দিনাজপুরের বীরগঞ্জে বিয়ের ১৭ মাসের মাথায় স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের ঘটনায় ১০ কেজি দুধ দিয়ে গোসল করেছেন সোহাগ ইসলাম (২১) নামের এক যুবক। গতকাল রোববার বিকেলে উপজেলার স্লুইসগেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। 

সোহাগ ইসলাম ওই এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে। 

পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ১৭ মাস আগে উপজেলার মাকড়াই গ্রামের এক তরুণীর সঙ্গে পারিবারিকভাবে সোহাগ ইসলামের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ ও কলহ লেগেই থাকতো। এ নিয়ে একাধিকবার শালিস-বৈঠকও হয়েছে, কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। বিষয়টি আদালত পর্যন্তও গড়ায়। অবশেষে রোববার (২০ এপ্রিল) দুই পরিবারের সমঝোতায় আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এ ঘটনার পর বিকেলে বাড়িতে এসে নিজেকে মুক্ত ঘোষণা দিয়ে ১০ লিটার দুধ ও দূর্বা ঘাস দিয়ে গোসল করেন সোহাগ। গোসলের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিলে তা ভাইরাল হয়। 

সোহাগ ইসলাম বলেন, ‘দাম্পত্য কলহ নিয়ে আমরা বৈঠক করেছি, আলোচনা করেছি। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। পরিস্থিতি খারাপের দিকে চলে যাওয়ায় আমরা বিবাহ বিচ্ছেদের মত কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন নিজেকে মুক্ত মনে করছি। এবং পাপ মোচন করতে দুধ-দূর্বা দিয়ে গোসল করেছি।’ জানতে চাইলে এখন আর বিয়ে নয়, আগে উপার্জন ও প্রতিষ্ঠিত হওয়া লক্ষ্য জানান তিনি। 

সোহাগ ইসলামের বাবা আব্দুর রহিম জানান, তার এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। ১৭ মাস আগে তার বিয়ে দেওয়া হয়। তবে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় উভয় পরিবারের সিদ্ধান্তে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স হ গ ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য হটলাইন চালুর ঘোষণা পুলিশের

বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জরুরি যোগাযোগের জন্য হটলাইন সেবা চালুর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। সোমবার পুলিশ সদর দপ্তরে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুনের উপস্থিতিতে এক অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। হটলাইন নম্বরে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে নিরাপত্তাজনিত যেকোনো সমস্যা তাৎক্ষণিকভাবে জানানো এবং দ্রুত সহায়তা পাওয়ার সুযোগ তৈরি হলো।

সম্প্রতি গাজায় হামলা নিয়ে বিক্ষোভের সময় বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ছয়টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন আইজিপি ও বিডা চেয়ারম্যান। বৈঠকে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ছিল– নেসলে বাংলাদেশ, কোকা-কোলা বাংলাদেশ বেভারেজেস, ইউনিলিভার বাংলাদেশ, বাটা সু কোম্পানি বাংলাদেশ, রেকিট বেনকিজার বাংলাদেশ, পেপসিকো ও জুবিল্যান্ট ফুড ওয়ার্কস বাংলাদেশ।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ৭ ও ৮ এপ্রিল দেশের বিভিন্ন শহরে এসব কোম্পানির কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হয়। এ ঘটনায় অন্তত ১৪০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং প্রায় এক ডজন মামলা হয়েছে।

বৈঠকে বিডা চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বলেন, ‘আইজিপি, জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা ও বিডার কর্মকর্তাদের একসঙ্গে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বসা শুধু সময়োপযোগী নয়, নজিরবিহীন। এটি কেবল একটি সৌজন্য সাক্ষাৎ নয়। এটি এক ধরনের বার্তা যে বাংলাদেশ বিনিয়োগকারীদের পাশে আছে, বিশেষ করে যখন চ্যালেঞ্জ আসে।’

তিনি বলেন, এই প্রতিষ্ঠানগুলো হাজার হাজার কর্মজীবী ও তাদের পরিবারের জীবিকার উৎস। প্রতিবাদের অধিকার আছে, কিন্তু যে প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মসংস্থান, স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করে, সেগুলো ধ্বংস করা কোনো সমাধান নয়। পুলিশের তাৎক্ষণিক সাড়া ও দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেন বিডা চেয়ারম্যান।

প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরা ভাঙচুর, ক্ষয়ক্ষতি ও কার্যক্রমে বিঘ্ন নিয়ে সরাসরি অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। আইজিপি বাহারুল আলম বিনিয়োগকারীদের পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, ‘আমরা কেবল প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য এখানে আসিনি, বরং আস্থা গড়ে তুলতে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যেন না ঘটে, তা নিশ্চিত করতেই এসেছি।’

এ আলোচনার ফলে বিডা, পুলিশ ও ব্যবসায়িক সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে একটি প্রতিরোধ পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নতুন নিরাপত্তা প্রটোকল, দ্রুত সাড়া দেওয়া ইউনিট এবং সংকটকালে উন্নত যোগাযোগ চ্যানেল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ