গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৩৯ ফিলিস্তিনির প্রাণহানি
Published: 22nd, April 2025 GMT
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে কমপক্ষে আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অর্ধশতাধিক। এতে করে অবরুদ্ধ এই উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা প্রায় ৫১ হাজার ২৫০ জনে পৌঁছেছে।
গত ১৮ মার্চ গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে ১ হাজার ৮৫০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। খবর আনাদোলু এজেন্সির।
সোমবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যার ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের গণহত্যামূলক আগ্রাসনে ভূখণ্ডটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫১ হাজার ২৪০ জনে পৌঁছেছে।
মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি আক্রমণে আহত হওয়া আরও ৬২ জনকে গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে সংঘাতের শুরু থেকে আহতের সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ১৬ হাজার ৯৩১ জনে পৌঁছেছে। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে থাকলেও উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেননি।
দীর্ঘ ১৫ মাস সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। তারপর প্রায় দু’মাস গাজায় কম-বেশি শান্তি বজায় ছিল; কিন্তু গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে হামাসের মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে মার্চ মাসের তৃতীয় গত সপ্তাহ থেকে ফের গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮৬৪ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও প্রায় ৪ হাজার ৯০০ জন আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের বর্বর এই হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে দিয়েছে।
জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
এর আগে গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে আগ্রাসনের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও হয়েছে ইসরায়েল।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল অবর দ ধ ইসর য় ল মন ত র য় ইসর ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
সংস্কারের আগে নির্বাচন দিলে শহীদ পরিবার বিচার পাবে না, আশঙ্কা জুলাই মঞ্চের
জুলাই–আগস্ট গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে জাতীয় সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছে জুলাই মঞ্চ। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের আগে নির্বাচন দেওয়া হলে তা চব্বিশের শহীদদের প্রতি অবিচার হবে বলে মনে করছে সংগঠনটি।
আজ শনিবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার সামনে জুলাই মঞ্চের পঞ্চম শহীদি মার্চ থেকে এ দাবি জানানো হয়। গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে জুলাই মঞ্চের অন্যতম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘৫৩ বছর ধরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে যে দুর্বৃত্তায়ন গড়ে উঠেছে, চব্বিশের বিপ্লব তার বিরুদ্ধে বড় একটা বার্তা। অথচ রাষ্ট্রের সেসব সমস্যা রেখে অতীতের মতোই একটা নির্বাচনের জন্য সবাই উঠেপড়ে লেগেছে। আমরা স্পষ্ট বলতে চাই, গণহত্যার বিচার, আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল এবং প্রশাসনের হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় এনে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করার আগে কোনো নির্বাচন দেওয়া হলে তা হবে চব্বিশের শহীদদের প্রতি অবিচার।’
জুলাই মঞ্চের প্রতিনিধি সাকিব হোসেন বলেন, বর্তমান প্রশাসনে গণহত্যায় জড়িত বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা চাকরিতে এখনো বহাল। অধিকাংশকেই এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি। গণহত্যার মামলাগুলোর কার্যক্রম এগোচ্ছে না। শহীদ পরিবারগুলো বিচার নিয়ে উদ্বিগ্ন। তারা মনে করছে, অন্তর্বর্তী সরকার চলে গেলে তারা আর বিচার পাবে না।
সাকিব আরও বলেন, জুলাই মঞ্চ অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে তাঁর নেতৃত্বেই জাতীয় সরকারে রূপ দেওয়ার কাজ করে যাবে। কেননা, জাতীয় সরকার ছাড়া বাংলাদেশের সরকারে গণ–অভ্যুত্থানের চেতনা পরিপূর্ণভাবে প্রতিফলিত হবে না। গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের জন্য জুলাই অভ্যুত্থানের সব অংশীদারকে নিয়ে সমন্বিত জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে।
জুলাই–আগস্ট অভ্যুত্থানের সময় যাত্রাবাড়ীতে নিহত শহীদ শাকিলের মা হেলেনা বেগম বলেন, ‘অধ্যাপক ইউনূস সরকার চলে গেলে আমরা আর বিচার পাব না। এই সরকার থাকতে থাকতেই আমরা আমাদের সন্তান হত্যার বিচার চাই।’
জুলাই মঞ্চ প্রতিনিধি তাসমিয়া রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শহীদ মেহেদী হাসানের মা পারভীন বেগম, আহতদের পরিবারের সদস্য হাসিব বিল্লাহ, মো. ইমরান, খোকন মিয়া, মো. আনিসুল ইসলাম প্রমুখ।