জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ঢাকার চানখাঁরপুল এলাকায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে তদন্ত সংস্থা এই প্রতিবেদন জমা দিয়েছে ।

ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আটজনের  বিরুদ্ধে এই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানের পর পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে এটিই প্রথম তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল।

আজ সোমবার দুপুরে ট্রাইব্যুনালে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এই মামলার গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন, পরিদর্শক আরশাদ, কনস্টেবল মো সুজন, কনস্টেবল ইমাজ হোসেন ইমন ও কনস্টেবল নাসিরুল ইসলাম।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগরীর চানখাঁরপুল এলাকায় এই আসামি নিরস্ত্র ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ মাহদি হাসান জুনায়েদ, মো.

ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক ও  মানিক মিয়া শাহরিককে গুলি করে। তাঁরা শহীদ হন।

ট্রাইব্যুনালে আরও জানানো হয়, তদন্তকালে পলাতক আসামি সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ অন্যান্য আসামিরা সরাসরি তত্ত্বাবধান/  অংশগ্রহণ, অধীনস্থদের নির্দেশ প্রদান, সহযোগিতা, কোনো ব্যবস্থা না নেওয়াসহ অন্যান্য উপায়ে ভূমিকা রাখার জন্য মানবতাবিরোধী অপরাধ  করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বলা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের পর খামারবাড়ি থেকে অবরোধ তুলে নিলেন ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পর এগ্রি ব্লকেড কর্মসূচির প্রত্যাহার করেছেন কৃষি ডিপ্লোমার শিক্ষার্থীরা। সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে তারা খামারবাড়ি ছেড়ে চলে যান।

এর আগে সকাল ১০টায় রাজধানীর খামারবাড়ির মূল গেট বন্ধ করে দেন কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা। এতে ডিএই'র কর্মকর্তারা অফিসে ঢুকতে পারেননি। সাড়ে তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ অবস্থার পর দুপুর ১টার দিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা বৈঠক করেন। বৈঠকে শিক্ষার্থীরা তাদের আট দফা দাবি তুলে ধরেন। তাদের ৮ দফা দাবি নিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ে আলোচনা করে ডিএই কর্তৃপক্ষ। এরপর কৃষি মন্ত্রণালয় শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিকেলে বৈঠক করবে বলে আশ্বস্ত করে। এরপর শিক্ষার্থীরা তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে খামারবাড়ির অবরোধ তুলে নেন।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের অন্যতম নেতা রায়হান উদ্দিন শামীম সমকালকে বলেন, আমাদের উচ্চ শিক্ষার সুযোগ নেই। ডিপ্লোমা পাস করে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ডিগ্রি নিতে হয়। আমাদের এই দাবি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পূরণ করার কথা। কিন্তু তারা টালবাহানা করছে। কৃষি মন্ত্রণালয় আমাদের আশ্বস্ত করেছে, আমরা এখন কৃষি মন্ত্রণালয়ে যাচ্ছি।

কৃষিতে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করার জন্য বাংলাদেশে সরকারি ১৮টি কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটসহ ২৬০টি বেসরকারি কৃষি কলেজ রয়েছে, যেখানে কৃষিতে ৪ বছরের ডিপ্লোমা কোর্সে অধ্যয়ন করা হয়। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মিলিয়ে প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষার্থী আছে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো— ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের পাবলিক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে গেজেট করে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে এবং প্রতিবছর নিয়োগের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য শিক্ষকসংকট দূর করতে হবে।

বাকি দাবিগুলো হলো— কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষাকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) অধীন থেকে বের করে সম্পূর্ণভাবে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আলাদা প্রতিষ্ঠান করতে হবে। সব কৃষি গবেষণাপ্রতিষ্ঠানে সহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদটি শুধু ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের জন্য সংরক্ষিত করতে হবে। ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের বেসরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ন্যূনতম দশম গ্রেডের পে-স্কেলে বেতন দিতে হবে। কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের মাঠ সংযুক্তি ভাতা প্রদান করতে হবে এবং উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের চাকরিতে প্রবেশের পর ছয় মাসের ফাউন্ডেশন ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। 

কৃষি মন্ত্রণালয়ে জানিয়েছে, তাদের অধিকাংশ দাবি পূরণ করা হয়েছে। কিছু দাবি অন্য মন্ত্রণালয়কে দেখার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ করার পরও এ আন্দোলন অযৌক্তিক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ