ওজন কমানোর জন্য সব প্রচেষ্টা থাকার পরেও শুধুমাত্র একটি ভুলে ওজন বেড়ে যেতে পারে। পুষ্টিবিদরা বলছেন, ওজন বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো ‘ডাবল কার্বিং’। ফিটনেস প্রশিক্ষক ‘ইম্যানুয়েল ডিকারসন জুনিয়র’ এই বিষয়ে একটি ভিডিও তার ইন্সটাগ্রামে শেয়ার করেছেন। তিনি একই সঙ্গে দুই রকম কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ বন্ধ করার পরামর্শ দিয়েছেন। আরও বলছেন, প্রত্যেকবার খাওয়ার সময় কেবল একটি কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খান। ধরুন বার্গার খাচ্ছেন, তবে তার সঙ্গে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খাবেন না। কারণ বার্গারের পাউরুটিতে কার্ব আছে আবার ফ্রেঞ্চ ফ্রাইজেও থাকছে। এর বদলে বার্গারের সঙ্গে হালকা করে প্যানে ভেজে নেওয়া সবজি খেতে পারেন। কিংবা ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খেলে পাউরুটি দুটি বাদ দিতে পারেন।

অনেকেই ভাতের সঙ্গে আলু ভর্তা বা আলুর তরকারি খেয়ে থাকেন। আবার বিরিয়ানি থেকে ঝালমুড়ি— সবকিছুতেই দুইরকমের কার্বোহাইড্রেট বিদ্যমান। বিরিয়ানিততে-আলু, ঝালমুড়িতে মুড়ি এবং আলু, এমনকি, বাঙালির প্রিয় মাংসের সঙ্গেও আলু থাকা জরুরি। দেখা যায় যে মুখোরচক খাবারগুলো ‘ডাবল কার্বিং’ এর অন্যতম উৎস। যেমন—মোগলাই পরোটার সঙ্গে আলুর তরকারি, আলু-পরোটা, শিঙাড়া; এই সবই ‘ডাবল কার্বিং’ এর উদাহরণ। অনেকে ভাত-রুটি একসঙ্গে খান। খিচুড়ির সঙ্গেও খাওয়া হয় আলুরদম, আলুভাজা অথবা আলুর বড়া। এসব খাবার অধিকমাত্রায় খেলে মেদ ঝরানো কঠিন হতে পারে।

‘ডাবল কার্বিং’ খাবার খেলে শরীরে গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের মাত্রা বেড়ে যায়। যা দ্রুত রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। রক্তে শর্করা হঠাৎ বাড়লে আরও বেশি খাবার গ্রহণের আগ্রহ বাড়তে পারে। এতে ওজন ঝরানো কটিন হয়ে যায়।  

আরো পড়ুন:

যে অভ্যাসটি আপনার জীবনকে আমূল পাল্টে দিতে পারে

নিজের সেরা ভার্সন হতে প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার পরামর্শ জেনে নিন

পুষ্টিবিদরা বলছেন,  প্রতিবেলায় খাবারে একটি কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার রেখে তার সঙ্গে পর্যাপ্ত প্রোটিনজাতীয় খাবার রাখুন। ভাতের সঙ্গে আলু ছাড়া সব্জি অথবা পনির বা বা চিকেন রাখুন। বা লুচি-পরোটার সঙ্গে আলু ভাজির বদলে নিতে পারেন ডাল বা কম শর্করার কাচা কলার তরকারি। 

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড বল ক র ব

এছাড়াও পড়ুন:

ত্রাণ পৌঁছায় না ৫০ দিন, ক্রমেই খারাপ হচ্ছে পরিস্থিতি

গাজায় ইসরায়েলের অবরোধের মুখে ৫০ দিনের বেশি সময় ধরে ত্রাণবাহী কোনো গাড়ি পৌঁছতে পারছে না। এতে উপত্যকায় খাবার, বিশুদ্ধ পানি, ওষুধ ও জ্বালানির সংকট ক্রমেই তীব্রতর হচ্ছে। এ অবস্থায় ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি) জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য সরবরাহ চালুর আহ্বান জানিয়েছে। এ সংকটের মধ্যেও বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এতে উপত্যকায় এক দিনে প্রাণ গেছে আরও ৩৯ জনের।  

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক সংস্থা ওসিএইচএর বরাত দিয়ে গতকাল সোমবার আলজাজিরা জানায়, ইসরায়েলের বিমান হামলায় কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত গাজার পরিস্থিতি ক্রমে আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। পানি সংকট তীব্র হচ্ছে। সেই সঙ্গে পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। ওসিএইচএ বলছে, ইসরায়েলের হামলায় বিধ্বস্ত ভবনে উদ্ধারকাজ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্মীরা। তাদের পর্যাপ্ত উদ্ধার উপকরণ নেই। সেই সঙ্গে শত শত ত্রাণ-উদ্ধারকর্মীরা হত্যার শিকার হওয়ায় লোকবলও কমে গেছে।

গাজা থেকে আলজাজিরার প্রতিনিধি জানান, উপত্যকায় ওষুধের সরবরাহ না থাকায় চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। হাসপাতালগুলো ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। গত ২ মার্চ নতুন করে অবরোধ করার পর গাজায় কোনো ওষুধ প্রবেশ করতে পারেনি। হাজারো ফিলিস্তিনির মৃত্যু হচ্ছে বিনা চিকিৎসায়। এ অবস্থায় ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিএ আবারও যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলছেন, গাজার বেসামরিক মানুষ ‘অকল্পনীয় ভোগান্তি’র মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ইউএনআরডব্লিএ বলছে, উপত্যকার বাসিন্দাদের অধিকাংশই নারী, শিশু ও সাধারণ মানুষ। ফিলিস্তিনের মানুষকে এভাবে সমন্বিত শাস্তি দেওয়া কোনো যুক্তিতেই সঠিক নয়।

আনাদোলু অনলাইন জানায়, ইসরায়েলের হামলায় গাজায় সোমবার এক দিনে আরও ৩৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৬২ জন। এতে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া গণহত্যায় নিহতের সংখ্যা ৫১ হাজার ২৪০ জনে পৌঁছাল। মোট আহতের সংখ্যা ১ লাখ ১৬ হাজার ৯৩১ জন। হাজার হাজার ফিলিস্তিনি এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন। 

ভুল বোঝাবুঝিতে সেবাকর্মী হত্যা, বলছে ইসরায়েল
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী (আইডিএফ) এক তদন্ত প্রতিবেদনে বলেছে, সেনাসদস্যদের ভুল বোঝাবুঝি ও আদেশ অমান্য করার কারণে ওই দিন গাজায় ১৫ জন জরুরি সেবাকর্মী নিহত হন। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে তদন্তে বাধ্য হওয়া ইসরায়েল আরও জানায়, জরুরি কর্মীদের শত্রুপক্ষের লোক মনে করে গুলি ছুড়েছিল ইসরায়েলের সেনারা। সরাসরি হত্যার অভিযোগ তারা অস্বীকার করেছে। ফিলিস্তিনের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (পিআরসিএস) বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, এ ধরনের প্রতিবেদনের কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। আইডিএফ দায় এড়াতে এটা ব্যক্তিগত ভুল হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছে।

ফিলিস্তিনিরা ভয়াবহ অবিচারের মুখোমুখি: মিসরের পোপ  
গাজায় ইসরায়েলের চলমান হামলার নিন্দা জানিয়ে মিসরের কপটিক অর্থডক্স খ্রিষ্টান চার্চের প্রধান পোপ টাওয়াড্রোস দ্বিতীয় এটাকে ‘ফিলিস্তিনিদের ওপর সবচেয়ে ভয়াবহ অন্যায়ের উদাহরণ’ বলে উল্লেখ করেছেন। আনাদোলু অনলাইন জানায়, তিনি বলেছেন, ‘প্রতিদিন ফিলিস্তিনিরা নিজেদের মাতৃভূমির ধ্বংসের মধ্য দিয়ে চরম অবিচারের শিকার হচ্ছেন।’

সিরীয় ভূখণ্ড পরিদর্শনে ইসরাইলের সেনাপ্রধান
অধিকৃত সিরীয় ভূখণ্ড পরিদর্শন করেছেন ইসরায়েলের সেনাপ্রধান ইয়াল জামির। গত রোববার তিনি এ পরিদর্শন করেন। এক প্রতিবেদনে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলেছে, সেনাপ্রধান সেখানে কর্মরত কমান্ডার ও সেনাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং অভিযান পরিকল্পনা অনুমোদন করেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, সিরিয়ার অধিকৃত এলাকায় অবস্থান দীর্ঘস্থায়ী করার ইঙ্গিত এটি। 

অধিকৃত সিরিয়ার বাফার জোন সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে জামির এ অঞ্চলটিকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বলে বর্ণনা করেন। তাঁর দাবি, ‘সিরিয়া ভেঙে পড়েছে’ বলেই ইসরায়েল এটি দখল করেছে। জামির বলেন, ‘এ জন্যই আমরা গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে আছি এবং সম্ভাব্য সর্বোত্তম উপায়ে নিজেদের রক্ষা করার জন্য সামনের সারিতে আছি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ