বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ওপর ছাত্রদলের হামলা, আহত ৩
Published: 21st, April 2025 GMT
জুলাই-আগস্ট গ্রাফিতি অঙ্কন মুছে ফেলা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে পুলিশের সামনেই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্রদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এতে তিন জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
সোমবার (২১ আগস্ট) দুপুরে পাবনার ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের সামনে হামলা করা হয়। আহতরা হলেন, কলেজের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান জিহাদ, তানজিদুর জামান দিহান এবং রাতুল হাসান। তাদের ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দিহান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঈশ্বরদী উপজেলা সমন্বয়ক।
প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সম্প্রতি ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের দেয়ালে জুলাই-আগস্ট গ্রাফিতি অঙ্কন মুছে ফেলা হয়। সেখানে স্থানীয় বিএনপির নেতাদের নাম লেখা হয়। এর প্রতিবাদে সোমবার (২১ এপ্রিল) মানববন্ধনের আয়োজন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন:
এডওয়ার্ড কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি রাকিব, সম্পাদক কাব্য
শেরপুরে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের সেবায় ছাত্রদল
অপরদিকে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের কর্মী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যার ঘটনায় বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এতে নেতৃত্ব দেন জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম নয়ন।
এ সময় উভয় পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিলে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা দেখা দেয়। তাদের মাঝে অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এক পর্যায়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয়। অধিকাংশ দৌঁড়ে পালিয়ে গেলেও কয়েকজন আহত হয়।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঈশ্বরদী উপজেলা সমন্বয়ক তানজিদুর জামান দিহান বলেন, ‘‘দেয়ালে গ্রাফিতি অঙ্কন মুছে ফেলার প্রতিবাদে আমরা আজকে কর্মসূচি আয়োজন করেছিলাম। আমাদের প্রোগ্রামও শেষের দিকে। এ সময় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা আসেন। আমরা তাদের কাছে দাবি করেছিলাম, তারা যেন আগের গ্রাফিতি অঙ্কনগুলো পুনরায় অঙ্কন করে দেয়। এ সময় ধাক্কাধাক্কির এক পর্যায়ে তারা আমাদের ওপর হামলা করে। আমিসহ তিন জন আহত হয়েছি। ফ্যাসিবাদের সময় ছাত্রলীগ যেভাবে আমাদের ওপর হামলা করেছিল আজকে ছাত্রদল সেইভাবে হামলা করলো।’’
তবে হামলার বিষয়টি মিথ্যা বলে দাবি করেছেন জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম নয়ন। তিনি বলেন, ‘‘কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। তারা নিজেরাই ঝামেলা করে আমাদের দোষ দিচ্ছে। এখানে পুলিশ, র্যাব, ডিবি পুলিশ কলেজে উপস্থিত ছিল। আপনি তাদের কাছে থেকে শুনতে পারেন। কোনো হামলা হয়নি। ঈশ্বরদীতে তারা (বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন) খুব বাড়াবাড়ি করছে।’’
এ বিষয়ে পাবনা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমি বিষয়টি এখনও জানি না, শুনিওনি। তবে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল অবশ্যই বিষয়টি সম্পর্ক খোঁজখবর নিয়ে প্রকৃত সত্যতা যাছাই করে সিদ্ধান্ত নিবে।’’
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ঈশ্বরদী সার্কেল) প্রনব কুমার বলেন, ‘‘তাদের মানববন্ধন চলাকালে কোনো ঝামেলা হয়নি। কিন্তু মানববন্ধন শেষে চলে যাওয়ার পথে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। সেটা কলেজের বাইরে। আমরা এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেবো। আর নিজেদের পক্ষ থেকেও যদি কোনো ব্যবস্থা নেয়া যায় তাহলেও নেবো।’’
ঢাকা/শাহীন/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল গণঅভ য ত থ ন ছ ত রদল র স ল ইসল ম আম দ র কল জ র
এছাড়াও পড়ুন:
দুদকের সামনে জিএম কাদেরকে গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন জাতীয় পার্টির এক অংশের নেতাকর্মীরা।
রবিবার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কার্যালয়ের সামনে পার্টির নেতাকর্মীরা এই কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় তাদের হাতে জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে নানা শ্লোগান সম্বলিত ব্যানার ফেস্টুন দেখা যায়।
মানববন্ধনে বক্তারা জিএম কাদেরকে ‘সুবিধাভোগী আওয়ামী ফ্যসিস্টের দোসর’ উল্লেখ করে বলেন, “জিএম কাদের সরকারি সুবিধা নিয়ে আওয়ামী লীগের কাছে শুধু জাতীয় পার্টিকে বিক্রি করেনি, নেতাকর্মীদের মনোনয়নও বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন। বিগত নির্বাচনে তার প্রত্যক্ষ মদদে আওয়ামী লীগ নির্বাচন করার বৈধতা পায়, আর এ কারণে বিরোধীদলের নেতা, উপনেতাসহ সব ধরনের সরকারি সুবিধা উপহার হিসেবে পেয়েছেন। আওয়ামী লীগের পতনের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি সংসদ থেকে পদতাগ করেননি বরং সংসদ বিলুপ্ত হওয়া পর্যন্ত বিরোধীনেতার সুবিধা ভোগ করে তিনি যে ফ্যসিস্টের দোসর ছিলেন তা প্রমাণ করেছেন।”
আরো পড়ুন:
জিএম কাদেরকে গ্রেপ্তার দাবি রওশন গ্রুপের
আ.লীগ নিষিদ্ধের প্রসঙ্গে যা বললেন জিএম কাদের
মানববন্ধনে জাপা নেতারা বলেন, “জাতীয় পার্টি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের হাতেগড়া সন্তান। যা সাবেক রাষ্ট্রপতির অসুস্থতার সুযোগে চেয়ারম্যানের পদ দখল করে মনোনয়ন বাণিজ্য, ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে মিলে দুর্নীতি ও নানা অপকর্ম করে জিএম কাদের নিজ হাতে এই সন্তানকে হত্যা করেছেন। আমরা পার্টির নেতাকর্মীরা তার কবল থেকে জাতীয় পার্টির মুক্তি চাই। সততার আড়ালে ভণ্ড রাজনীতিক জিএম কাদেরের শাস্তি চাই।”
তারা বলেন, “দুর্নীতিবাজ জিএম কাদের ও তার স্ত্রী শেরিফা কাদেরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধান চলছে। তাছাড়া জিএম কাদের ফ্যসিস্টের দোসর হিসেবে একাধিক হত্যা মামলারও আসামি। এসব মামলায় আসামিরা জেলে থাকলেও ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি। তাই আমরা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও দুদকের প্রতি অবিলম্বে জি এম কাদেরকে গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।”
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির কো- চেয়ারম্যান সুনীল শুভ রায়, প্রেসিডিয়াম সদস্য খন্দকার মনিরুজ্জামান টিটু, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক খোরশেদ আলম খুশু, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ইদ্রিস আলীসহ ঢাকা মহানগর ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি