সব মিলিয়ে ১২ ইনিংস। দেশের মাটিতে সংখ্যাটা আরো বেশি, ১৪ ইনিংস। লম্বা অপেক্ষার পর মেহেদী হাসান মিরাজ পেলেন ৫ উইকেট। এর মাঝে যে ভালো বোলিং করেননি বিষয়টি তেমন নয়। তবে মাইলফলক ছোঁয়া হয়নি তার।
সোমবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫ উইকেটে নিয়ে ক্যারিয়ারে ১১তম বারের মতো ফাইফারের স্বাদ পেলেন। তার এই বোলিং কীর্তিতে বাংলাদেশ দারুণভাবে ম্যাচে ফিরেছে। প্রথম দিন প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৯১ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। আজ বোলারদের নৈপুণ্যে জিম্বাবুয়েকে ২৭৩ রানে আটকে রাখে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিন শেষ পর্যন্ত ২৫ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ।
দিনের সেরা তারকা দলের প্রতিনিধি হয়ে এসেছিলেন সংবাদ সম্মেলনে সেখানে নিজের বোলিং নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন মিরাজ। গতকাল প্রথম সেশনে ৩ ওভার হাত ঘুরিয়েছিলেন। সাফল্য মেলেনি। বরং বোলিং হয়েছিল আঁটসাঁট। আজ সকালের সেশনে ৪ ওভার হাত ঘুরিয়েও মেলেনি সাফল্য। দিয়েছিলেন ১৬ রান। হজম করেছেন ছক্কা।
দ্বিতীয় সেশনে মিরাজ খুঁজে পান নিজেকে। আগের ৭ ওভারে জোরের ওপর বোলিং করেছিলেন। এবার মিরাজ বলের গতি কমিয়ে দেন। তাতেই মেলে সাফল্য।ড্রেসিংরুমে কোচদের থেকে পরামর্শ পেয়ে মিরাজ বোলিংয়ে পরিবর্তন আনেন। দ্বিতীয় সেশনে তার প্রথম শিকার শন উইলিয়ামস। তার হাওয়ায় ভাসানো বল এগিয়ে এসে উড়াতে গিয়ে লং অনে ক্যাচ দেন। এরপর মিরাজ শেষ সেশনে নেন লেজের ৪ উইকেট।
নিজের বোলিং নিয়ে মিরাজ বলেছেন, ‘‘আমরা খেলার ভেতরে থাকি… আমরা অনেক সময় বুঝতে পারি যে আমাদের… এই উইকেটে কীভাবে বল করতে হয়। কোচদের একটা ম্যাসেজ ছিল যে এই উইকেটে পেসটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কিভাবে… পেসটা কমিয়ে নিতে পারি। তারা আমাকে সেভাবেই গাইড করেছে। এখানে আমাদের ভিডিও ফুটেজ আছে… আমি প্রথম স্পেলে যখন বল করছিলাম আমার গতিটা বেশি ছিল। এই স্পিডে বল করলে তেমন কঠিন হবে না ব্যাটসম্যানের জন্য। আপনি আসলে গেলেই উইকেট পাবেন না। ব্যাটসম্যান যেন কষ্ট করে খেলে বা রান না বের করতে পারে তখনই একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়… আউট হবে। সো… ঐ কাজটা যেন করাতে পারি ঐ মানসিকতা ছিল, সেজন্য হয়তো উইকেটগুলো পেয়েছি।’’
নিজের ৫ উইকেট নিয়ে মিরাজের উচ্ছ্বাস ফুটে উঠল কথায়, ‘‘অবশ্যই উইকেট পেলে তো সবারই ভালো লাগে। চেষ্টা ছিল ঠিক জায়গা বল করা। দলকে ভালো সাপোর্ট করা। আর… ৫ উইকেট পেতে হলে তো অবশ্যই ভালো জায়গায় বল করতে হবে। একই সঙ্গে ভাগ্যও থাকতে হয়।’’
টেস্ট ক্রিকেটে মিরাজ সবশেষ ৫ উইকেট পেয়েছিলেন পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে। বিদেশের মাটিতে নিজের নাম অনার্স বোর্ডে তুলেছিলেন। দেশে তেমন কিছু নেই। অনার্স বোর্ড বরাবরই ক্রিকেটারদের সাফল্য মনে করিয়ে দেয়। দেশে অনার্স বোর্ড থাকলে ভালো অনুভূতির সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন মিরাজ, ‘‘প্রত্যেকটা মানুষের অর্জন একটা কিন্তু ভালো লাগার বিষয়। অর্জন কিন্তু…একদিনে আসে না। কষ্ট করতে হয়, তারপর অর্জনটা আসে। রাওয়ালপিন্ডিতে ওখানে… ৫ উইকেট পেয়েছিলাম। নাম দেখেছি, ভালো লেগেছে, যখন চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে গেছি। বাংলাদেশে… আমার কাছে যেটা মনে হয় যে এই সংস্কৃতিটা চালু করা উচিৎ। আর যারা এখন বর্তমানে আছেন, আশা করি তারা এটা নিয়ে চিন্তা করবে।’’
২০১৬ সালে টেস্ট অঙ্গনে পা রাখা মিরাজ ৫২ টেস্টে ৯০ ইনিংসে ১৯৫ উইকেট পেয়েছেন। দুইশ উইকেট থেকে ৫ উইকেট থেকে দূরে। সাকিব ও তাইজুলের পর বাংলাদেশের তৃতীয় বোলার হিসেবে এই কীর্তি ছোঁয়ার হাতছানি তার।
সিলেট/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ৫ উইক ট প ই উইক ট স ফল য প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
বেরোবি শিক্ষকের কুশপুত্তলিকায় জুতাপেটা
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়ন ও ফলাফল জালিয়াতির অভিযোগে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. তানজিউল ইসলাম জীবন এবং পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. রশীদুল ইসলামের কুশপুত্তলিকায় জুতাপেটা করেছে শিক্ষার্থীরা।
সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষ্ণচূড়া সড়কে এসব শিক্ষকদের শাস্তির দাবিতে এই প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষ্ণচূড়া সড়কে অভিযুক্ত শিক্ষকদের কুশপুত্তলিকা তৈরি করে তাতে জুতার মালা পরানো হয়েছে। তাতে লেখা হয়েছে- আমি নারীলোভী নিপীড়নকারী শিক্ষক। শিক্ষার্থীরা তাতে জুতাপেটা করছে।
কর্মসূচিতে বেরোবি শিক্ষার্থী রহমত আলী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও রেজাল্ট টেম্পারিংসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। তবে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমরা এসব নিপীড়নের চর্চা বন্ধ করতে বিশেষ সেল গঠনের দাবি জানাচ্ছি।
আশিকুর রহমান বলেন, আমাদের দাবি একটাই অপকর্মের সাথে যে সকল শিক্ষক জড়িত তদন্ত সাপেক্ষে তাদের যেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। ভবিষ্যতে কোনো শিক্ষক এ ধরনের ন্যাক্কারজনক কাজ করতে সাহস না পায়।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজিউল ইসলাম ও পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক রশিদুল ইসলামের স্ক্রিনশট, অডিও রেকর্ড ফাঁস হওয়ার পর যৌন হয়রানির বিষয়টি সামনে এসেছে।