স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করেন না দেশের ৮২.৬% নারী
Published: 21st, April 2025 GMT
মাসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যাপারে এখনো অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশের নারীরা। মাসিকের সময় স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করেন না দেশের ৮২ দশমিক ৬ শতাংশ কিশোরী ও নারী। তাঁদের অনেকেই এর সঠিক ব্যবহারবিধি সম্পর্কে সচেতন নন। এতে মাসিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি নারীদের প্রজননস্বাস্থ্যও রয়েছে হুমকির মুখে, যা ভবিষ্যতে ভয়ানক হয়ে উঠতে পারে।
স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্র্যান্ড সেনোরা এবং প্রসূতি ও স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞদের সংগঠন অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের (ওজিএসবি) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘নিরাপদ মাসিক স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানটি আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন স্কয়ার টয়লেট্রিজের বিপণন বিভাগের প্রধান জেসমিন জামান। তিনি বিভিন্ন জরিপ ও গবেষণার বরাত দিয়ে বলেন, দেশে মাত্র ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ নারী মাসিকের সময় স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করেন। সে হিসাবে ১০০ জনে প্রায় ৮৩ জন নারীই স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করেন না, যা অত্যন্ত ভয়ানক।
জেসমিন জামান বলেন, মাসিকের সময় তুলা, ময়লা কাপড়, এমনকি রাসায়নিক সুগন্ধিযুক্ত নানা স্যানিটারি পণ্য ব্যবহারের কারণে ৯৭ শতাংশ নারী জীবনের কোনো না কোনো সময় জীবাণু সংক্রমিত হন। অনেকের ক্যানসারও হয়।
জেসমিন জামান আরও বলেন, মাসিকের সময় গড়ে তিন দিন স্কুলে অনুপস্থিত থাকে প্রায় ৪০ শতাংশ স্কুলছাত্রী। পোশাকশিল্প খাতে কর্মরত প্রায় ৬০ লাখ নারীকর্মী মাসিকের কারণে গড়ে ছয় দিন কাজে অনুপস্থিত থাকেন।
মাসিকের কারণে এসব প্রতিবন্ধকতা দূর করতে স্যানিটারি ন্যাপকিনের ব্যবহারকে আরও ত্বরান্বিত করা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, উচ্চমূল্যের কারণে অনেক নারী স্যানিটারি ন্যাপকিন কিনতে পারেন না। তাই নারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার অন্যতম মৌলিক এই উপকরণটির দাম কমানো প্রয়োজন।
র্যাফেল ড্র এবং মধ্যাহ্নভোজের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপনী টানা হয়.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম স ক র সময় অন ষ ঠ ন
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য হটলাইন চালুর ঘোষণা পুলিশের
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জরুরি যোগাযোগের জন্য হটলাইন সেবা চালুর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। সোমবার পুলিশ সদর দপ্তরে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুনের উপস্থিতিতে এক অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। হটলাইন নম্বরে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে নিরাপত্তাজনিত যেকোনো সমস্যা তাৎক্ষণিকভাবে জানানো এবং দ্রুত সহায়তা পাওয়ার সুযোগ তৈরি হলো।
সম্প্রতি গাজায় হামলা নিয়ে বিক্ষোভের সময় বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ছয়টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন আইজিপি ও বিডা চেয়ারম্যান। বৈঠকে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ছিল– নেসলে বাংলাদেশ, কোকা-কোলা বাংলাদেশ বেভারেজেস, ইউনিলিভার বাংলাদেশ, বাটা সু কোম্পানি বাংলাদেশ, রেকিট বেনকিজার বাংলাদেশ, পেপসিকো ও জুবিল্যান্ট ফুড ওয়ার্কস বাংলাদেশ।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ৭ ও ৮ এপ্রিল দেশের বিভিন্ন শহরে এসব কোম্পানির কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হয়। এ ঘটনায় অন্তত ১৪০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং প্রায় এক ডজন মামলা হয়েছে।
বৈঠকে বিডা চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বলেন, ‘আইজিপি, জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা ও বিডার কর্মকর্তাদের একসঙ্গে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বসা শুধু সময়োপযোগী নয়, নজিরবিহীন। এটি কেবল একটি সৌজন্য সাক্ষাৎ নয়। এটি এক ধরনের বার্তা যে বাংলাদেশ বিনিয়োগকারীদের পাশে আছে, বিশেষ করে যখন চ্যালেঞ্জ আসে।’
তিনি বলেন, এই প্রতিষ্ঠানগুলো হাজার হাজার কর্মজীবী ও তাদের পরিবারের জীবিকার উৎস। প্রতিবাদের অধিকার আছে, কিন্তু যে প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মসংস্থান, স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করে, সেগুলো ধ্বংস করা কোনো সমাধান নয়। পুলিশের তাৎক্ষণিক সাড়া ও দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেন বিডা চেয়ারম্যান।
প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরা ভাঙচুর, ক্ষয়ক্ষতি ও কার্যক্রমে বিঘ্ন নিয়ে সরাসরি অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। আইজিপি বাহারুল আলম বিনিয়োগকারীদের পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, ‘আমরা কেবল প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য এখানে আসিনি, বরং আস্থা গড়ে তুলতে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যেন না ঘটে, তা নিশ্চিত করতেই এসেছি।’
এ আলোচনার ফলে বিডা, পুলিশ ও ব্যবসায়িক সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে একটি প্রতিরোধ পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নতুন নিরাপত্তা প্রটোকল, দ্রুত সাড়া দেওয়া ইউনিট এবং সংকটকালে উন্নত যোগাযোগ চ্যানেল।