Prothomalo:
2025-12-14@06:51:44 GMT

মাথাব্যথার যত কারণ

Published: 21st, April 2025 GMT

যেসব কারণে একজন মানুষের কর্মক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তার মধ্যে অন্যতম একটি মাথাব্যথা। স্নায়ুরোগের মধ্যেও মাথাব্যথার হার সবচেয়ে বেশি। মাথাব্যথার রোগীদের শতকরা প্রায় ৭০ জনের হয় ‘টেনশন টাইপ হেডেক’। এ ছাড়া ১১ শতাংশের ‘মাইগ্রেন’ বা আধকপালি মাথাব্যথা এবং প্রায় ৩ শতাংশের ‘ক্রনিক ডেইলি হেডেক’ বা দীর্ঘস্থায়ী মাথাব্যথা হয়।

মাথাব্যথা প্রধানত দুই প্রকার। প্রথমত, প্রাইমারি হেডেক, যেমন মাইগ্রেন, টেনশন টাইপ হেডেক, ক্লাস্টার হেডেক ইত্যাদি। দ্বিতীয়ত, সেকেন্ডারি হেডেক, যেমন সাইনুসাইটিস, মাসটয়ডাইটিস, গ্লুকোমা, স্ট্রোক, আঘাতজনিত, মস্তিষ্কের টিউমার ইত্যাদি।

মাইগ্রেন

পুরুষের তুলনায় নারীদের মাইগ্রেন হয় বেশি। কৈশোর থেকে মাইগ্রেনের লক্ষণ দেখা দেয় এবং ৪০-৫০ বছর বয়স পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এতে মাথার যেকোনো এক পাশে ব্যথা হয়। একবার এক পাশে হলে পরবর্তীবার অন্য পাশে ব্যথা হতে পারে। ব্যথা ৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। রক্তনালি বা শিরা টনটন করছে বলে মনে হয়। ব্যথা অত্যন্ত তীব্র হয় এবং এ সময় কোনো কাজ করা যায় না। আলো বা শব্দে ব্যথার তীব্রতা বাড়ে। বমিভাব বা বমি হতে পারে। ব্যথা শুরুর আগে চোখের সামনে আলোর নাচানাচি, আঁকাবাঁকা লাইন ইত্যাদি দেখে রোগী মাইগ্রেন যে শুরু হয়েছে তা বুঝতে পারে। অন্ধকার ঘরে শুয়ে থাকলে ব্যথার তীব্রতা কমে।

টেনশন টাইপ হেডেক

এটিও মাইগ্রেনের মতো কৈশোরে শুরু হয় এবং বেশি হয় নারীদের। মাথার মাংসপেশির সংকোচনের কারণে এই মাথাব্যথা হয়। এর লক্ষণ হলো মাথাজুড়ে চাপ-চাপ বা ব্যান্ডের মতো ব্যথা অনুভূত হওয়া। মাইগ্রেনের মতো ব্যথা ততটা তীব্র নয়। রোগী ব্যথা নিয়ে সব ধরনের কাজ করতে পারেন; বরং কাজের সময় ব্যথা কম অনুভূত হয়। কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক দিন পর্যন্ত থাকতে পারে এই ব্যথা। দুশ্চিন্তা, পারিবারিক বা পেশাগত মানসিক চাপের সঙ্গে এ ধরনের মাথাব্যথার সম্পর্ক আছে।

আরও পড়ুনডায়েট করতে গিয়ে কি মাথাব্যথা হচ্ছে? জেনে নিন সমাধান০১ জানুয়ারি ২০২৪

ক্লাস্টার হেডেক

এ ধরনের মাথাব্যথা হয় কম। পুরুষদের এটি বেশি হয়। এটি ক্ষণস্থায়ী কিন্তু বারবার হয়। অত্যন্ত তীব্র ব্যথা, চোখের চারপাশে বা পেছনে ব্যথা হয়। চোখ লাল হয়ে যায় এবং পানি পড়ে। চোখের ওপরের পাতা পড়ে যেতে পারে। প্রতিদিন একই সময়ে বা দিনে কয়েকবার ব্যথা হয় এবং কয়েক সপ্তাহব্যাপী স্থায়ী হয়। এরপর ব্যথা চলে যায় এবং কয়েক মাস পর আবার ব্যথা শুরু হয়।

সেকেন্ডারি হেডেক

বিভিন্ন রোগের কারণে আমাদের মাথাব্যথা হতে পারে। যেমন সংক্রমণ (টাইফয়েড, ভাইরাস জ্বর) মস্তিষ্কের আবরণী প্রদাহ (মেনিনজাইটিস), সাইনুসাইটিস, মাসটয়েডাইটিস, মস্তিষ্কের টিউমার, রক্তক্ষরণ বা স্ট্রোক ইত্যাদি।

রোগনির্ণয় ও চিকিৎসা

মাথাব্যথার কারণ নির্ণয় করতে পারলে চিকিৎসা সহজ। প্রাইমারি হেডেকের চিকিৎসা দুই স্তরের। প্রথমত, অ্যাবরটিভ চিকিৎসা বা মাথাব্যথার তাৎক্ষণিক নিরাময়। এ জন্য বিভিন্ন বেদনানাশক ওষুধ সেবন করা যায়। আবার অতিরিক্ত বেদনানাশক ওষুধ সেবনও মাথাব্যথার কারণ হতে পারে, যাকে মেডিসিন ওভার ইউজ হেডেক বলা হয়। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। দ্বিতীয়ত, প্রোফাইলেকটিক চিকিৎসা। বারবার যেন মাথাব্যথা না হয় এবং ব্যথার তীব্রতা যেন কম থাকে—এ জন্য চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খেতে হবে।

ডা.

জহিরুল হক চৌধুরী, অধ্যাপক, ক্লিনিক্যাল নিউরোলজি বিভাগ, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল, ঢাকা

আরও পড়ুনগরমে কেন মাথাব্যথা হয়২২ মে ২০২৪

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলার ঘটনায় জাতিসংঘ মহাসচিবের তীব্র নিন্দা

সুদানে জাতিসংঘের এক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় ছয় শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন। তাঁরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘আমি সুদানের কাদুগলিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর লজিস্টিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে নৃশংস ড্রোন হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের লক্ষ্য করে হামলা আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।’

সুদানের কোরদোফান অঞ্চলের কাদুগলি শহরে অবস্থিত জাতিসংঘের ভবনটিতে গতকাল শনিবার এ হামলা হয়।

গুতেরেসের বিবৃতিতে বলা হয়, হামলায় আরও আট শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন। হতাহত ব্যক্তিদের সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। তাঁরা ইউএন ইন্টারিম সিকিউরিটি ফোর্স ফর আবেইয়ের (ইউএনআইএসএফএ) হয়ে দায়িত্বরত ছিলেন।

গুতেরেস বলেন, ‘দক্ষিণ কোরদোফানে আজ (শনিবার) শান্তিরক্ষীদের ওপর যে হামলা হয়েছে, তা অগ্রহণযোগ্য। এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।’

হামলায় নিহত শান্তিরক্ষীদের সবাই বাংলাদেশি। তাঁরা ইউএন ইন্টারিম সিকিউরিটি ফোর্স ফর আবেইয়ের (ইউএনআইএসএফএ) হয়ে দায়িত্বরত ছিলেন। হামলায় আরও আট শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন।

সুদানের সেনাবাহিনী ওই হামলার দায় র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) নামে দেশটির আধা সামরিক বাহিনীর ওপর চাপিয়েছে।

সুদানে দুই বছরের বেশি সময় ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে। দেশটির সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে এ লড়াই চলছে।

আরএসএফ তাৎক্ষণিকভাবে হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

সুদানের সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, এ হামলা বিদ্রোহী মিলিশিয়া এবং এর পেছনে যাঁরা আছেন, তাঁদের ধ্বংসাত্মক কৌশলের স্পষ্ট প্রকাশ।

সুদান সেনাবাহিনী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। ভিডিওতে একটি স্থান থেকে ঘন কালো ধোঁয়া আকাশে উঠতে দেখা যাচ্ছে। তারা বলেছে, এটি জাতিসংঘের স্থাপনা।

বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী হতাহত হওয়ার এ ঘটনায় গভীর শোক ও উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

দক্ষিণ কোরদোফানে আজ (শনিবার) শান্তিরক্ষীদের ওপর যে হামলা হয়েছে, তা অগ্রহণযোগ্য। এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।.আন্তোনিও গুতেরেস, জাতিসংঘ মহাসচিব

যেখানে হামলা হয়েছে, সেই তেলসমৃদ্ধ অঞ্চল আবেই নিয়ে সুদান ও দক্ষিণ সুদানের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। ২০১১ সালে সুদান থেকে আলাদা হয়ে দক্ষিণ সুদান একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এর পর থেকে সেখানে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশন মোতায়েন রয়েছে।

দুই দেশের সীমান্তে অবস্থিত আবেই বিশেষ প্রশাসনিক মর্যাদার অঞ্চল।

সুদানের আবেই অঞ্চলে একটি সড়কে দায়িত্ব পালন করছেন জাতিসংঘের একজন শান্তিরক্ষী

সম্পর্কিত নিবন্ধ