এবার ‘শুল্ক-বহির্ভূত অপরাধ’ নিয়ে ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি
Published: 22nd, April 2025 GMT
শুল্ক নিয়ে তোলপাড়ের মধ্যেই এবার ‘শুল্ক বহির্ভূত অপরাধ’ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুল্ক বহির্ভূত ৮টি ‘অপরাধ’-এর একটি তালিকা প্রকাশ করেছেন তিনি এবং হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যেসব দেশ এসব অপরাধ করবে তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক চিরতরে নষ্ট হতে পারে।
সোমবার (২১ এপ্রিল) ট্রাম্প তার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে এই হুমকি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
চীন ছাড়া বাকি সব দেশের উপর চাপানো নতুন শুল্কনীতিতে ৯০ দিনের স্থগিতাদেশ ঘোষণার দু’সপ্তাহের মাথায় এবার এমন ঘোষণা দিলেন ট্রাম্প।
আরো পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের স্বার্থবিরোধী কোনো চুক্তি না করার হুঁশিয়ারি
যুদ্ধের গোপন তথ্য পরিবারকে বলে ফের আলোচনায় মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী
৮টি ‘অপরাধের’ তালিকায় রয়েছে- ইচ্ছাকৃতভাবে মুদ্রার হার বদল, এই অভিযোগ তিনি এর আগেও কিছু দেশের বিরুদ্ধে করেছেন। এছাড়াও আছে পণ্যের উপর আমদানি-শুল্কের মতো মূল্যযুক্ত কর (ভ্যাট) চাপানো। পাশাপাশি উৎপাদন মূল্যের কমে রপ্তানি এবং অন্যান্য সরকারি ভর্তুকি, প্রতিরক্ষামূলক কৃষি ব্যবস্থা, জালনোট তৈরি, পাইরেসি এবং শুল্ক এড়াতে দফায় দফায় পণ্য রপ্তানি নিয়েও দেশগুলোকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প। প্রতিরক্ষামূলক প্রযুক্তি নিয়েও সতর্ক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এই প্রসঙ্গে তিনি জাপানের ‘বোলিং বল’ পরীক্ষা, যা ব্যবহার করে জাপান মার্কিন গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলিকে জাপানি গ্রাহকদের কাছে বিক্রির জন্য প্রতারিত করে বলে অভিযোগ উঠে, তা মনে করে দিয়েছেন। ট্রাম্প প্রথম ২০১৮ সালে জাপানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ এনেছিলেন। ট্রাম্প বলেন, ‘ওরা শূন্যে প্রায় ২০ ফুট উপর থেকে একটি বল গাড়ির হুডের উপর ফেলে দেয়। যদি হুডে ফুটো হয়ে যায়, তাহলে গাড়িটি কেনা হয় না।’
গত ২ এপ্রিল বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ৯ এপ্রিল থেকে তা কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। যদিও তার এক দিন আগে শুল্কনীতি সাময়িকভাবে স্থগিত করেন ট্রাম্প। কিন্তু চীনা পণ্যের উপর শুল্কের পরিমাণ ১৪৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৪৫ শতাংশ করতে চলেছে ট্রাম্প প্রশাসন। বাকি সব দেশের উপর শুল্ক আরোপ ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে এবার নতুন করে ‘শুল্ক বহির্ভূত অপরাধ’ নিয়ে সতর্ক করলেন ট্রাম্প।
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র র উপর অপর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটের নিখোঁজ ছয় শ্রমিকের লোকেশন টেকনাফ: পুলিশ
কক্সবাজার জেলায় কাজের সন্ধানে এসে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার এক গ্রামের ছয়জন শ্রমিক নিখোঁজ হয়েছেন। তারা পেশায় সবাই রাজমিস্ত্রী। সাত দিন ধরে নিখোঁজ থাকা শ্রমিকরা সবাই গত ১৫ এপ্রিল কাজের উদ্দেশ্যে জকিগঞ্জ উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রাম থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্য বের হয়েছিলেন।
পুলিশ বলছে, তাদের সবার ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। সর্বশেষ নিখোঁজদের মধ্যে দুজনের মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে তাদের অবস্থান টেকনাফের রাজারছড়া এলাকা পাওয়া যাচ্ছে। এদিকে টেকনাফের রাজারছড়া মানবপাচার ও অপহরণকারীদের মূল আস্তানা। তাই সন্দেহ করা হচ্ছে নিখোঁজদের মানবপাচার ও অপহরণকারী চক্রের ফাঁদে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, কক্সবাজারের কাজের উদ্দেশ্যে বের হওয়া আমার এলাকার ছয় যুবক নিখোঁজ রয়েছেন। তারা এর আগেও চট্রগ্রাম-কক্সবাজারের কাজ করতে গিয়েছিলেন। আমরা পরিবারকে সহায়তা করছি। তাদের লোকেশন টেকনাফের রাজারছড়া গ্রামে পাওয়া যাচ্ছে। তাই সেখানকার থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।
টেকনাফ মডেল ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি। আমরাও তাদের লোকেশন রাজারছড়া এলাকা পাচ্ছি। বিষয়টি খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। কেননা এসব এলাকায় অপহরণ ও মানবপাচার চক্রের আনাগোনা বেশি।
নিখোঁজ ৬ জন হলেন, জকিগঞ্জ উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের ফারুক আহমদের ছেলে মারুফ আহমদ (১৮), আজির উদ্দিনের ছেলে শাহিন আহমদ (২১), মৃত লুকুছ মিয়ার ছেলে রশিদ আহমদ (২০), সফর উদ্দিনের ছেলে খালেদ হাসান (১৯) ও মৃত সরবদির ছেলে আব্দুল জলিল (৫৫) ও মৃত দুরাই মিয়ার ছেলে এমাদ উদ্দিন (২২)।
নিখোঁজ পরিবারের ভাষ্যমতে, গত ১৫ এপ্রিল বিকেলে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের ৫ তরুণসহ ছয় জন কাজের উদ্দেশ্যে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওয়ানা দেন। ১৬ এপ্রিল কক্সবাজার পৌঁছার পর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু এরপর থেকে তাদের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এঘটনায় নিখোঁজদের পরিবারে চরম দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে। নিখোঁজ সবাই রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন।
নিখোঁজ রশিদের ভাই আব্দুল বাছিত বলেন, রশিদ কয়েক বছর থেকে চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজারের এক ঠিকাদারের অধীনে কাজ করতো। বিভিন্ন সময়ে বাড়িতে আসা যাওয়া ছিল। এবার কক্সবাজার যাওয়ার পর থেকে রশিদসহ সঙ্গে থাকা সবার মোবাইল ফোন বন্ধ দেখাচ্ছে। তাদের লোকেশন টেকনাফের রাজারছড়া পাওয়া যাচ্ছে। আমরা খুব চিন্তিত কারণ টেকনাফ অপহরণ এবং মানবপাচারপ্রবণ এলাকা।
জকিগঞ্জ উপজেলার চৌকিদার ফয়সাল আহমেদ বলেন, আমার এলাকার ছয় শ্রমিক প্রায় সময় কক্সবাজারের কাজ করতে যায় বাবুল নামে এক ঠিকাদারের অধীনে। বাবুল ঠিকাদারের কাজ না থাকায় টেকনাফের এক পরিচিত ছেলে সাথে টেকনাফে কাজ করতে বের হন। তখন থেকে তাদের ফোন বন্ধ রয়েছে।
টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য জিয়াউর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জেনেছি। আমিও চেষ্টা করছি তাদের খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য। তাদের লোকেশন যে এলাকায় পাওয়া যাচ্ছে সেটি ভয়ংকর এলাকা। কেননা এর আগেও থ্রি মার্ডার সেখানে (রাজারছড়া) হয়েছিল।