২০১৮ সালের নভেম্বরে টেস্ট ভেন্যু হিসেবে অভিষেক হয় সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের। বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ের টেস্ট দিয়ে পথ চলা শুরু হয় নয়নাভিরাম এই ক্রিকেট মাঠের। এই মাঠে ক্রিকেটের আভিজাত্যের ফরম্যাটে বাংলাদেশের পথ চলার শুরুটা একদমই ভালো হয়নি। জিম্বাবুয়ের কাছে বিব্রতকর হারের কালিমা লেগে আছে দৃষ্টিনন্দন স্টেডিয়ামে।
সাত বছর পর আবার সিলেটে জিম্বাবুয়েকে আতিথেয়তা দিচ্ছে বাংলাদেশ। এবারও বাংলাদেশ নেই স্বস্তিতে। হাতে ৯ উইকেট রেখে দ্বিতীয় ইনিংসে এখনো ২৫ রানে পিছিয়ে স্বাগতিকরা। প্রথম ইনিংসে ১৯১ রানে গুটিয়ে যাওয়া বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে ভালো করতে না পারলে ম্যাচটা হাতছাড়াও করতে পারে। সেই ভয় বাংলাদেশ শিবিরে আছে।
ম্যাচ জয়ের সুযোগ আছে তা বেশ ভালোভাবেই বুঝতে পারছে জিম্বাবুয়ে। সাত বছর পর সেই ‘২০১৮’ ফেরাতে চায় তারাও। দলের ওপেনার ব্রায়ান বেনেট বলেছেন, ‘‘বাংলাদেশে আমরা খুব একটা টেস্ট জিততে পারিনি। এইরকম একটা শক্তিশালী অবস্থানে থাকার পর আমরা বুঝতে পারছি আমাদের সামনে খুব ভালো সুযোগ রয়েছে। আমাদের দলে থাকা পনেরো জনকে এজন্য সমর্থন করতে হবে।’’
আরো পড়ুন:
বৃষ্টিতে সিলেট টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা শুরু হতে বিলম্ব
নাহিদের তৈরি মঞ্চে আলো ছড়ালেন মিরাজ
চার বছর পর বাংলাদেশে টেস্ট খেলতে এসেছে জিম্বাবুয়ে। সব মিলিয়ে ষষ্ঠবারের মতো তারা সফর করছে। এর আগে ২০০১, ২০০৫, ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২০ সালে বাংলাদেশে এসে টেস্ট খেলেছে তারা। সব মিলিয়ে ১০ টেস্টে আফ্রিকার দলটির জয় দুটিতে। এবার জিততে মুখিয়ে আছে দলটি, ‘‘আমরা বিশ্বাস করছি আমাদের সামনে বড় সুযোগ আছে ম্যাচটি জেতার। এখনও আমরা ২০-৩০ রানে এগিয়ে আছি (আসলে ২৫)। আশা করছি তারা (বোলাররা) এসে তীব্র লড়াই করবে। আপনি আসলে কখনোই নিশ্চিত হবে না আপনার সঙ্গে কী হবে। এখনো টেস্টে যথেষ্ট সময় আছে। আমরা আমাদের সেরাটা দেব।’’ – বলেছেন বেনেট।
সিলেট/ইয়াসিন/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আবাহনী-কিংসের শিরোপা লড়াই আজ
ইংল্যান্ডপ্রবাসী হামজা দেওয়ান চৌধুরীর লাল-সবুজের জার্সিতে অভিষেকের পরই বাংলাদেশের ফুটবল উন্মাদনা বেড়েছে বহুগুণ। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা হামজার পথ ধরে বাংলাদেশের হয়ে খেলতে আগ্রহী দেখিয়েছেন সামিত সোম-কিউবার মতো প্রবাসীরা। দেশের ফুটবলে যেন গণজোয়ার বইছে। এর মধ্যে আজ ঘরোয়া ফুটবলের বিগ ম্যাচ। ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে ফুটবলের মহারণই বলা চলে। মঙ্গলবার ফেডারেশন কাপের ফাইনালে মুখোমুখি ঢাকা আবাহনী লিমিটেড এবং বসুন্ধরা কিংস।
২০১৮ সালে কিংস পেশাদার ফুটবলে আসার পর থেকে লিগ ট্রফি জিততে ব্যর্থ হওয়া আবাহনীর জন্য ফেডারেশন কাপের ফাইনালটি পুনর্জন্মই বলা চলে। গত মৌসুমে শিরোপাহীন থাকা দলটির সমর্থকরা এবার আত্মবিশ্বাসী ডাগ আউটে এ কে এম মারুফুল হকের মতো কোচ থাকায়। আর দুঃসময়ের মধ্য দিয়ে যাওয়া কিংসের সামনে সুযোগ নিজেদের রাজত্ব ধরে রাখা। দেশের ফুটবলের দুই হেভিওয়েটের এ লড়াইটি শুরু হবে দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে। ফেড কাপের ট্রফির এ লড়াইটি দেখা যাবে টি স্পোর্টসে।
ময়মনসিংহে গত মৌসুমেও ফেডারেশন কাপের ফাইনাল হয়েছিল। মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে হারিয়ে টুর্নামেন্টে নিজেদের তৃতীয় ট্রফি জিতেছিল কিংস। আজ জিতলে তাদের শোকেসে জমা হবে ফেড কাপের চার নাম্বার ট্রফিটি। ঘরোয়া ফুটবলে এ প্রতিযোগিতা মানেই আবাহনীর দাপট। সর্বোচ্চ ১২ বার চ্যাম্পিয়ন প্রমাণ করে আকাশি-নীল জার্সিধারীদের আধিপত্য। এবার সংখ্যাটা ১৩তে নিয়ে যাওয়ার হাতছানি তাদের সামনে। আবাহনী আত্মবিশ্বাসী এই জন্য যে গত ৮ এপ্রিল প্রথম কোয়ালিফায়ারে টাইব্রেকারে কিংসকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেছিল। সেই ম্যাচে পরাজিত বসুন্ধরাকে শিরোপা মঞ্চে উঠতে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে হারাতে হয়েছে রহমতগঞ্জকে। অতীতের মতো কিংস ব্যালান্স টিম নয়। তাদের খেলাতেও পুরোনো সেই ধার নেই। প্রিমিয়ার লিগে পয়েন্ট টেবিলের তিন নাম্বারে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। কোচ ভ্যালেরিও তিতার অধীনে ছন্নছাড়া বসুন্ধরা। এবারের মৌসুমে যে অবস্থা তাতে লিগ শিরোপা জেতা দলটির জন্য কঠিন।
তাই ফেডারেশন কাপকে পাখির চোখ করেছেন কিংস কোচ তিতা, ‘আগের ম্যাচে আমরা আবাহনীর কাছে হেরেছি। সেটি ভুলে যেতে চাই। যেহেতু আগামীকালের (মঙ্গলবার) ম্যাচটি ফাইনাল, তাই আমরাও সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। আশা করি জিততে পারব।’
পেশাদার ফুটবলে অভিষেক মৌসুমে এই ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আবাহনীর মুখোমুখি হয়েছিল বসুন্ধরা কিংস। দু’দলের ফুটবলারদের মধ্যে মারামারিতে ২০১৮ সালের সেই ফাইনালটি কলংকিত হয়ে আছে। সেদিন থেকে দেশের ফুটবলে কিংস-আবাহনীর দ্বৈরথের সূচনা হয়েছিল। ২০১৮ সালে আবাহনীর কাছে হারার পরের আসরের মধ্যে তিনবারই ট্রফি জিতেছে কিংস। অনুপযোগী মাঠে খেলা সম্ভব নয় বলে ২০২১-২২ মৌসুমে ফেডারেশন কাপ থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে বসুন্ধরা। সেই মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আবাহনী। তার পরের আসরে আবাহনীকে হারিয়ে ট্রফি জিতেছিল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব।
গত মৌসুমে শিরোপা পুনরুদ্ধার করা বসুন্ধরা জিতেছিল ঘরোয়া ট্রেবল। এবার শিরোপা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ ভ্যালেরিও তিতার দলের। কারণ, অন্য পাশে ডাগ আউটে যে আছেন মারুফুল হকের মতো দারুণ মস্তিষ্কের কোচ। এই মৌসুমে লিগ এবং ফেড কাপ– দু’বারই কিংসকে হারিয়েছে আবাহনী।
কক্ষপথে ফেরার জন্য এই ট্রফিটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা ভালো করেই জানা মারুফুলের, ‘ফাইনাল বলে আমরা কোনো চাপ নিচ্ছি না। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ব্যাপারে আমি পুরোপুরি আশাবাদী। যদিও বসুন্ধরা বর্তমান চ্যাম্পিয়ন এবং খুব ভালো একটা টিম, তারপরেও আমি আশাবাদী। মুখোমুখি হওয়া সর্বশেষ দুই ম্যাচে তাদের আমরা হারিয়েছি।’