যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন কংগ্রেস সদস্য ও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চীনের পাল্টা নিষেধাজ্ঞা
Published: 21st, April 2025 GMT
গত মাসে ছয় চীন এবং হংকংয়ের কর্মকর্তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় এবার যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন কংগ্রেস সদস্য, সরকারি কর্মকর্তা ও বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) প্রধানদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে চীন। হংকং ইস্যুতে ‘জঘন্য আচরণের’ অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সোমবার এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি প্রকাশ করা হয়েছে। খবর- রয়টার্স
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুও জিয়াকুন বলেছেন, হংকং-সংক্রান্ত ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো ভুল পদক্ষেপের বিরুদ্ধে চীন দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে। গত মাসে চীন ও হংকং কর্মকর্তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার এর ‘তীব্র নিন্দা’ জানিয়েছিল চীন।
যুক্তরাষ্ট্রের ওই নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানিয়ে গুও জিয়াকুন বলেন, হংকং বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র যদি আরও কোনো ভুল পদক্ষেপ নেয়, তাহলে চীন আরও পাল্টা ব্যবস্থা নেবে।
গত ৩১ মার্চ চীনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হংকং এবং চীনের মূল ভূখণ্ডের জাতীয় নিরাপত্তা ও উচ্চপর্যায়ের ছয়জন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনের অভিযোগ- হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী ১৯ রাজনীতিবিদ ও রাজনৈতিক কর্মীকে উত্ত্যক্ত করতে জাতীয় নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করেছিল চীন। ২০২৩ সালে পাস হওয়া জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীন ওই ১৯ বিরোধী রাজনীতিবিদ ও অ্যাকটিভিস্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে হংকং। বিতর্কিত আইনটি পাস হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁরা হংকং ছেড়ে বিদেশ চলে যান। তাদের প্রত্যেককে ধরিয়ে দিতে ১ লাখ ২৮ হাজার ৫০০ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করে হংকং পুলিশ।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর ২ এপ্রিল নতুন করে পাল্টা শুল্কের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রাথমিকভাবে চীন থেকে আমদানি করা পণ্যে ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। পরে তা বাড়িয়ে ১৪৫ শতাংশ করা। জবাবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যে ১২৫ শতাংশ শুল্ক ঘোষণা করে চীন।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, চীনে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করায় তারা দেশটির বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগেই বলেছিলেন যে চীন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা শুল্ক প্রত্যাহার না করলে দেশটির ওপর আরও ৫০ শতাংশ আমদানি শুল্ক বসানো হবে। তার ভাষ্য, ‘আমি আগেই সতর্ক করেছিলাম, যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যদি কোনো দেশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করে, তবে তারা সঙ্গে সঙ্গে নতুন ও অনেক বেশি হারে শুল্কের মুখোমুখি হবে।’ এই প্রতিক্রিয়ায় চীন বলেছে, ‘চীনকে চাপ বা হুমকি দিয়ে কখনও লাভ হবে না।’
তবে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও সাফ জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্কের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত লড়বে তারা এবং যুক্তরাষ্ট্রের এই ‘ব্ল্যাকমেইলিং আচরণ’ তারা কখনও মেনে নেবে না। চীনের অবস্থান হলো-– শুল্ক আরোপের এই পরিকল্পনা প্রত্যাহার করা হোক এবং দ্বিপাক্ষিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার মত-পার্থক্যের সমাধান করা হোক। যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তকে একপ্রকার উপেক্ষা করে চীন এখনও তার আগের অবস্থানেই অনড়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র কর মকর ত র শ ল ক আর প পদক ষ প কর ত র র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
কুষ্টিয়ায় মাজারে মাদক বিরোধী অভিযানে বাধা
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় একটি মাজারে মাদক বিরোধী অভিযানে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। পরে প্রশাসনের লোকজন অভিযান না চালিয়ে ফিরে আসেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অভিযানের সময় মাজারের লোকজন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।
রবিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরের দিকে ভেড়ামারার সাতবাড়ীয়া বিত্তিপাড়া এলাকার ঘোড়াশাহ বাবার মাজারে ঘটনাটি ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভেড়ামারা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনায় ঘোড়াশাহ মাজারে যান। এসময় তাদের বাধা দেন মাজারে উপস্থিত ভক্ত-অনুসারীরা। তারা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার হোসেন ও অভিযান টিমের সদস্যদের সঙ্গে আক্রমণাত্মক আচরণ শুরু করেন।
আরো পড়ুন:
গোপালগঞ্জে ছাত্র সমন্বয়কদের উপর হামলার ঘটনায় মামলা
গোপালগঞ্জে গোবিপ্রবির ছাত্র অধিকার পরিষদের ২ নেতাকে মারধর
ভেড়ামারা থানার ওসি শহিদুল ইসলাম বলেন, “মাদক বিরোধী অভিযানে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন এসিল্যান্ডসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। মাজারের লোকজনদের বাধার মুখে ফিরে আসেন তারা। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনোয়ার হোসেন বলেন, “মাদক বিরোধী অভিযানে গেলে মাজারের লোকজন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। যে কারণে অভিযান পরিচালনা করতে না পেরে আমরা ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছি। কারা এই উচ্ছৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে। আপাতত এ বিষয়ে আর কিছু বলা যাচ্ছে না।”
ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম বলেন, “প্রশাসনের লোকজন দেখেই উষ্মা প্রকাশ করেন লাল পোশাক পরিহিত কিছু উচ্ছৃঙ্খল ভক্ত-আশেকান। প্রশাসন কাজ শুরুর আগেই তারা আক্রমণাত্মক আচরণ শুরু করেন। বাধার মুখে শেষ পর্যন্ত প্রশাসনের লোকজন ফিরে আসেন।”
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. তৌফিকুর রহমান বলেন, ““আমিও শুনেছি ঘটনাটি। আমরা রেগুলার মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ