দেশের ১০ শতাংশ কিশোরী জরায়ুমুখ ক্যানসারের টিকার বাইরে আছে। এর অন্যতম কারণ, ভয় ও নেতিবাচক প্রচার। ঢাকায় ইংরেজি মাধ্যমে পড়া স্কুলগুলোর ছাত্রীদের মধ্যে টিকা না নেওয়ার হার সবচেয়ে বেশি।

এর মধ্যে ইংরেজি মাধ্যমে পড়া ঢাকার স্কুলগুলোর ছাত্রীদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। টিকা না নেওয়ার অন্যতম কারণ ভয় ও নেতিবাচক প্রচার।

আজ সোমবার রাজধানীতে বাংলাদেশে এইচপিভি ক্যাম্পেইন, সমস্যা ও সমাধানবিষয়ক আলোচনা অনুষ্ঠানে এসব কথা উঠে আসে। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর ডেভেলপিং সায়েন্স অ্যান্ড হেলথ ইনিশিয়েটিভস (আইদেশি) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে সরকারি কর্মকর্তা, বিজ্ঞানী, গবেষক ও বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) কর্মকর্তারা অংশ নেন।

গত বছরের অক্টোবরে স্বাস্থ্য বিভাগ সারা দেশে এইচপিভি (হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস) ক্যাম্পেইন করে। এই ক্যাম্পেইনের সময় ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের এইচপিভি অর্থাৎ জরায়ুমুখ ক্যানসার–প্রতিরোধী টিকা দেওয়া হয়। এই ক্যানসারের জন্য দায়ী হিউম্যান প্যাপিলোমা নামের ভাইরাস।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পাথ বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ কর্মসূচি কর্মকর্তা মহিবুল কাশেম বলেন, ৮২ লাখ কিশোরীকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। টিকা পেয়েছে ৭৪ লাখ ১০ হাজার কিশোরী। অর্থাৎ ওই বয়সী (১০–১৪ বছর) ৯০ শতাংশ কিশোরী টিকা পেয়েছে।

টিকা কারা নেয়নি, কেন নেয়নি তারও জরিপ করা হয়েছে উল্লেখ করে মহিবুল কাশেম বলেন, টিকা না নেওয়ার অন্তত ২০টি কারণ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আছে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ভয়, ইনজেকশনের ভয়, বাড়ি থেকে টিকা কেন্দ্র দূরে, টিকার প্রয়োজন সম্পর্কে অজ্ঞতা, টিকা নিলে গর্ভধারণ হবে না—এমন নেতিবাচক প্রচার, টিকা নেওয়ার কথা কেউ বলেনি, অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে না পারা, রেজিস্ট্রেশনের জন্য জন্মসনদ না থাকা।

টিকা কার্যক্রমের লাইন ডিরেক্টর আবুল ফজল মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন বলেন, মাদ্রাসা ও ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছিল। তবে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানোর চেয়ে ঢাকা শহরের ইংরেজি স্কুলে পড়া শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানো ছিল কঠিন। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীদের নিয়মিত টিকা কর্মসূচির মাধ্যমে টিকা দেওয়া হবে।

আরও পড়ুনজরায়ুমুখ ক্যানসার থেকে বাঁচাবে টিকা ১৬ অক্টোবর ২০২৪

ভাইরাস–বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক সাইফুল্লাহ মুন্সী জরায়ুমুখ ক্যানসার শনাক্তে ‘ভায়া’ পরীক্ষা কার্যকর পদ্ধতি কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, টিকা দেওয়ার গাইডলাইন পরিবর্তন করতে হবে।

অনুষ্ঠানের শুরুর দিকে বিশিষ্ট টিকাবিজ্ঞানী ও আইদেশির প্রতিষ্ঠাতা ফেরদৌসী কাদরি বলেন, এইচপিভি সম্পর্কে অনেকেরই ধারণা নেই। একটি কিশোরী কেন টিকা পেল না, সে কথা কেউ জিজ্ঞাসা করে না। তিনি বলেন, মানুষকে সচেতন করতে, সব কিশোরীকে টিকার আওতায় আনতে সরকারি–বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানকে একযোগে কাজ করতে হবে।

আরও পড়ুনএক ডোজ এইচপিভি টিকা নিন, জরায়ুমুখ ক্যানসার রুখে দিন২৬ অক্টোবর ২০২৪

আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের (এমআইএস) লাইন ডিরেক্টর শাহ আলী আকবর আশরাফী বলেন, এমআইএসের তথ্যভান্ডারে টিকা নেওয়া সব কিশোরীর তথ্য আছে। গবেষকেরা এই তথ্য প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারেন।

আলোচনার শেষ পর্যায়ে স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক সায়েবা আক্তার বলেন, ক্যানসার শনাক্তের পরীক্ষা সহজলভ্য এবং মানুষের সাধ্যের মধ্যে রাখার চেষ্টা করতে হবে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন আইদেশির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রফিউর রহমান। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ক্যানসার–বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আশরাফুন্নেসা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক শেখ সাইফুল হক, আয়োজক প্রতিষ্ঠানের সহকারী বিজ্ঞানী তাসরিনা আজাদ।

আরও পড়ুনবিয়ের আগেই কেন মেয়েদের জরায়ুমুখের ক্যানসারের টিকা নিতে হবে২৪ জানুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত অন ষ ঠ ন ব সরক র এইচপ ভ

এছাড়াও পড়ুন:

চেরির দুটি গাড়ি ও ইএলএফ লুব্রিকেন্টস বাংলাদেশে

চেরির নতুন এসইউভি গাড়ি ‘টিগো ৮ প্রো’ এবং ‘টিগো ক্রস’ বাংলাদেশের বাজারে ছাড়া হয়েছে। একই সঙ্গে ফরাসি ব্র্যান্ড ইএলএফের লুব্রিকেন্টস বাজারে ছাড়া হয়। বাংলাদেশে ইএলএফ লুব্রিকেন্টসে অফিশিয়াল ডিস্ট্রিবিউটর এশিয়ান পেট্রোলিয়াম লিমিটেড এবং চেরি বাংলাদেশের অফিশিয়াল ডিস্ট্রিবিউটর এশিয়ান মোটরস্পেক্স লিমিটেড, আজ র‍্যাডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেনে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ ঘোষণা দিয়েছে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় ও চেরি বাংলাদেশের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর ও ইএলএফ লুব্রিকেন্টসের মুখ্য অপিনিয়ন লিডার তামিম ইকবাল খান উপস্থিত ছিলেন। তামিম ইকবাল বলেন, ‘টিগো ৮ প্রো প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে বেশ উন্নত এবং অত্যন্ত আরামদায়ক, যা আমাকে সত্যিই মুগ্ধ করেছে। পাশাপাশি ইএলএফ লুব্রিকেন্টস বাংলাদেশে আসায় আমি আনন্দিত। কারণ, গাড়ি ও মোটরবাইকের স্বাস্থ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

বিশ্বব্যাপী চতুর্থ স্থানে অবস্থানকারী ইএলএফ হাই পারফরম্যান্স প্রযুক্তি, উদ্ভাবন এবং মোটরস্পোর্ট হেরিটেজের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। ফর্মুলা ওয়ান-এ ১৩৬ বারেরও বেশি জয়লাভ এবং সিএফ মোটরস, অ্যালপাইন রেনল্ট ও রয়্যাল এনফিল্ডের মতো বৈশ্বিক ব্র্যান্ডের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্বের পর ইএলএফ এখন বাংলাদেশের মোটরসাইকেল ও প্যাসেঞ্জার গাড়ির জন্য লুব্রিকেন্ট পারফরম্যান্সের এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপনে প্রস্তুত।

ইএলএফ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেওয়ান সাজেদুর রহমান বলেন, ইএলএফ শুধু একটি পণ্য নয়, বরং একটি ঐতিহ্যের নাম। বাংলাদেশের উষ্ণ আবহাওয়া এবং যানজটে ভরা রাস্তাগুলোর কথা মাথায় রেখে ইএলএফ যানবাহনের দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য ও নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত করবে। এটি গাড়ি, মোটরবাইক, বাস, ট্রাক কিংবা সিএনজি—সব ধরনের যানবাহনের সুরক্ষায় নতুন মাত্রা যোগ করবে।

অনুষ্ঠানে এশিয়ান হোল্ডিংসের পরিচালক কোসুকে ইয়োশিদা বলেন, ‘এ আয়োজনের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশে চেরির কেবল দুটি নতুন মডেল নয়, জীবনধারার এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে যাচ্ছি।’

টিগো ৮ প্রো

চেরির ‘টিগো ৮ প্রো ১.৬টি’ ফ্ল্যাগশিপ মডেলে আছে শক্তিশালী ১৯৫ বিএইচপি টার্বোচার্জড পেট্রল ইঞ্জিন ও প্রিমিয়াম ইন্টেরিওর, যা সবার নজর কেড়েছে। এতে আছে ভেগান চামড়ার আসন, প্যানোরামিক সানরুফ, ৯টি এয়ারব্যাগ, ৩৬০ ডিগ্রি সেফটি সিস্টেম ও জেসচার কন্ট্রোলড টেলগেট, ডুয়েল ১২.৩ ইঞ্চি কার্ভড ডিসপ্লে, ওয়্যারলেস অ্যাপল কারপ্লে ও অ্যান্ড্রয়েড অটো, প্রিমিয়াম সনি সাউন্ড সিস্টেমের মতো উন্নত বিভিন্ন সুবিধা। পার্ল হোয়াইট ও অরোরা গ্রিন রঙে এসইউভি মডেলটি পাওয়া যাবে। এ গাড়িটির দাম ৫৩ লাখ টাকা।

টিগো ক্রস

টিগো ক্রস একটি সুবিধাসমৃদ্ধ এসইউভি। এতে আছে ১৪৫ বিএইচপি ক্ষমতাসম্পন্ন ১.৫ লিটার টার্বোচার্জড ইঞ্জিন, স্টাইলিশ ব্ল্যাক ড্যাশবোর্ড, ডুয়েল-জোন ক্লাইমেট কন্ট্রোল, ১০.২৫ ইঞ্চি টাচস্ক্রিন-এর পাশাপাশি অ্যাডাপটিভ ক্রুজ কন্ট্রোল, ব্লাইন্ড স্পট ডিটেকশন ও ৩৬০ ক্যামেরার মতো উন্নত সেফটি ফিচারস। এ গাড়ির দাম ৩৬ লাখ টাকা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চেরির দুটি গাড়ি ও ইএলএফ লুব্রিকেন্টস বাংলাদেশে