পুঁজিবাজারে আর্থিক খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি বাংলাদেশ ফাইন্যান্স লিমিটেডে ক্যাটাগরি পরিবর্তন করা হয়েছে। কোম্পানিটিকে ‘এ’ থেকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

সোমবার (২১ এপ্রিল) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্য মতে, পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনা অনুযায়ী, গত দুই হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ হওয়ায় কোম্পানিটিকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হয়। তাই সোমবার থেকে কোম্পানিটি ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে লেনদেন করবে।

এদিকে ক্যাটাগরি পরিবর্তনের কারণে কোম্পানিটিকে ঋণ সুবিধা দিতে ব্রোকার হাউজ এবং মার্চেন্ট ব্যাংককে নিষেধ করেছে ডিএসই ও সিএসই কর্তৃপক্ষ।

গত বছরের ২০ মে বিএসইসির জেড শ্রেণি নিয়ে জারি করা নির্দেশনায় বলা হয়- পরপর দুই বছর বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ না দিলে, আইন অনুযায়ী নিয়মিত এজিএম না করলে, সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ ছাড়া ছয় মাসের বেশি উৎপাদন বা কার্যক্রম বন্ধ থাকলে, পুঞ্জীভূত লোকসান পরিশোধিত মূলধনের বেশি হলে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঘোষিত লভ্যাংশের ন্যূনতম ৮০ শতাংশ বিতরণ না করলে কোনো কোম্পানিকে ‘জেড’ শ্রেণিভুক্ত করা যাবে।

ঢাকা/এনটি/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

শেয়ারবাজারে কাঠামোগত সংস্কারে অগ্রগতি নেই

নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এবং প্রধান স্টক এক্সচেঞ্জে সুশাসনের অভাব দেশের শেয়ারবাজারের অনিয়ম ও দুর্নীতির বড় কারণ ছিল। কিন্তু মৌলিক এ জায়গার কাঠামোগত সংস্কারের কোনো উদ্যোগ এখনও নেই। উল্টো বিএসইসির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে খোদ কমিশনের নির্বাহী বিভাগের কর্মকর্তা, স্টক এক্সচেঞ্জ এবং বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে।
এ অবস্থায় শেয়ারবাজার স্বাভাবিক ধারায় চলা তো দূরের কথা, উল্টো দর পতন হচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের অনেকেই সব শেয়ার বিক্রি করে বাজার ছাড়ছেন। গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত আট মাসে পরিবর্তনের আশায় প্রায় ২১ হাজার বিনিয়োগকারী নতুন করে বিও অ্যাকাউন্ট খোলেন। কিন্তু একই সময়ে প্রায় ৪৮ হাজার বিও অ্যাকাউন্ট পুরোপুরি শেয়ারশূন্য হয়েছে। সরকার বদলের পর দীর্ঘ সময়েও দেশের শেয়ারবাজার সংস্কারে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি না থাকায় হতাশা বাড়ছে।  

গত অক্টোবরে শেয়ারবাজার সংস্কার প্রস্তাব দিতে পাঁচ সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। গত সাড়ে ছয় মাসে এ টাস্কফোর্স মিউচুয়াল ফান্ড, মার্জিন ঋণ এবং আইপিও ইস্যুতে কিছু বিধিবিধান সংশোধনের খসড়া জমা দিয়েছে। শেয়ারবাজার-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব সংস্কার গুরুত্বপূর্ণ। তবে বিনিয়োগকারী বা বাজার-সংশ্লিষ্টরা আগে যেসব সংস্কার প্রত্যাশা করেন, সেখানে এখনও হাতই দেওয়া হয়নি।

টাস্কফোর্সকে মৌলিক কাঠামোগত সংস্কারে ১৭টি বিষয়ে সংস্কার প্রস্তাব দিতে দায়িত্ব দিয়েছিল বিএসইসি। টাস্কফোর্সের একাধিক সদস্য সমকালকে বলেছেন, সংস্কার প্রস্তাব প্রণয়নের বিশাল যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সেগুলো তাদের নিজের পেশাগত কাজের ফাঁকে পরিপালন করা এক প্রকার অসম্ভব। এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া দেননি সংস্থার চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের শেয়ারহোল্ডার পরিচালক শাকিল রিজভী সমকালকে বলেন, শেয়ারবাজারে সুশাসনের অভাবই বড় সমস্যা। সুশাসন না থাকার মূলে ছিল গত কয়েকটি কমিশন। তারা যথেচ্ছভাবে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থবিরোধী আইন করেছে। নিজেদের স্বার্থে মন্দ কোম্পানির আইপিও এনেছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার কর্মকর্তারা অনিয়ম ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবেন না এবং নিজেরা জড়াবেন না– এমন পরিবর্তন মানুষ প্রত্যাশা করে। সে লক্ষ্যে এখনও কোনো সংস্কারের দেখা নেই। 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টাস্কফোর্সের এক সদস্য সমকালকে বলেন, বিগত সময়ে অনিয়ম বা দুর্নীতির নেপথ্যে ছিল কমিশনের শীর্ষ নেতৃত্ব। তাদের কাজের কোনো জবাবদিহি ছিল না। কমিশনের নির্বাহী বিভাগের কর্মকর্তারা এবং বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান এবং কারসাজি চক্র এর সুযোগ নিয়েছে। কিন্তু এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল বিষয়ে সংস্কার প্রস্তাব তৈরিতে যে ধরনের লোকের প্রয়োজন ছিল, কমিটিতে সে ধরনের লোকের অভাব আছে। তার পরও তারা আগামী মে মাসের মধ্যে শেয়ারবাজারে কিছু ক্ষেত্রে সুশাসন নিশ্চিতে জনবল কাঠামো এবং তাদের দায়বদ্ধতা ইস্যুতে প্রস্তাব দেওয়ার চেষ্টা করবেন। পাশাপাশি প্রযুক্তিগত বিষয়েও কিছু সংস্কার প্রস্তাব করা হবে।

টাস্কফোর্সের অন্যতম সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আল-আমীন বলেন, কাঠামোগত সংস্কারে প্রথমে হাত দিলে হয়তো কাজই করা যেত না। নানা পর্যায় থেকে অসহযোগিতা আসত। কাজ শুরু করার পর দেখছেন, তার অনুমান সত্য। কিছু সাধারণ তথ্য চেয়েও তারা পাচ্ছেন না।
ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, বিনিয়োগকারীরা হতাশাগ্রস্ত। তারা কোনো দিশা পাচ্ছেন না। বাজারে কী সংস্কার হবে এবং হলে তাদের পক্ষে হবে কিনা, কেউ তা বুঝতে পারছেন না। বিনিয়োগকারীরা অনিশ্চয়তা পছন্দ করেন না। ফলে তারা বাজার ছাড়ছেন। বিগত সময়ের দুর্নীতিগ্রস্ত কমিশনের পরিবর্তে নতুন কমিশন গঠনের পর সবাই আশা করেছিল, বাজার ঘুরে দাঁড়াবে এবং মানুষের মধ্যে আস্থা ফিরে আসবে। তার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইন্দো-বাংলা ফার্মার ব্যবসায়িক কার্যক্রম তদন্তে বিএসইসি
  • শেয়ারবাজারে কেন এত হতাশা
  • শেয়ারবাজারে কাঠামোগত সংস্কারে অগ্রগতি নেই
  • মশিউর সিকিউরিটিজের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগের সিদ্ধান্ত