এমপিওভুক্ত পৌনে ৫ লাখ শিক্ষকের বোনাস বাড়ছে
Published: 22nd, April 2025 GMT
আবু জামিল মো. সেলিম। ইংরেজির প্রভাষক। তাঁর বেতন স্কেল ২২ হাজার টাকা। ঈদে বোনাস পান ৫ হাজার ৫০০ টাকা। রাজধানীর শ্যামপুরের এ কে হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষকতা করেন তিনি।
তাঁর মতো লাখো এমপিওভুক্ত শিক্ষক প্রতি ঈদে মূল বেতনের এক-চতুর্থাংশ অর্থ উৎসব ভাতা পান। শিক্ষকরা লজ্জায় স্বল্প বোনাস পাওয়ার কথা কাউকে বলতে পারেন না। তারা জানান, একে তো নামমাত্র বোনাস, তাও পেতে অনেক সময় ঈদ পার হয়ে যায়।
রাজধানীর মিরপুর সিদ্ধান্ত হাই স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী (দপ্তরি) সুলতান আহমেদ। তাঁর বেতন স্কেল ৮ হাজার ৫০০ টাকা। তিনি ঈদে বোনাস পান ৪ হাজার ২০০ টাকা। এই কর্মচারী বলেন, ‘দুর্মূল্যের বাজারে পরিবার নিয়ে এই টাকায় কীভাবে উৎসব করা সম্ভব?’
সারাদেশের পৌনে পাঁচ লাখ এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীর জন্য রয়েছে সুখবর। তাদের উৎসব ভাতা বাড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামী ঈদুল আজহার আগে প্রজ্ঞাপন জারি করা হতে পারে। গতকাল সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য মিলেছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক-১) সাইয়েদ এ জেড মোরশেদ আলী সমকালকে বলেন, উৎসব ভাতা বাড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে কতটুকু বাড়বে, সে বিষয়ে এখনই নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব না।
কবে নাগাদ উৎসব ভাতা বাড়ানোর প্রজ্ঞাপন জারি করা হতে পারে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি চলতি মাসের (এপ্রিল) মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করার। চলতি মাসে না হলে আগামী মাসের প্রথমার্ধে প্রজ্ঞাপন হতে পারে।’
জানা যায়, আগে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা উৎসব ভাতা পেতেন না। ২০০৩ সালের জুলাইয়ে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ড.
শিক্ষকরা জানান, ’৯৬ সাল পর্যন্ত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের মূল বেতনের ৮০ ভাগ সরকার থেকে দেওয়া হতো। আওয়ামী লীগ সরকার তা ৯০ শতাংশে উন্নীত করে। ২০০৫ সালে চারদলীয় জোট সরকার ৯৫ শতাংশ করে। পরের বাজেটে তত্ত্বাবধায়ক সরকার তা শতভাগে নিয়ে যায়। দেখা গেছে, বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন স্কেল ধাপে ধাপে শতভাগে উন্নীত হলেও উৎসব ভাতা বাড়েনি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এ বছরের ৫ মার্চ উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বিদায় নেওয়ার আগে শিক্ষকদের উৎসব, বিনোদন, বাড়ি ভাড়াসহ অন্যান্য ভাতা বাড়ানোর একটি প্রস্তাবে সই করেন। এরপর এ নিয়ে কাজ শুরু করে মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের বাজেট শাখা থেকে জানায়, গত ঈদুল ফিতরে সারাদেশের প্রায় ৩০ হাজারের বেশি এমপিওভুক্ত বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা মিলে প্রায় ২৪০ কোটি টাকার উৎসব ভাতা দেওয়া হয়। এর মধ্যে শুধু স্কুল ও কলেজ ২০ হাজার ৫৬৭টি। এর সঙ্গে মার্চ/২০২৫ মাসের বেতন হিসেবে দেওয়া হয় ৮৮৩ কোটি ৫১ লাখ ৪ হাজার ৭৫০ টাকা।
জানা গেছে, ঈদ বোনাস বর্তমানের চেয়ে অন্তত ২৫ শতাংশ বাড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে শিক্ষকরা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ আর কর্মচারীরা ৭৫ শতাংশ বোনাস পেতে পারেন।
এ বিষয়ে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মো. সেলিম ভুঁইয়া সমকালকে বলেন, দক্ষ ও প্রশিক্ষিত শিক্ষক চাইলে সরকারকে অবশ্যই শতভাগ উৎসব ভাতা দিতে হবে। শিক্ষকদের বৈষম্য কমিয়ে আনতে হবে। এ কারণে আমাদের মূল দাবি, শিক্ষা জাতীয়করণ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ ক ষকদ র উৎসব ভ ত ব সরক র শ ক ষকর র উৎসব মন ত র শতভ গ
এছাড়াও পড়ুন:
প্রথম আলোর উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি উৎসব আগামী ১৫ ও ১৬ মে
আগামী ১৫ ও ১৬ মে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি উৎসব’। এবার নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো হতে যাচ্ছে এই উৎসব, যার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ও তাঁদের অভিভাবকেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি-সংক্রান্ত খবর ও তথ্য জানতে পারবেন। এ ভর্তি উৎসবের আয়োজন করছে প্রথম আলো।
আজ সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে ‘বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি উৎসব’ নিয়ে আয়োজিত প্রস্তুতিমূলক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান প্রথম আলোর ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন ও যুব কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক মুনির হাসান। মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত হয়ে এই উৎসবে অংশগ্রহণের আগ্রহ প্রকাশ করেন। গতবারের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এবারের উৎসবকে আরও কীভাবে ভালো করা যায়, সে বিষয়ে বিভিন্ন রকমের প্রস্তাব ও পরামর্শ দেন তাঁরা। আয়োজকেরা জানিয়েছেন, এসব পরামর্শ নিয়ে এবারের উৎসবকে কীভাবে আরও বেশি ভালো করা যায়, সেই প্রচেষ্টা করা হবে।
আয়োজকেরা জানান, ভর্তি উৎসবসংক্রান্ত তথ্যের জন্য ই–মেইল করা যাবে- ([email protected]) এই ঠিকানায় এবং ফোন করা যাবে (০১৪০৪৪৪০০৫০) এই নম্বরে।
এর আগে ২০২৩ সালের ২৩ ও ২৪ জুলাই রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল ‘জিপিএইচ ইস্পাত-প্রথম আলো বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি উৎসব’। ওই বছর ভর্তি উৎসবে ৩৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি ব্রিটিশ কাউন্সিল, ইএমকে সেন্টারসহ মোট ৪৫টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছিল। তখন শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্টল থেকে ভর্তির তথ্য, বৃত্তির খবর এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে জানতে পারেন। উৎসবে ছিল বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা সংলাপ। এ ছাড়া উৎসবে আসা দর্শনার্থীদের জন্য ছিল র্যাফল ড্রর মাধ্যমে মোটরসাইকেল, ল্যাপটপ, মুঠোফোনসহ বেশ কিছু আকর্ষণীয় পুরস্কার।
গত বছর এই উৎসবের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হলেও পরিবেশ-পরিস্থিতির কারণে শেষ পর্যন্ত সেটি করা যায়নি। এ বছর দ্বিতীয়বারের মতো এই উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে। এবারের উৎসবে অংশগ্রহণ বৃদ্ধির পাশাপাশি আয়োজনের কলেবরও বাড়বে বলে আশা করছেন আয়োজকেরা।
‘বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি উৎসব’ নিয়ে আয়োজিত প্রস্তুতিমূলক মতবিনিময় সভায় এই উৎসবের নানা দিক তুলে ধরেন প্রথম আলোর ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন ও যুব কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক মুনির হাসান। আজ সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে