সাত মাস পর কেন্দ্রীয় চুক্তি, সুখবর পেলেন পান্ত-আইয়ার-ইশান
Published: 21st, April 2025 GMT
গত বছরের সেপ্টেম্বরে শেষ হয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সঙ্গে দেশটির ক্রিকেটারদের কেন্দ্রীয় চুক্তি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিরা ওয়ানডে ফরম্যাট থেকে বিদায় বলবেন কিনা তার ওপর ঝুঁলে ছিল কেন্দ্রীয় চুক্তির সিদ্ধান্ত। তারা অবসরে না যাওয়ায় ক্রিকেটার সাত মাস চুক্তিহীন থাকার পর অবশেষে কেন্দ্রীয় চুক্তি ঘোষণা করল বিসিসিআই।
নতুন এই চুক্তিতে প্রোমোশন পেয়েছেন ইনজুরির কারণে লম্বা সময় মাঠের বাইরে থাকার পর আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে আলো ছড়ানো ঋষভ পান্ত। তিনি পূর্বে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে ছিলেন। নতুন চুক্তিতে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে ঢুকেছেন। এছাড়া অবসর নেওয়ায় রবিশচন্দন অশ্বিন চুক্তি থেকে বাদ পড়েছেন। নতুন এই কেন্দ্রীয় চুক্তি গত ১ অক্টোবর থেকে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কার্যকর হবে। অর্থাৎ চুক্তিতে জায়গা পাওয়া ক্রিকেটাররা গত বছরের অক্টোবর থেকে হিসেবে করে বেতন পাবেন।
ঘরোয়া ক্রিকেটে অনীহা দেখানোর অভিযোগে ভারতের দুই ক্রিকেটার শ্রেয়াস আইয়ার ও ইশান কিশাণ কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়েছিলেন। তারা আবার কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ঢুকেছেন। এর মধ্যে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দারুণ ক্রিকেট খেলা আইয়ার ‘বি’ ক্যাটাগরিতে আছেন। ইশান কিশান আছেন ‘সি’ ক্যাটাগরিতে।
ভারতের ক্রিকেটারদের চার ক্যাটাগরি তথা ‘এ প্লাস, এ, বি ও সি’তে কেন্দ্রীয় চুক্তি প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে সিনিয়র ক্রিকেটার রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, জাসপ্রিত বুমরাহ ও রবীন্দ্র জাদেজা আছেন এ প্লাস ক্যাটাগরিতে। ‘এ’ ক্যাটাগরিতে আছেন ঋষভ পান্ত, হার্ডিক পান্ডিয়া, কেএল রাহুল, শুভমন গিল, মোহাম্মদ শামি ও মোহাম্মদ সিরাজ। ‘বি’ ক্যাটাগরিতে আছেন শ্রেয়াস আইয়ার, অক্ষর প্যাটেল, সূর্যকুমার যাদব, কুলদীপ যাদব ও জশস্বী জয়সোয়াল।
‘সি’ ক্যাটাগরিতে আছেন ১৯ ক্রিকেটার। তারা হলেন- রিংকু সিং, তিলক ভার্মা, ঋতুরাজ গাইকোয়াড়, শিভাম দুবে, রবি বিষ্ণয়, ওয়াসিংটন সুন্দর, মুকেশ কুমার, সানজু স্যামসন, অর্শদ্বীপ সিং, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা, রজদ পতিদার, ধ্রুব জুরেল, সরফরাজ খান, নিতিশ রেড্ডি, ইশান কিশান, অভিষেক শর্মা, আকাশ দ্বীপ, বরুণ চক্রবর্তী ও হার্শিট রানা।
চুক্তি থেকে বাদ পড়েছেন: শার্দুল ঠাকুর, জিতেশ শর্মা, কেএস ভারত, আবেশ খান, বিজয়কুমার বশাক, উমরান মালিক, ইয়াশ দয়াল ও বিদ্যুত কাভিরাপ্পা।
চুক্তিতে ঢুকেছেন: ধ্রুব জুরেল, সরফরাজ খান, নিতিশ রেড্ডি, ইশান কিশান, অভিষেক শর্মা, বরু চক্রবর্তী, হার্শিট রানা, শ্রেয়াস আইয়ার ও আকাশ দ্বীপ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব স স আই শ র য় স আইয় র ঋষভ প ন ত আইয় র
এছাড়াও পড়ুন:
শরীরের যেমন সীমা আছে, তেমনি মনেরও ক্লান্তি আছে
সোহেল রানা। কিংবদন্তি অভিনেতা ও প্রযোজক। রাজনীতিতেও সক্রিয় ছিলেন তিনি। দুই মাধ্যমেই বর্ণিল ক্যারিয়ার তাঁর। কিন্তু সম্প্রতি অভিনয় ও রাজনীতি দুই মাধ্যম থেকেই অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। কেন এ অবসরের ঘোষণা। তা নিয়েই কথা হয় সমকালের সঙ্গে।
সমকাল: অভিনয় ও রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত কেন?
সোহেল রানা: হঠাৎ কিছু না। সময় অনেক কিছুই শিখিয়ে দেয়। আমি প্রায় পাঁচ দশক ধরে কাজ করে আসছি– সিনেমা, প্রযোজনা, রাজনীতি সব মিলিয়ে জীবনের সিংহভাগ সময় ব্যস্ত থেকেছি। এখন বয়স হয়েছে। শরীরের যেমন সীমা আছে, তেমনি মনেরও ক্লান্তি আছে। এ বয়সে এসে মনে হচ্ছে, এখন থামার সময়। তাই থামলাম।
সমকাল: শারীরিক সমস্যার কারণেই এ সিদ্ধান্ত?
সোহেল রানা : বয়সই তো একটা বড় ফ্যাক্টর। আগের মতো তো এখন আর ১৬-১৮ ঘণ্টা শুটিং করার শক্তি নেই। ডাক পেলেই ছুটে যেতে পারব না। অনেক দিন ধরে অভিনয়েও নেই। নিয়মিত ডাক্তারদের পরামর্শে চলতে হয়। সবকিছু মিলিয়ে পরিবারের চোখে চোখে থাকতে হয়। তারা কেউ চায় না আমি আর অন্য কিছু নিয়ে ব্যস্ত থাকি। এ ছাড়া আমি মনে করি, শরীর আর মন একসঙ্গে না থাকলে অভিনয়টা পরিপূর্ণ হয় না। কখনোই চাইনি দর্শক আমাকে দুর্বল দেখে মনে করুক, ‘উনি তো আগের মতো নেই।’ আমি চাই, সবাই যেন আমাকে মনে রাখে সেই সোহেল রানা হিসেবেই– যিনি আত্মবিশ্বাস নিয়ে চরিত্রে ডুবে যেতেন।
সমকাল: রাজনীতিও কি একই কারণে ছাড়লেন?
সোহেল রানা : আমি মূলত রাজনীতিরই লোক। ভালোবেসেই রাজনীতি করেছিলাম। মানুষের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছি। কিন্তু রাজনীতি মানে শুধু ভালোবাসা নয়, এটা দায়িত্ব আর সিদ্ধান্তের জায়গা। এখন যেভাবে রাজনীতির গতিপথ বদলেছে, সেখানে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে। বয়সও সায় দিচ্ছে না। আমিও বেশ ক্লান্ত, তাই সরে দাঁড়ানোই শ্রেয় মনে করছি।
সমকাল: এই বিদায় কি স্থায়ী?
সোহেল রানা : আমি বলব– হ্যাঁ, স্থায়ী। তবে শিল্পী হিসেবে যদি কখনও এমন কোনো কিছুর জন্য ডাক আসে, যেটা আমার হৃদয়ের খুব কাছের, যেটা দিয়ে কিছু বলার থাকে, তাহলে ভেবে দেখব।
সমকাল: সবকিছু এভাবে ছেড়ে থাকতে কষ্ট হবে না?
সোহেল রানা : মানুষকে তো কষ্টের ওপর দিয়েই জীবনযাপন করতে হয়। পৃথিবীতে কেউ আছে যে, তার কষ্ট নেই। এখন যদি রাজনীতি ও অভিনয় দুটিই করি, তাহলেও তো কষ্ট হবে। জীবনের জন্য ঝুঁকিও থাকবে। আবার ছেড়ে থাকতেও কষ্ট হবে। তবে এখন যে বয়স, তাতে বিশ্রামে থাকাটাই আমার জন্য শ্রেয়। পরিবারও উৎকণ্ঠায় থাকবে না। কষ্ট আর ভালো থাকা মিলিয়েই থাকা হবে।
সমকাল: ক্যামেরার পেছনে বা অন্য কোনো ভূমিকায় থাকতে চান?
সোহেল রানা : এখন ইচ্ছে করছে নিজের মতো করে বাঁচতে। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে, পুরোনো সিনেমা দেখতে, বই পড়তে। তবে হ্যাঁ, তরুণদের যদি কিছু শেখাতে পারি, গাইড করতে পারি– তাতে ভালো লাগবে। ইন্ডাস্ট্রি আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে, কিছু ফিরিয়ে দেওয়ার সুযোগ হলে অবশ্যই সেটা করতে চেষ্টা করব।
সমকাল: দর্শকদের উদ্দেশে কিছু বলার আছে?
সোহেল রানা : দর্শকই একজন শিল্পীর জীবনের মূলশক্তি। আপনারাই আমাকে ‘সোহেল রানা’ বানিয়েছেন। ভালোবাসা দিয়েছেন, সম্মান দিয়েছেন। আমার অভিনয় বা সিদ্ধান্তে কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে ক্ষমাপ্রার্থী। আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ। আমার অভিনীত সিনেমাগুলো যদি আপনাদের মনে এতটুকু জায়গা করে নিতে পারে, তবেই আমি সার্থক।
-