Samakal:
2025-04-21@23:52:35 GMT

চৌর্যশিল্পের প্রতিযোগিতা

Published: 21st, April 2025 GMT

চৌর্যশিল্পের প্রতিযোগিতা

হাসতে হাসতে দম আটকে যাওয়ার উপক্রম হলো। যদিও হাসির কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে মনে হচ্ছে। বলে কী– এটি আমি কী শুনলাম?
‘এক চোর নাকি আরেক চোরের টাকার গল্প শুনে অজ্ঞান হয়ে গেল!’ খোলাসা করে বলেই ফেলি। আমাদের দূরসম্পর্কের এক আত্মীয় চুরিচামারি করে নাকি কোটিপতি বনে যান। এক কথায় আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছেন। তিনি খুবই সেয়ানা। অনেকবার ধরা পড়তে পড়তেও বেঁচে গেছেন বিনা সাজায়। না তিনি রাতের আঁধারের চোর ছিলেন না। বরং দেশের প্রথম সারির ধনাঢ্য চোর। তারা নিজেদের শিল্পী দাবি করেন কিন্তু তাদের শিল্প সম্পর্কে অনেকেরই অজানা ছিল।
কিছুদিন পর দেখি পরিচিত আরেকজন আচমকা আঙুল ফুলে কলাগাছ নয়, একেবারে বটগাছ হয়ে গেছেন। আমাদের দেশে মোটামুটি সরিষার তেল গায়ে মাখা চোরের থেকে এই তেল না মাখা চোরের সংখ্যা বেশি। এরা পারেও বটে। কখন যে কী করে বসে কেউ বলতে পারে না। তাদের ঘিরে শত নানা গল্প তৈরি হয়। মাঝেমধ্যে এ ধনাঢ্য চোরদের নিয়ে দেশে প্রচুর প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। 
এ ‘কলাগাছ’ আর ‘বটগাছ’ দু’জন কিন্তু পূর্বপরিচিত। তারা একজন আরেকজনের নিকটাত্মীয়ও বটে। এ সময় এ দু’জনের মধ্যে টাকা অপচয়ের প্রতিযোগিতা শুরু হয় চৌর্যবৃত্তির দ্বারা উপার্জিত টাকা খরচের প্রতিযোগিতা। এদিক থেকে শুরুতে দ্বিতীয়জন এগিয়ে ছিলেন। দ্বিতীয়জনের খরচ করার দৃশ্য দেখে মানুষের চক্ষু ছানাবড়া। একদিন ঘটে গেল এক আজব ঘটনা! এ দুই ধনাঢ্য চোর কোনো এক কারণে নিজেদের মধ্যে গোপনে মিটিং করছিলেন। মিটিং চলার কিছুক্ষণ পর খবর পাওয়া গেল প্রথম ধনাঢ্য চোর অজ্ঞান এবং দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। 
অন্যরা সবাই দ্বিতীয় ধনাঢ্য চোরের কাছে প্রথম ধনাঢ্য চোরের অজ্ঞান হওয়ার কারণ জানতে চাইল। তিনি উত্তরে বলেন, আমি তো তেমন কিছু করিনি সে আমার শিল্প সম্পর্কে জানতে চাইছে আর আমার কাছে এখন কী পরিমাণ টাকা আছে, শুধু তা বলেছিলাম মাত্র। তাতেই এ অবস্থা। তার চেয়ে আমি যে কত বড় শিল্পী, তা এখন সে বুঝতে পেরেছে। 
সভাপতি সুহৃদ সমাবেশ, ফেনী

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স হ দ সম ব শ

এছাড়াও পড়ুন:

গ্রিসের পর্যটন দ্বীপ সান্তোরিনির নিচে ঘুমিয়ে আছে ভয়ংকর আগ্নেয়গিরি

গ্রিসের জনপ্রিয় পর্যটন দ্বীপ সান্তোরিনি। যেখানে সাদা-নীল বাড়ি, সূর্যাস্ত আর নীল সমুদ্রের অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্যের টানে প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক ভিড় করেন। কিন্তু অনেকের স্বপ্নের এই দ্বীপের নিচেই লুকিয়ে আছে এক ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি, যা আবারও ভয়াবহ বিস্ফোরণে ফেটে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।

প্রায় ৩ হাজার ৬০০ বছর আগে আগ্নেয়গিরির বিশাল এক বিস্ফোরণে সান্তোরিনি দ্বীপের বর্তমান আকৃতি তৈরি হয়। সেই বিস্ফোরণে দ্বীপের মাঝখান দেবে গিয়ে একটি বিশাল গর্ত বা কালডেরা সৃষ্টি হয়। এর পর এই অঞ্চলটিতে বড় আকারের ভূমিকম্প আর দেখা যায়নি।

গত বছরের শুরুর দিক থেকে কয়েকবার ভূমিকম্পে দ্বীপটি কেঁপে ওঠায় নতুন করে সামনে এসেছে দ্বীপটির নিচে ঘুমিয়ে থাকা আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাতের সম্ভাবনা ও তার ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এ ধরনের ভূমিকম্প ভূগর্ভের ম্যাগমা চেম্বারে চাপ বাড়ার লক্ষণ হতে পারে।

ব্রিটেনের গবেষণা জাহাজ ‘আরআরএস ডিসকভারি’ থেকে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের একটি দল সান্তোরিনির সমুদ্রতলের আগ্নেয়গিরি ও হাইড্রো-থার্মাল ভেন্ট নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন এখন। চলমান এ গবেষণার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ব্রিটেনের ন্যাশনাল ওসিওগ্রাফি সেন্টারের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইসাবেল ইয়ো। তিনি জানান, এই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য হলো আগ্নেয়গিরির আচরণ বিশ্লেষণ করে কখন বড় বিস্ফোরণের আশঙ্কা তৈরি হতে পারে তা বুঝতে পারা। সান্তোরিনি দ্বীপের ৭ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে সাগরের নিচে থাকা আরেকটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি কলোম্বো নিয়েও পর্যবেক্ষণ করছেন তারা।

চলমান এই গবেষণায় রোবটের মাধ্যমে সাগরের ৩০০ মিটার নিচ থেকে গরম পানি, গ্যাস ও আগ্নেয় পাথরের নমুনা সংগ্রহ করছেন তারা। এ ছাড়া ভূকম্পন এবং ভেতরে থাকা জ্বলন্ত লাভার গতিবিধি বোঝার জন্য ভূতাত্ত্বিক মানচিত্রও তৈরি করছেন গবেষকরা। এই গবেষণা শেষে পাওয়া তথ্য গ্রিস সরকারকে সরবরাহ করা হবে। গ্রিসের সিভিল প্রটেকশন এজেন্সি এই গবেষণার ফল বিশ্লেষণ করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করছে। অধ্যাপক পারাস্কেভি নোমিকো– যিনি নিজে সান্তোরিনির বাসিন্দা এবং সরকারিভাবে জরুরি পরিকল্পনায় যুক্ত– বিবিসিকে বলেন, ‘এই গবেষণা আমাদের জানাবে, কোথায় কতটা ঝুঁকি এবং কোন এলাকায় আগ্নেয়গিরি জেগে উঠলে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে।’

সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ফলে সান্তোরিনির ১১ হাজার বাসিন্দার প্রায় অর্ধেকই দ্বীপ ছেড়ে চলে গেছেন। পর্যটন খাতেও এর প্রভাব পড়েছে। অনেকেই তাদের পূর্বনির্ধারিত ভ্রমণ পরিকল্পনা বাতিল করেছেন। স্থানীয় ফটোগ্রাফার ইভা রেন্ডল বলেন, ‘আমার অনেক ক্লায়েন্ট তাদের শুটিং বাতিল করেছেন। আগে এপ্রিল থেকেই কাজ শুরু হতো; এবার মে পর্যন্ত কেউ আসেনি।’

তবে দ্বীপ ছেড়ে চলে যাওয়া অনেকেই জায়গাটির অতুলনীয় সৌন্দর্যের প্রেমে পড়ে আবার ফিরেও আসছেন। সান্তোরিনিতে বিয়ের ছবি তুলতে আসা এক নবদম্পতি বলেন, ‘আমরা ইচ্ছা করেই আগ্নেয়গিরির পাশে বিয়ে করতে চেয়েছি!’ এখন পর্যন্ত তাৎক্ষণিক বিস্ফোরণের আশঙ্কা না থাকলেও বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এটি ‘শুধু সময়ের ব্যাপার।’ বিবিসি।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ