হামজাদের হারিয়ে লিডসকে নিয়ে প্রিমিয়ার লিগে ফিরল বার্নলি
Published: 21st, April 2025 GMT
সরাসরি প্রিমিয়ার লিগে জায়গা করে নেওয়ার সম্ভাবনা বাঁচাতে বার্নলির বিপক্ষে জিততেই হতো শেফিল্ড ইউনাইটেডকে। তবে হামজা চৌধুরীর দল আজ ইংলিশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে এমন সমীকরণেই ম্যাচে ২-১ গোলে হেরে গেছে বার্নলির কাছে। এই জয়ে লিডস ইউনাইটেডকে সঙ্গী করে আগামী মৌসুমে আবারও প্রিমিয়ার লিগে খেলা নিশ্চিত করেছে বার্নলি।
হামজাদের অবশ্য এখনো সুযোগ আছে প্রিমিয়ার লিগ ওঠার। নকআউট প্লে-অফে দুটি ম্যাচ জিততে হবে শেফিল্ডকে। সেই দুই ম্যাচে হামজাদের প্রতিপক্ষ কারা হবে সেটি এখনো ঠিক হয়নি।
৪৬ ম্যাচের লিগে ৪৪ ম্যাচ শেষে হামজার শেফিল্ডের পয়েন্ট এখন ৮৬। ২ পয়েন্ট জরিমানা না হলে অবশ্য কাগজে-কলমে সরাসরি প্রিমিয়ার লিগে খেলার সম্ভাবনা এখনো টিকে থাকত দলটির। আজ শেফিল্ডকে হারানো বার্নলির পয়েন্ট সমান ম্যাচে ৯৪। লিডসের পয়েন্টও ৯৪। গোল ব্যবধানে শীর্ষে আছে লিডস, বার্নলি দুইয়ে।
শেষ পাঁচ ম্যাচের চারটিতেই হেরে পিছিয়ে পড়া শেফিল্ডের হয়ে আজ শুরু থেকেই খেলেছেন বাংলাদেশের তারকা হামজা। তাঁর দল পিছিয়ে পড়ে ২৮ মিনিটে। টার্ফ মুরে স্বাগতিক দর্শকদের উল্লাসে ভাসিয়ে গোলটি করেন জশ ব্রাউনহিল। জশ কালেনের শট শেফিল্ড গোলরক্ষক মাইকেল কুপার ফিরিয়ে দিলেই শেষ রক্ষা করতে পারেননি। ফিরতি বল ধরে গোল করে ব্রাউনহিল।
৯ মিনিট পরেই জোরালো শটে গোল করে শেফিল্ডকে ম্যাচে ফিরিয়েছিলেন টম ক্যানন। তবে ৪৪ মিনিটে পেনাল্টি গোলে আবার বার্নলিকে এগিয়ে নেন ব্রাউনহিল। বার্নলির হানিবাল মেইব্রিকে পেনাল্টি বক্সে ফেলে দিয়েছিলেন আনেল আহমেদহজিচ।
২৬ এপ্রিল লিগে হামজাদের পরের ম্যাচ স্টোক সিটির বিপক্ষে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গ্রিসের পর্যটন দ্বীপ সান্তোরিনির নিচে ঘুমিয়ে আছে ভয়ংকর আগ্নেয়গিরি
গ্রিসের জনপ্রিয় পর্যটন দ্বীপ সান্তোরিনি। যেখানে সাদা-নীল বাড়ি, সূর্যাস্ত আর নীল সমুদ্রের অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্যের টানে প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক ভিড় করেন। কিন্তু অনেকের স্বপ্নের এই দ্বীপের নিচেই লুকিয়ে আছে এক ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি, যা আবারও ভয়াবহ বিস্ফোরণে ফেটে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।
প্রায় ৩ হাজার ৬০০ বছর আগে আগ্নেয়গিরির বিশাল এক বিস্ফোরণে সান্তোরিনি দ্বীপের বর্তমান আকৃতি তৈরি হয়। সেই বিস্ফোরণে দ্বীপের মাঝখান দেবে গিয়ে একটি বিশাল গর্ত বা কালডেরা সৃষ্টি হয়। এর পর এই অঞ্চলটিতে বড় আকারের ভূমিকম্প আর দেখা যায়নি।
গত বছরের শুরুর দিক থেকে কয়েকবার ভূমিকম্পে দ্বীপটি কেঁপে ওঠায় নতুন করে সামনে এসেছে দ্বীপটির নিচে ঘুমিয়ে থাকা আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাতের সম্ভাবনা ও তার ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এ ধরনের ভূমিকম্প ভূগর্ভের ম্যাগমা চেম্বারে চাপ বাড়ার লক্ষণ হতে পারে।
ব্রিটেনের গবেষণা জাহাজ ‘আরআরএস ডিসকভারি’ থেকে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের একটি দল সান্তোরিনির সমুদ্রতলের আগ্নেয়গিরি ও হাইড্রো-থার্মাল ভেন্ট নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন এখন। চলমান এ গবেষণার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ব্রিটেনের ন্যাশনাল ওসিওগ্রাফি সেন্টারের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইসাবেল ইয়ো। তিনি জানান, এই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য হলো আগ্নেয়গিরির আচরণ বিশ্লেষণ করে কখন বড় বিস্ফোরণের আশঙ্কা তৈরি হতে পারে তা বুঝতে পারা। সান্তোরিনি দ্বীপের ৭ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে সাগরের নিচে থাকা আরেকটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি কলোম্বো নিয়েও পর্যবেক্ষণ করছেন তারা।
চলমান এই গবেষণায় রোবটের মাধ্যমে সাগরের ৩০০ মিটার নিচ থেকে গরম পানি, গ্যাস ও আগ্নেয় পাথরের নমুনা সংগ্রহ করছেন তারা। এ ছাড়া ভূকম্পন এবং ভেতরে থাকা জ্বলন্ত লাভার গতিবিধি বোঝার জন্য ভূতাত্ত্বিক মানচিত্রও তৈরি করছেন গবেষকরা। এই গবেষণা শেষে পাওয়া তথ্য গ্রিস সরকারকে সরবরাহ করা হবে। গ্রিসের সিভিল প্রটেকশন এজেন্সি এই গবেষণার ফল বিশ্লেষণ করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করছে। অধ্যাপক পারাস্কেভি নোমিকো– যিনি নিজে সান্তোরিনির বাসিন্দা এবং সরকারিভাবে জরুরি পরিকল্পনায় যুক্ত– বিবিসিকে বলেন, ‘এই গবেষণা আমাদের জানাবে, কোথায় কতটা ঝুঁকি এবং কোন এলাকায় আগ্নেয়গিরি জেগে উঠলে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে।’
সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ফলে সান্তোরিনির ১১ হাজার বাসিন্দার প্রায় অর্ধেকই দ্বীপ ছেড়ে চলে গেছেন। পর্যটন খাতেও এর প্রভাব পড়েছে। অনেকেই তাদের পূর্বনির্ধারিত ভ্রমণ পরিকল্পনা বাতিল করেছেন। স্থানীয় ফটোগ্রাফার ইভা রেন্ডল বলেন, ‘আমার অনেক ক্লায়েন্ট তাদের শুটিং বাতিল করেছেন। আগে এপ্রিল থেকেই কাজ শুরু হতো; এবার মে পর্যন্ত কেউ আসেনি।’
তবে দ্বীপ ছেড়ে চলে যাওয়া অনেকেই জায়গাটির অতুলনীয় সৌন্দর্যের প্রেমে পড়ে আবার ফিরেও আসছেন। সান্তোরিনিতে বিয়ের ছবি তুলতে আসা এক নবদম্পতি বলেন, ‘আমরা ইচ্ছা করেই আগ্নেয়গিরির পাশে বিয়ে করতে চেয়েছি!’ এখন পর্যন্ত তাৎক্ষণিক বিস্ফোরণের আশঙ্কা না থাকলেও বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এটি ‘শুধু সময়ের ব্যাপার।’ বিবিসি।