চট্টগ্রাম নগরের প্রাণকেন্দ্র জামালখানের আসকার দীঘিরপাড় এলাকায় পাহাড় কেটে নির্মাণ করা হচ্ছে বহুতল ভবন। ইতোমধ্যে ছয় তলার কাজ শেষ হয়েছে। নির্মাণযজ্ঞ শুরুর চার বছর পর হুঁশ ফিরেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ)। সোমবার ভবনটি উচ্ছেদে অভিযান শুরু করেছে তারা। অবশ্য সিডিএ কর্মকর্তাদের দাবি, এতদিন আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় অভিযান চালাতে পারেননি তারা। যদিও আদালত নিষেধাজ্ঞা দেন গত বছরের ৩০ এপ্রিল।

স্থানীয়রা জানান, নগরীর আসকার দীঘির পূর্বপাড়ে শহীদ সাইফুদ্দিন সড়কের পাশের পাহাড়টি গ্রিনলেজ ব্যাংক পাহাড় নামে পরিচিত। ১২৭ ফুট উঁচু পাহাড়টিতে নির্মাণাধীন ভবনের জমির ক্রয়সূত্রে মালিক চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী সজল চৌধুরী, খোকন ধর, হিমেল দাশ, সুভাষ নাথ, রনজিত কুমার দে, রূপক সেনগুপ্তসহ ৯২ জন। ২০১৯ সালে জমিটি কেনেন তারা। ২০২২ সালে আবাসন কোম্পানি ‘স্বপ্নীল ফ্যামিলি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর নামে সিডিএর ইমারত নির্মাণ কমিটির কাছ থেকে তিনটি বেজমেন্ট ও ১৪ তলাসহ মোট ১৭ তলা ভবনের অনুমোদন নেওয়া হয়।

স্থানীয়রা জানান, ভবন নির্মাণের আগে টিনের উঁচু ঘেরা দিয়ে পাহাড়টিকে দৃষ্টির আড়ালে নেওয়া হয়। এর পর সেটি ধীরে ধীরে কেটে ফেলা হয়। সিডিএ কর্মকর্তারা জানান, সিডিএ ৩০ কাঠার জমিতে স্থাপনা নির্মাণের ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ জায়গা খালি রাখার শর্ত দিয়ে ভবন নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছিল। পাশাপাশি পাহাড়ের অবয়ব ঠিক রেখে স্থাপনা নির্মাণের শর্ত ছিল অনুমোদনে। সিডিএর এসব শর্ত না মেনে টিনের বেষ্টনী দিয়ে লোকচক্ষুর আড়ালে পাহাড় কেটে ভবন নির্মাণ করেন মালিকরা। পাশাপাশি খালি জায়গা না রেখে পুরো জায়গায় ভবন নির্মাণকাজ শুরু হয়।

সিডিএর অথরাইজড কর্মকর্তা তানজিব হোসেন বলেন, পাহাড় কাটার পাশাপাশি শর্ত না মেনে ভবন নির্মাণ করায় ২০২৩ সালে তাদের নোটিশ দেয় সিডিএ। পরে সিডিএর আদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দন হাইকোর্ট। এই সুযোগে গোষ্ঠীটি ভবন নির্মাণের কাজ চালিয়ে যেতে থাকে। সিডিএ চেম্বার জজ আদালতে আপিল করে। আপিল বিভাগ গত রোববার শুনানি শেষে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার আদেশ আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন। এর পর আমরা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছি।

সরেজমিন দেখা যায়, পাহাড়টি কয়েক ধাপে কাটা হয়েছে। সড়কের পাশে পাহাড়ের সামনের অংশে তিন তলা বেজমেন্টসহ ছয় তলা পর্যন্ত ছাদ ঢালাই হয়েছে। আর পাহাড়ের ওপরের অংশে ভবনের পাইলিংয়ের কাজ চলছে। সিডিএর অভিযানে বুলডোজার দিয়ে নির্মাণাধীন ভবনের সামনে টিনের প্রাচীর ভেঙে দেওয়া হয়। আর ভবনের পশ্চিম পাশের পিলারের একাংশ ভাঙা হয়। 

অভিযানে নেতৃত্ব দেন সিডিএর স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট নজরুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন সিডিএর চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করিম, ইমারত নির্মাণ কমিটির চেয়ারম্যান এ জি এম সেলিম, উপপ্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ আবু ঈসা আনছারী ও অথরাইজড কর্মকর্তা তানজিব হোসেন। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অভ য ন ভবন ন র ম ণ কর মকর ত স ড এর ভবন র

এছাড়াও পড়ুন:

দোহায় পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা 

আর্থনা সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস কাতারের রাজধানী দোহায় পৌঁছেছেন ।

প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটটি সোমবার (২১ এপ্রিল) কাতারের স্থানীয় সময় রাত ৯টা ৪০ মিনিটে দোহায় হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। প্রধান উপদেষ্টাকে বিমান বন্দরে অভ্যর্থনা জানান কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম। 

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘আমাদের উত্তরাধিকার গড়ে তোলা: স্থায়িত্ব, উদ্ভাবন ও ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান’। 

সরকারপ্রধানের চার দিনের এ সফরের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সোমবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আর্থনা সম্মেলনে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি এ সফরে কাতারের সঙ্গে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। ২৪ এপ্রিল মধ্যরাতের পর তার দেশে ফেরার সূচি রয়েছে।

সফরে জ্বালানি উপদেষ্টার যাওয়ার তুলে ধরে প্রেস সচিব বলেন, “কাতারের সঙ্গে আমাদের এলএনজি নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি রয়েছে। ভিসা সংক্রান্ত ইস্যু নিয়ে আলাপ করবেন। এছাড়া অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিয়েও আলাপ হবে। কাতারের উদ্যোক্তাদের নিয়ে ২৩ এপ্রিল বাণিজ্য সম্মেলন হবে, আশা করি সাড়া পাব।”

কাতারে রোহিঙ্গাদের নিয়ে আড়াই ঘণ্টার একটি সম্মেলন হবে, এমন তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে সম্মেলনে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে সম্পৃক্ত অনেকেই অংশ নেবেন। আশা করি ফলপ্রসূ বৈঠক হবে। আগামী সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত রোহিঙ্গা সম্মেলনের প্রাক-প্রস্তুতি বৈঠক এটি।”

কাতার প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হবে কি না জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, “এ পরিকল্পনা আমাদের অনেক দিন ধরেই আছে। এ বিষয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে কথা বলছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী। যাতে করে দেশটির বাজার আমাদের জন্য উন্মুক্ত হয়। আরো শ্রমিক বাংলাদেশ থেকে নেয়, সে বিষয়ে আমরা দেখছি।”

“একইভাবে অন্যান্য যেসব দেশে আমাদের ভাই-বোনেরা কাজ পেতে পারেন তা নিয়ে কাজ করছি।”শ্রমবাজারগুলোতে আরো ভালো বেতনে, বেশি সংখ্যক কর্মী যাতে যেতে পারেন সেটা সরকারের অগ্রাধিকার বলে তুলে ধরেন তিনি।

দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চার নারী ক্রীড়াবিদ সরকার প্রধানের সফরসঙ্গী হয়েছেন। এই চার জন হলেন- ফুটবলার আফিদা খন্দকার ও শাহেদা আখতার রিপা এবং ক্রিকেটার সুমাইয়া আখতার ও শারমিন সুলতানা।

তথ্যসূত্র: বাসস

ঢাকা/ইভা 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ