পোপের মৃত্যুর কারণ জানাল ভ্যাটিকান
Published: 22nd, April 2025 GMT
বিশ্বের ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস (৮৮) গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে ভ্যাটিক্যানে নিজ বাসভবন মৃত্যুবরণ করেছেন।
তার মৃত্যুর কারণ সোমবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেছে ভ্যাটিকান সিটির হলি সি প্রেস অফিস। ভ্যাটিকান সিটি স্টেটের স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি অধিদপ্তরের পরিচালক ডা.
ভাটিকান নিউজ জানিয়েছে, পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুর কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে স্ট্রোক, এরপর কোমা এবং অপরিবর্তনীয় হৃদযন্ত্রের রক্তনালী ধস।
মেডিকেল রিপোর্ট অনুসারে, পোপের মাল্টিমাইক্রোবিয়াল বিলাটেরাল নিউমোনিয়া, একাধিক ব্রঙ্কাইক্টেস, উচ্চ রক্তচাপ এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিসের কারণে তীব্র শ্বাসযন্ত্রের জটিলতা ছিল।
ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাফিক থ্যানাটোগ্রাফির মাধ্যমে তার মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। ডেথ সার্টিফিকেটে ডা. আর্কাঞ্জেলি লিখেছেন, “আমি ঘোষণা করছি, আমার জ্ঞান এবং বিচারে মৃত্যুর কারণগুলো উপরে বর্ণিত।”
সম্প্রতি টানা পাঁচ সপ্তাহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন পোপ। এরপর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার এক মাসের মাথায় মারা গেলেন এই ধর্মগুরু। সোমবার সকালে ভ্যাটিক্যানে নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন পোপ।
২০১৩ সালের ১৩ মার্চ ভ্যাটিকানের ২৬৬তম পোপ নির্বাচিত হন ফ্রান্সিস। রোমের বিশপ হিসেবে তিনি বিশ্বব্যাপী ক্যাথলিক চার্চ এবং সার্বভৌম ভ্যাটিকান সিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
১৯৩৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেসে পোপ ফ্রান্সিসের জন্ম। ক্যাথলিক পুরোহিত হিসেবে তার অভিষেক হয়েছিল ১৯৬৯ সালে।
তিনি ছিলেন ৭৪১ সালের পর প্রথম নন-ইউরোপিয়ান পোপ। ৭৪১ সালে সিরিয়ান বংশোদ্ভূত তৃতীয় গ্রেগরির মৃত্যুর পর রোমে আর কোনো নন-ইউরোপীয় পোপ আসেননি। পুরো আমেরিকা অঞ্চল এবং দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে নির্বাচিত প্রথম পোপ ছিলেন ফ্রান্সিস। তিনি ক্যাথলিক গির্জায় সংস্কার কখনো বন্ধ করেননি। তারপরও তিনি সকলের কাছে জনপ্রিয় ছিলেন।
পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়সহ গোটা বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মানুষদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বিশ্বনেতারাও।
ঢাকা/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রেনে যৌন হয়রানির ঘটনার বিবরণ দিলেন অভিনেত্রী
বলিউড, মারাঠি এবং তামিল ছবির পাশাপাশি ওয়েব সিরিজেও নিজের অভিনয়ের ছাপ রেখেছেন অভিনেত্রী অদিতি পোহনকার। ‘লাই ভারি’ ছবিতে রিতেশ দেশমুখের বিপরীতে কাজ করার পর দর্শকের নজরে আসেন তিনি। এরপর ‘শি’ এবং ‘আশ্রম’ ওয়েব সিরিজে তার চরিত্র তাকে নিয়ে যায় নতুন উচ্চতায়।
সম্প্রতি বলিউড বাবলকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে নিজের জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেন অদিতি। সাক্ষাৎকারে মুম্বাই লোকাল ট্রেনের যৌন হয়রানির এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন তিনি।
অদিতি বলেন, ‘যদি কেউ সত্যিকারের জীবনের অভিজ্ঞতা নিতে চায়, তাহলে তাকে মুম্বাই লোকালে তুলে দিন। অভিজ্ঞতা ছাড়া তিনি ফিরে আসবেন কিনা, তার কোনো গ্যারান্টি নেই!’
তিনি জানান, ট্রেনে সফর করার সময় এক কিশোর তাঁকে প্রকাশ্যে শ্লীলতাহানি করে। বিষয়টি একা সামলাননি তিনি—সরাসরি পুলিশ ডেকে অভিযুক্তকে ধরে মারধরও করেন। অদিতির কথায়, ‘সে এতটাই নির্লজ্জ ছিল যে পুলিশের সামনেও নিজের কাজ থামায়নি, ভুল স্বীকারও করেনি।’
তিনি জানান, সেই ছেলেটির বয়স ছিল মাত্র ১৩ বা ১৪ বছর, সম্ভবত সপ্তম বা অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। তবুও অদিতির সাহসিকতা দেখে অনেকেই বিস্মিত। তিনি বলেন, ‘ভয় পেও না, সাহস নিয়ে মোকাবিলা করো। সোজাসাপ্টা কথা বলো।’
তিনি বলেন, একাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় তিনি একবার ফার্স্ট ক্লাস মহিলা কামরায় যাত্রা করছিলেন। ওই কামরায় ১৮ বছরের কমবয়সী স্কুল ড্রেস পরা ছেলেদেরও ওঠার অনুমতি ছিল। ট্রেনটি যখন দদার স্টেশন থেকে ছাড়ে, তখন তাঁর পাশে দাঁড়ানো এক স্কুলপড়ুয়া ছেলেটি হঠাৎ করেই তাঁর বুকে হাত দেয়। এ ঘটনার পর আমি সম্পূর্ণভাবে হতবাক হয়ে যাই।’
তিনি বলেন, পরের স্টেশনে নেমে বিষয়টি পুলিশকে জানাই। আশ্চর্যের বিষয়, ছেলেটি তখনও সেই একই জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিল এবং আরেকজন মেয়ের সঙ্গেও একই কাজ করার চেষ্টা করছিল।
পুলিশ তখন মেয়েটিকে জিজ্ঞাসা করে, ‘তোমার কাছে কী প্রমাণ আছে?” উত্তরে সে জানায়, “আমি বলছি, ও এটা করেছে। আমি কেন মিথ্যা বলব?’
“একজন মহিলা কনস্টেবল আমার সাথে এসে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তুমি কি তার সাথে কিছু করেছ? তিনি তা অস্বীকার করলেন। তারপর, যখন আমি তাকে আঘাত করার মতো অঙ্গভঙ্গি করলাম, তখন সে আতঙ্কিত হয়ে বলল, হ্যাঁ, দুঃখিত, দুঃখিত।’
এরপর অন্য কারো সঙ্গে এমন ঘটনা না ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দেন সেই ছেলেটি।