মাগুরায় জেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে ঝটিকা মিছিল হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ভোরে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের সামনে মহাসড়কে ১০ থেকে ১৫ জনের একটি দল মিছিল করে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এই প্রথম জেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে কোনো মিছিল হলো।

ওই মিছিলের ৪২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, মিছিলে যাঁরা অংশ নিয়েছেন, তাঁদের সবার মুখে মাস্ক ও হেলমেট। ফলে মিছিলে অংশ নেওয়া কারও পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ব্যানারে লেখা আছে, ‘মিথ্যা বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় অন্যায়ভাবে অবৈধ ট্রাইব্যুনালে বিচারের নামে প্রহসন বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল’।

৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দলের নেতা-কর্মীরা আত্মগোপনে আছেন। শীর্ষ নেতাদের নামে হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা হয়েছে।

জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিকূল পরিবেশে দলের নেতা-কর্মীরা মুঠোফোনে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখছেন। আজকের মিছিলের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিতে কোনো নেতা রাজি হননি। তবে পরিচয় গোপন রাখার স্বার্থে দলের এক নেতা প্রথম আলোকে বলেন, মূলত তৃণমূল নেতা-কর্মীদের উদ্যোগে এই মিছিল হয়েছে। বিষয়টি সিনিয়র নেতারা অবগত ছিলেন।

আরও পড়ুনখুলনায় আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের ঘটনায় তিন থানায় নাশকতার মামলা, গ্রেপ্তার ৩৯২০ ঘণ্টা আগে

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আইয়ুব আলী প্রথম আলোকে বলেন, এ ধরনের কোনো মিছিলের বিষয়ে কোনো তথ্য পুলিশের জানা নেই।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

পৃথিবীর জন্য আশার বাতিঘর হতে চায় বাংলাদেশ: প্রধান উপদেষ্টা

বাংলাদেশকে পৃথিবীর জন্য আশার বাতিঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চান প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

বিশ্ববাসীর উদ্দেশে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমরা পৃথিবীর জন্য আশার এক বাতিঘর হিসেবে দাঁড়াতে চাই এবং আমাদের বন্ধু ও অংশীদারদের আহ্বান জানাই, অন্তর্ভুক্তিমূলক সামাজিক চুক্তি পুনর্লিখনের জন্য, পাশাপাশি সামাজিক ব্যবসা, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং মাইক্রোফাইন্যান্সের ভূমিকা অন্বেষণ করতে, যা প্রান্তিক জনগণের জন্য টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টিতে সহায়ক।’

আজ মঙ্গলবার কাতারের রাজধানী দোহায় ‘আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন ২০২৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ এখন এমন এক অবস্থায় দাঁড়িয়ে, যেখানে একটি নতুন সামাজিক চুক্তি করার সুযোগ এসেছে। এটি এমন এক চুক্তি, যেখানে রাষ্ট্র ও জনগণ, বিশেষ করে যুবসমাজ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থা, ঐতিহ্য, ন্যায়বিচার, মর্যাদা ও সুযোগের ভিত্তিতে একটি ভবিষ্যৎ একত্রে গড়ে তুলবে। যেখানে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও প্রান্তিক জনগণের ক্ষমতায়ন মৌলিক বিষয় হিসেবে বিবেচিত হবে।

প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বক্তব্যে একটি সহনশীল, সমৃদ্ধ ও টেকসই ভবিষ্যতের স্বপ্নের কথা উল্লেখ করেন।

উন্নয়নকে বিপথে ঠেলে দিতে পারে, এখনো এমন নানা হুমকি রয়েছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমরা এমন এক সময় পার করছি, যেখানে বহুপাক্ষিকতা হুমকির মুখে, জলবায়ু পরিবর্তন দ্রুততর হচ্ছে, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে এবং মানবিক সংকট গভীরতর হচ্ছে। নতুন নতুন নীতিমালা, প্রযুক্তি ও শাসনপদ্ধতি আমাদের পৃথিবীকে দ্রুত রূপান্তরিত করছে, যা অতীতের অনেক অনুমানকে অচল করে দিচ্ছে।’

এমন প্রেক্ষাপটে সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এখন আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতার পুনরুজ্জীবনের প্রয়োজন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আসুন আমরা সাহসী হই। একটি এমন পৃথিবী গড়ি, যেখানে কেউ এতটা দরিদ্র না হয় যে সে স্বপ্ন দেখতে না পারে এবং কোনো স্বপ্ন এত বড় না হয় যে তা অর্জন করা যায় না।’

আরও পড়ুনদোহায় পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা৯ ঘণ্টা আগে

ভবিষ্যৎ গড়ার ক্ষেত্রে সবার ভূমিকা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘ভবিষ্যৎ এমন কিছু নয়, যা আমরা উত্তরাধিকার হিসেবে পাই। এটি এমন কিছু, যা আমরা তৈরি করি এবং আমাদের প্রত্যেকেরই এতে একটি করে ভূমিকা রয়েছে।’

অধ্যাপক ইউনূস তাঁর মূল বক্তব্যে সামাজিক ব্যবসা, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরির ওপর গুরুত্ব দেন।

দোহায় আজ শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন। সম্মেলনের এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘আমাদের উত্তরাধিকার গড়ে তোলা: স্থায়িত্ব, উদ্ভাবন ও ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান’।

আরও পড়ুনপ্রধান উপদেষ্টার কাতার সফরে গুরুত্ব পাবে কী কী ২১ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ