Prothomalo:
2025-04-21@09:09:50 GMT

সন্তানকে বদ দোয়া করবেন না

Published: 21st, April 2025 GMT

পিতামাতার কর্তব্য হলো, ইসলামের নির্দেশনার আলোকে সন্তানের প্রতি যত্নবান থাকা, তাদের দেখাশোনা করা। তাদের প্রতি ভালোবাসা, সুন্দর ব্যবহার ও তাদের সন্তুষ্টির দিকেও মনোযোগী হতে হবে।

রাসুল (সা.) ভালোবাসায় দিয়ে সন্তানদের প্রতিপালন করতেন। তিনি স্নেহ-মমতায় ছেলেমেয়ের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ করতেন না। রাসুলের (সা.) ছেলেরা বাল্যকালে মারা গেছেন। তাঁর ছায়ায় বেড়ে উঠেছে তাঁর মেয়েরা। তিনি তার প্রত্যেক মেয়ের জন্য যোগ্য ও উপযুক্ত পাত্র নির্বাচন করেছেন এবং বিয়ের পরেও তাদের দেখাশোনা ও খোঁজ-খবর অব্যাহত রেখেছেন। আবু সাঈদ খুদরি (রা.

)-এর কাছ থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের যে কারও তিনটি কন্যা বা তিনটি বোন থাকে, আর সে তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে, তাহলে সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ১,৯১২)

আরও পড়ুনকেন ‘বিসমিল্লাহ’ বলতে হয়১১ এপ্রিল ২০২৫

নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘প্রতিটি সন্তান ইসলামের প্রকৃতির ওপর জন্মগ্রহণ করে। মা-বাবাই তাকে ইহুদি, খ্রিষ্টান ও অগ্নিপূজক বানায়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১,৩৫৭; মুসলিম, হাদিস: ২,৬৫৮)

হাদিসে স্পষ্টভাবে সন্তানের ধর্ম ও চরিত্র গ্রহণের ওপর মাতা-পিতার প্রভাবের কথা বলা হয়েছে। সুতরাং সন্তান যদি বখে যায়, তাতে পিতা-মাতা তাদের দায় এড়াতে পারেন না। তাই তাদের এমনভাবে লালন-পালন করা জরুরি, যেন সে আল্লাহ প্রদত্ত স্বভাবের সঙ্গে বেড়ে ওঠে এবং শয়তান তাকে দীন থেকে বিমুখ করতে না পারে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২,৮৬৫)

এরপরও সন্তানের আচরণে কখনো কষ্ট পেলে তাঁর জন্য বদ দোয়া করতে আল্লাহর রাসুল (সা.) নিষেধ করেছেন। কেননা, তাৎক্ষণিক ক্ষুব্ধতার মধ্য দিয়ে হলেও পিতা-মাতার দোয়া আল্লাহর কাছে কবুল হয়ে যায় এবং পরিণতিতে তা সন্তানের ইহকাল ও পরকাল বরবাদ করে দিতে পারে। আবু হোরায়রা (রা.) বর্ণিত একটি হাদিসে আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘ কোন সন্দেহ নেই, তিন ব্যক্তির দোয়া কবুল করা হয়: ১. পিতা-মাতার দোয়া, ২. মুসাফিরের দোয়া ও ৩. অত্যাচারিতের দোয়া। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ১,৫৩৬; সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ১,৯০৫; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩,৮৬২)

রাসুল (সা.) তাই নিজের জন্য ও সন্তানদের জন্য বদ দোয়া করতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘তোমরা নিজের বিরুদ্ধে বদদোয় করো না, সন্তানের বিরুদ্ধে হাত তুলো না এবং সম্পদের বিরুদ্ধে প্রার্থনা করো না। হতে পারে, এমন মুহূর্তে বদ দোয়া করেছ, যখন কবুল হওয়ার সময়। আর আল্লাহ তা কবুল করে ফেলেছেন।’ (সহিহ মুসিলম, হাদিস: ৩,০০৯)

আরও পড়ুনকথার শেষে কেন ‘ইনশাআল্লাহ’ বলতে হয়০৭ এপ্রিল ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য বল ছ ন আল ল হ

এছাড়াও পড়ুন:

পলক বললেন, কারাগার থেকে শীতের সোয়েটার হারিয়ে গেছে, উদ্ভট বলছেন তত্ত্বাবধায়ক  

কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক আইনজীবীদের কাছে দাবি করেছেন, কারাগার থেকে তাঁর দুটি শীতের সোয়েটার হারিয়ে গেছে।

আইনজীবীর উদ্দেশে পলক বলেন, ‘আগামী শীতকাল পর্যন্ত কারাগারে থাকতে হবে কিনা জানি না। কিন্তু আমার দুটি শীতের সোয়েটার হারিয়ে গেছে। যদি সে পর্যন্ত থাকতে হয়, তাহলে আবার সোয়েটার জোগাড় করে নিতে হবে।’

কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক ও ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর বলছেন, জুনাইদ আহমেদ পলকের এসব কথা একেবারেই ভিত্তিহীন। তিনি আলোচনায় থাকার জন্য এসব বানোয়াট কথা বলছেন।

বিভিন্ন হত্যা মামলায় আজ সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু, শাজাহান খান, কামাল আহমেদ মজুমদার, জুনাইদ আহমেদ পলক, তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। শুনানি শেষ হলে পলকের আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন বলেন, তাঁর মক্কেল কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে তাঁকে জানিয়েছেন, তাঁর শীতের দুটি সোয়েটার কারাগার থেকে হারিয়ে গেছে।

সকাল ১০টা ২০ মিনিটের দিকে জুনাইদ আহমেদ পলককে যখন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের বারান্দায় আনা হয় তখন একজন সংবাদকর্মী তাঁর কাছে জানতে চান, ‘পলক ভাই, আপনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) গতকাল দুই হাত এক করে কি বোঝাতে চেয়েছেন?’এ সময় পলক হেসে ঘাড় দুদিকে ঘোরান।

কাঠগড়ায় নেওয়ার পর পলকের হেলমেট ও এক হাতের হাতকড়া খুলে দেওয়া হয়। পলকের ডান পাশে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছিলেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তাঁর ডানহাতে পরানো ছিল হাতকড়া। এ সময় পলক তাঁর দুজন আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন।

পলক তাঁর আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিনের উদ্দেশে বলতে শুরু করেন, ‘আমাকে দু-এক দিনের মধ্যেই গাজীপুরের আদালতে তোলা হবে। তোমাদের সেখানে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। মামলার  কাগজগুলো তুলে রেখো। নারায়ণগঞ্জের আদালতেও তোমরা যেও না। সেখানে অনেক বেশি সিনক্রিয়েট হয়।’

কারাগার থেকে পলকের সোয়েটার হারিয়ে যাওয়ার তথ্য সঠিক নয় বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারের জ্যেষ্ঠ কারা তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আলোচনায় থাকার জন্য জুনাইদ আহমেদ পলক উদ্ভট সব দাবি করে থাকেন। এই সোয়েটার  হারিয়ে যাওয়ার তথ্য, এমন একটি উদ্ভট দাবি। কারাগার থেকে কোনো বন্দীর জিনিসপত্র হারানোর সুযোগ নেই।’

কারা তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন আরও বলেন, একজন বন্দীকে যদি কারাগার থেকে কোনো কাপড়-চোপড় বাইরে নিয়ে যেতে হয়, সে ক্ষেত্রে কারাগারে সেই কাপড়চোপড় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়।  পরে কারারক্ষীরা তাঁর স্বজনদের কাছে কাপড় হস্তান্তর করেন।

এ ব্যাপারে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ  আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী প্রথম আলোকে বলেন, ‘জুনাইদ আহমেদ পলক, শাজাহান খানরা প্রশাসন ও বিচারব্যবস্থাকে বিতর্কিত করছেন। বিতর্কিত করার জন্যই তাঁরা রাজাকার শব্দ উচ্চারণ করেছেন। পলক বলছেন, কারাগার থেকে সোয়েটার চুরি হয়ে গেছে। এগুলো বানোয়াট ও ভিত্তিহীন কথাবার্তা।’

এর আগে পলকের আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন গণমাধ্যমের কাছে দাবি করেছিলেন, তাঁর মক্কেল কারাগারে ডিভিশনের সুযোগ পাচ্ছেন না।

এ ব্যাপারে কারা তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘জুনাইদ আহমেদ পলক আমার কারাগারের চতুর্থ তলায় থাকেন। সাবেক প্রতিমন্ত্রী হিসেবে জেলকোডের বিধান অনুযায়ী তিনি প্রথম শ্রেণির একজন কারাবন্দী। প্রথম শ্রেণির কারাবন্দী যে সমস্ত সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন, তিনিও ঠিক একই সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। তাঁর আইনজীবী তথ্যও সঠিক নয়।’

সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে  একই কাঠগড়ায় তখন আনা হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজকে।  গত ৮ এপ্রিল তুরিন আফরোজকে যখন আদালতে তোলা হয়েছিল, সেদিন নিজেই তাঁর শুনানি করেন। কোনো আইনজীবী ছিল না। আজও তাঁকে কোনো আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়নি। মিরপুর থানার একটি হত্যা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

শাজাহান খানকে আজ শাহবাগ থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। শুনানির সময় তিনি কাঠগড়ায় কোনো কথা বলেননি।

আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু আদালত কক্ষে চুপচাপ ছিলেন। তাঁকে হাতকড়া পরিয়ে  আদালতে তোলা হয়েছে। সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারকে হেলমেট পরিয়ে রাখা হয়।তাঁরা আইনজীবী ছাড়া আর কারও সঙ্গে কথা বলেননি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ