চট্টগ্রামের আনোয়ারায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধ ও ব্লক নির্মাণের ঠিকাদারকে বালু-পাথর সাপ্লাই দেওয়া নিয়ে বিএনপির দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ৩ পুলিশ সদস্যসহ বিএনপির প্রায় ১৫ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।

গতকাল রোববার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে এ সংঘর্ষ হয়। এ দিকে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সুজন নামের এক যুবককে দেশীয় অস্ত্রসহ আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে বিএনপির একটি পক্ষ। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আনোয়ারার উপকূলের পারকি সমুদ্র সৈকত এলাকায় ১৯৬ কোটি টাকায় ২ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ও ব্লক নির্মাণের কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এ প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারকে ব্লক তৈরিতে পাথর, বালিসহ অন্যান্য সামগ্রী সাপ্লাই দেওয়া নিয়ে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাত ৮টার দিকে উপজেলার সিইউএফএল বাজারে উপজেলা বিএনপির সদস্য আব্দুল গফুরের ওপর হামলা চালানো হয়। এবং তার গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। পরবর্তীতে তার অনুসারীরা এ হামলার ঘটনার প্রতিবাদে শোডাউন দেন। এবং হামলা ও বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় আনোয়ারা থানায় অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী। থানা থেকে ফেরার পথে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে বিএনপির অপর পক্ষের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে ২টি প্রাইভেট কার ভাঙচুর ও ২টি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৩ পুলিশ সদস্যসহ ১৮ জন আহত হন।

থানা সূত্রে জানা যায়, সংঘর্ষের সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ২৮ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে পুলিশ। 

আহতরা হলেন- পুলিশ সদস্য মো.

কামাল (২৫), বিশাল চক্রবর্তী (২৭) ও মো.আবু তালেব (২৫)। এছাড়া মো. আবদুল গফুর, মোহাম্মদ আবুল কাশেম, মোহাম্মদ আবদুল রশিদ, গিয়াস উদ্দিন, মোহাম্মদ তারেক, আবদুল মোতালেব, মোহাম্মদ ইউসুফ ,আবদুল জব্বার, মোহাম্মদ মোকতার আলী, মোহাম্মদ এমদাদ, মোহাম্মদ তারেক, মোহাম্মদ রুবেল হোসেনসহ বিএনপির ১৫ নেতাকর্মী আহত হন।

উপজেলা বিএনপির সদস্য আবদুল গফুর বলেন, ‘আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্লক নির্মাণে সামগ্রী সাপ্লাইয়ের কাজ পাই। তবে বিএনপির ফোরকান এবং সাদেক আমার কাজে বাঁধা দেন। তারা আমার কাছে চাঁদাও দাবি করেন। আমি চাঁদা দিতে অস্বীকার করি। এ ঘটনার জেরে নুরুল কবিরের নেতৃত্বে সিইউএফএল ফাঁড়ির সামনে আমার ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় হামলাকারীরা টাকাও ছিনিয়ে নেন। তৎক্ষণাৎ স্থানীয়রা জড়ো হয়ে প্রতিবাদ মিছিল করেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়ে ফেরার পথে আমি ও আমাদের লোকজনের ওপর আবারও হামলা চালানো হয়। তখন আমার সঙ্গে থাকা ইলিয়াস, সুজন ও মোতালেবকে ধরে নিয়ে যায় হামলাকারীরা। পরবর্তীতে মোতালেবকে আহত অবস্থায় ছেড়ে দিলেও ইলিয়াস এবং আমার জামাতা সুজনের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।’

জানতে চাইলে দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব লায়ন হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘আমি এলাকার বাইরে, শুনেছি গত রাতে আব্দুল গফুর কিছু বহিরাগত এবং আওয়ামী লীগের লোকজন নিয়ে মোটরসাইকেল, কারসহ বিভিন্ন গাড়িতে আনোয়ারায় শোডাউন দিয়ে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন। এ সময় স্থানীয়রা ও বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা তাদের প্রতিহত করেন।’

আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন বলেন, ‘বিএনপির দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ২৮ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে ৩ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ স ঘর ষ আহত প ল শ সদস য ম হ ম মদ এ ঘটন য় ব এনপ র স ঘর ষ আবদ ল র ঘটন উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

আড়াইহাজারে ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়াতে থানা ঘেরাও, পরে ঘেরাওকারীদের ওপর বিএনপির হামলা

ছবি: সংগৃহীত

সম্পর্কিত নিবন্ধ