রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলায় সুহৃদ সমাবেশের নতুন কমিটি গঠিত হয়েছে। সম্প্রতি কালুখালী সরকারি কলেজ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সভায় রাকিবউদ্দিন খান মামুনকে আহ্বায়ক, রাশিদুল ইসলাম ও আনিসুর রহমানকে যুগ্ম আহ্বায়ক এবং স্বরূপ বিশ্বাসকে সদস্য সচিব করে এ কমিটি গঠিত হয়। কমিটি গঠন সভার সভাপতিত্ব করেন কালুখালী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুল হামিদ খান। এতে বক্তব্য দেন– রাজবাড়ী সুহৃদ উপদেষ্টা ও সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক আহসান হাবীব, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক হারুন অর রশীদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জাহিদ হোসেন, রাজবাড়ী সুহৃদ সভাপতি কমল কান্তি সরকার, রবিউল রবি প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন সমকালের রাজবাড়ী প্রতিনিধি সৌমিত্র শীল চন্দন।
কালুখালী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল হামিদ খান বলেন, ভালো কিছু করার জন্য সংগঠন চর্চার বিকল্প নেই। নিজেদের গঠন করার এক অপূর্ব সুযোগ সাংগঠনিক চর্চা। এতে করে নিজেদের মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলি সৃষ্টি হয়। সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নিজেকে মেলে ধরা যায়। সুহৃদরা কাজগুলোই করে থাকে। নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক রাকিবউদ্দিন খান মামুন কালুখালীতে সুহৃদ সমাবেশের কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, কালুখালী সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে আর পিছিয়ে থাকবে না। সদস্যরা নিজেদের গড়ে তোলার সুযোগ পাবেন।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন– সৌরভ বিশ্বাস, বীথি আক্তার, মারুফা আক্তার, নূপুর আক্তার, জান্নাতুল ইসলাম বিনা, নয়ন মোল্লা, ওহিদুল শেখ, মুরাদ মোল্লা, সিয়াম হোসেন, মাহিম শেখ, অর্ণা সাহা, মৃদুলা আক্তার, টশি বিশ্বাস, সুস্মিতা বিশ্বাস প্রমুখ।
আগামী তিন মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে বলে সভায় জানানো হয়।
সমন্বয়ক সুহৃদ সমাবেশ, রাজবাড়ী
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স হ দ সম ব শ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
গ্রিসের পর্যটন দ্বীপ সান্তোরিনির নিচে ঘুমিয়ে আছে ভয়ংকর আগ্নেয়গিরি
গ্রিসের জনপ্রিয় পর্যটন দ্বীপ সান্তোরিনি। যেখানে সাদা-নীল বাড়ি, সূর্যাস্ত আর নীল সমুদ্রের অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্যের টানে প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক ভিড় করেন। কিন্তু অনেকের স্বপ্নের এই দ্বীপের নিচেই লুকিয়ে আছে এক ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি, যা আবারও ভয়াবহ বিস্ফোরণে ফেটে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।
প্রায় ৩ হাজার ৬০০ বছর আগে আগ্নেয়গিরির বিশাল এক বিস্ফোরণে সান্তোরিনি দ্বীপের বর্তমান আকৃতি তৈরি হয়। সেই বিস্ফোরণে দ্বীপের মাঝখান দেবে গিয়ে একটি বিশাল গর্ত বা কালডেরা সৃষ্টি হয়। এর পর এই অঞ্চলটিতে বড় আকারের ভূমিকম্প আর দেখা যায়নি।
গত বছরের শুরুর দিক থেকে কয়েকবার ভূমিকম্পে দ্বীপটি কেঁপে ওঠায় নতুন করে সামনে এসেছে দ্বীপটির নিচে ঘুমিয়ে থাকা আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাতের সম্ভাবনা ও তার ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এ ধরনের ভূমিকম্প ভূগর্ভের ম্যাগমা চেম্বারে চাপ বাড়ার লক্ষণ হতে পারে।
ব্রিটেনের গবেষণা জাহাজ ‘আরআরএস ডিসকভারি’ থেকে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের একটি দল সান্তোরিনির সমুদ্রতলের আগ্নেয়গিরি ও হাইড্রো-থার্মাল ভেন্ট নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন এখন। চলমান এ গবেষণার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ব্রিটেনের ন্যাশনাল ওসিওগ্রাফি সেন্টারের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইসাবেল ইয়ো। তিনি জানান, এই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য হলো আগ্নেয়গিরির আচরণ বিশ্লেষণ করে কখন বড় বিস্ফোরণের আশঙ্কা তৈরি হতে পারে তা বুঝতে পারা। সান্তোরিনি দ্বীপের ৭ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে সাগরের নিচে থাকা আরেকটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি কলোম্বো নিয়েও পর্যবেক্ষণ করছেন তারা।
চলমান এই গবেষণায় রোবটের মাধ্যমে সাগরের ৩০০ মিটার নিচ থেকে গরম পানি, গ্যাস ও আগ্নেয় পাথরের নমুনা সংগ্রহ করছেন তারা। এ ছাড়া ভূকম্পন এবং ভেতরে থাকা জ্বলন্ত লাভার গতিবিধি বোঝার জন্য ভূতাত্ত্বিক মানচিত্রও তৈরি করছেন গবেষকরা। এই গবেষণা শেষে পাওয়া তথ্য গ্রিস সরকারকে সরবরাহ করা হবে। গ্রিসের সিভিল প্রটেকশন এজেন্সি এই গবেষণার ফল বিশ্লেষণ করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করছে। অধ্যাপক পারাস্কেভি নোমিকো– যিনি নিজে সান্তোরিনির বাসিন্দা এবং সরকারিভাবে জরুরি পরিকল্পনায় যুক্ত– বিবিসিকে বলেন, ‘এই গবেষণা আমাদের জানাবে, কোথায় কতটা ঝুঁকি এবং কোন এলাকায় আগ্নেয়গিরি জেগে উঠলে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে।’
সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ফলে সান্তোরিনির ১১ হাজার বাসিন্দার প্রায় অর্ধেকই দ্বীপ ছেড়ে চলে গেছেন। পর্যটন খাতেও এর প্রভাব পড়েছে। অনেকেই তাদের পূর্বনির্ধারিত ভ্রমণ পরিকল্পনা বাতিল করেছেন। স্থানীয় ফটোগ্রাফার ইভা রেন্ডল বলেন, ‘আমার অনেক ক্লায়েন্ট তাদের শুটিং বাতিল করেছেন। আগে এপ্রিল থেকেই কাজ শুরু হতো; এবার মে পর্যন্ত কেউ আসেনি।’
তবে দ্বীপ ছেড়ে চলে যাওয়া অনেকেই জায়গাটির অতুলনীয় সৌন্দর্যের প্রেমে পড়ে আবার ফিরেও আসছেন। সান্তোরিনিতে বিয়ের ছবি তুলতে আসা এক নবদম্পতি বলেন, ‘আমরা ইচ্ছা করেই আগ্নেয়গিরির পাশে বিয়ে করতে চেয়েছি!’ এখন পর্যন্ত তাৎক্ষণিক বিস্ফোরণের আশঙ্কা না থাকলেও বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এটি ‘শুধু সময়ের ব্যাপার।’ বিবিসি।