বাংলাদেশের দুই নাগরিককে ভারতে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভুক্তভোগী দুই বাংলাদেশি হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার তুলশীপুর গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। পরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনে বিজিবি।

নির্যাতনের শিকার দুই বাংলাদেশি হলেন- মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের তুলশীপুর গ্রামের আবদুল আলীর ছেলে তোফাজ্জল হোসেন (৫৩) ও একই গ্রামের ফরিদ মিয়ার ছেলে জামাল মিয়া (৫৪)। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও দেখে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করেন স্বজনরা।

রোববার ফেসবুকে স্থানীয়ভাবে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, মাধবপুর উপজেলার তুলশীপুর সীমান্তের ওপারে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সিদাই এলাকায় ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সামনে দুই বাংলাদেশি নাগরিকের ওপর নির্মম নির্যাতন চালাচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দারা। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন তাদের বাঁচাতে চেষ্টা করেন। পরে ওই দুই বাংলাদেশিকে আটক করে সরকারি পিকআপ ভ্যানে তুলে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করেন।

ঘটনা নিশ্চিত করে হবিগঞ্জ ব্যাটালিয়ন ৫৫ বিজিবির অধিনায়ক লে.

কর্নেল তানজিল আহমেদ জানান, এ বিষয়ে বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ওই দুই বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বিএসএফ সদস্যরা হরিণখোলা সীমান্ত ফাঁড়ি বিজিবি সদস্যদের কাছে রোববার বিকেল পৌনে ৬টার দিকে তোফাজ্জল হোসেন ও জামাল মিয়াকে হস্তান্তর করেন। পরে তাদের মাধবপুর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।

মাধবপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কবির হোসেন জানান, ওই দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে মামলা হয়েছে। তাদের সোমবার সকালে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এসএফ ম ধবপ র

এছাড়াও পড়ুন:

গৌরীপুরে পৃথক খুনের ঘটনায় আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ, পুলিশ বলছে দ্রুত গ্রেপ্তার হবে আসামি

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে শনিবার ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে পৃথক খুনের ঘটনায় আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ। ফেসবুকে হুমকি দিয়ে শনিবার মারফত আলী ফকির (২২) নামের এক কলেজছাত্রকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এছাড়া একই দিনে গৌরীপুরের হিম্মতনগর গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ভাই ভাতিজাদের হামলায় আবেদ আলী খা (৭০) নামের এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, মারফত আলী শুক্রবার ভাগ্নির বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার তারুন্দিয়া ইউনিয়নের সাকুয়া মাঝেরচর গ্রামে গিয়েছিলেন। বিয়ে শেষে ভাগ্নিকে এগিয়ে দেওয়ার সময় মুন্সিবাড়ী মাদরাসার সামনে সড়কে একাধিক মোটরসাইকেলে করে আসা একদল যুবক তার মোটরসাইকেল থামিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

স্থানীয়রা আরও জানান, নিহত মারফত আলীর ওপর পূর্বশত্রুতার জেরে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষুব্ধ ছিলেন একই গ্রামের উসমান খানের ছেলে ওয়াহিদুজ্জামান তানভির। তানভিরের নামে থানায় হত্যাচেষ্টাসহ অন্তত ৭টি মামলা রয়েছে।

অপরদিকে উপজেলার হিম্মতনগর গ্রামের নিহত আবেদ আলী খানের স্ত্রী খোদেজা আক্তার জানান, তার স্বামী ভাই ছাবেদ আলী ছাবুর কাছ থেকে ২২ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। সেই জমি নিয়ে বিরোধের ঘটনায় শনিবার দুপুরে হামলা চালায়।

খোদেজা বলেন, ‘আমরা নিজ ঘরে আটকে ছিলাম। হামলাকারীরা আক্রমণ করলে আমার স্বামী প্রথমে পাশের বাড়িতে পরে দৌড়ে অন্য গ্রামে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু তারা আমার স্বামীকে ধরে এনে তাকে হত্যা করে।’

গৌরীপুর উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. হারুন অর রশিদ জানান, হাসপাতালে আসার আগেই আবেদ আলী খান মারা গেছেন। তার শরীরে বড় আঘাতে কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে, বামহাতে একটি কাটা ও ঘাড়ে আচড়ের দাগ রয়েছে।

গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির্জা মাযহারুল আনোয়ার সমকালকে বলেন, কলেজছাত্র খুনের ঘটনায় নিহত ব্যাক্তি ও ঘাতক দুজনের বাড়িই নান্দাইল উপজেলায়। নান্দাইল থানার সঙ্গে আমরা এ ব্যাপারে যোগাযোগ করছি।

অপর ঘটনায় পুলিশ বলছে, হামলার শিকার আলাল উদ্দিনের বাড়িতে তারা গিয়েছেন। অভিযুক্তরা ভয়ে পালিয়ে গেছে। পুলিশ আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করছে। তবে এত ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি।

জোড়া খুনের ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকার সাধারণ মানুষ:
১৮ দিন আগে ফেসবুকে হুমকি দিয়ে কলেজ ছাত্রকে খুন করা হয়েছে। এ নিয়ে নিহতের পরিবার একাধিকবার থানায় অভিযোগ করলেও ব্যবস্থা নেয়নে পুলিশ। অপরদিকে জমি সংক্রান্ত বিষয়ে ভাই এবং ভাতিজারা মিলে চাচাকে হত্যার বিষয়েও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ মানুষ।

গৌরীপুরের সিনিয়র সাংবাদিক মো. সাজ্জাদুল ইসলাম বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশকে আরও অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। গত ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে গৌরীপুরে দুটি খুনের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। বিষয়টি নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। এ ধরনের অপরাধ নিয়ে আগে থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়তে পারে।’ এ ব্যাপারে তিনি পুলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনকেও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।

গৌরীপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেবাশীষ কর্মকার সমকালকে বলেন, ফেসবুকে হুমকি দিয়ে কলেজছাত্র খুনের ঘটনাটি সত্যিই উদ্বেগজনক। এ ঘটনায় আগে থেকে সাইবার মনিটরিং টিম সচেতন থাকলে এমনটি নাও হতে পারতো। আর জমি সংক্রান্ত বিষয়ে বৃদ্ধ খুনের বিষয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। দুটি ঘটনাকেই আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। পুলিশ দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার করবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বরিশালে র‌্যাবের মাদকবিরোধী অভিযানে হামলা, গুলিতে তরুণ নিহত
  • ‘মাধবপুরের ২ কৃষককে ভারতে নির্যাতন’, ফেরত এনেছে বিজিবি
  • শরীয়তপুরে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থান, ১৪৪ ধারা জারি
  • সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মেডিকেল শিক্ষার্থীদের, সরিয়ে দিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
  • গৌরীপুরে পৃথক খুনের ঘটনায় আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ, পুলিশ বলছে দ্রুত গ্রেপ্তার হবে আসামি
  • বিজিবির বাধায় মাটি কাটা বন্ধ করল বিএসএফ
  • হাতীবান্ধা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হাসিবুলের বাড়িতে জামায়াতের আমির, চাইলেন বিচার
  • আমরা ভালো থাকলে ভারতও ভালো থাকবে: জামায়াত আমির
  • পাটগ্রাম সীমান্ত থেকে বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ