি সেই আবেগের জায়গায় যদি আঘাত দিয়ে থাকে, আমি সবার কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।”
তিনি আরো বলেন, “আমি আশা রাখবো আমরা সবাই মিলে বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে আরো অধিক পরিমাণে রাজনীতি সচেতন হব। গঠনমূলক সমালোচনা ও তার যুক্তিযুক্ত জবাবের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রাজনীতির সুস্থ চর্চাকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব।”
এদিকে, জুলাই-আগস্টের গৌরবময় ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানকে ‘তথাকথিত আন্দোলন’ বলায় গণেশের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী শুরু হয় সমালোচনা। এ ব্যক্তব্যকে দায়িত্বজ্ঞানহীন, জাতীয় ঐক্য বিরোধী ও অগ্রহণযোগ্য উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাবি শাখা।
সোমবার (২১ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে ঢাবি শাখা শিবির সভাপতি এস এম ফরহাদ ও সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন খান বলেন, জুলাই বিপ্লব ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার দোসর ব্যতীত বাংলাদেশের সব মত ও পথের মানুষকে একত্রিত করেছিল। পিলখানা থেকে শাপলার গণহত্যা, জাতীয় নেতৃবৃন্দের বিচারিক হত্যাকাণ্ড, গুম, খুন এবং অবিচারের ভয়াবহ সংস্কৃতি আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শক্তি এদেশে কায়েম করেছিল। তার বিপরীতে বাংলাদেশের মানুষ তার অধিকার ও বাকস্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের মাধ্যমে।
তারা আরো বলেন, ছাত্রদলের এমন বক্তব্য শহীদদের রক্তকে অপমান, আহত ও পঙ্গুত্ব বরণকারী গাজীদের সঙ্গে প্রতারণা। এটা ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগকে খাটো করে দেখার অপচেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী জনগণ ও ছাত্রসমাজের ন্যায্য অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে একটি স্বতঃস্ফূর্ত ও গণমুখী সংগ্রামকে আওয়ামী বাকশালীদের মতো অপমানসূচক শব্দ ব্যবহার করে হেয় প্রতিপন্ন করার ধৃষ্টতা দেখানো অন্যায্য ও অত্যন্ত নিন্দনীয়। ছাত্রদলের কাছ থেকে আমরা আরো দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করি।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী