বিনিয়োগ সম্মেলন থেকে কী পেলাম, কী পাব
Published: 21st, April 2025 GMT
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা ‘বিডা’ সম্প্রতি এক চমকপ্রদ বিনিয়োগ সম্মেলনের আয়োজন করেছে। বিডার প্রধান আশিক চৌধুরীর চৌকস ইংরেজি বক্তৃতায় চারদিকে ধন্য ধন্য রব উঠেছে।
কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন, বাংলাদেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিয়ে এমন বক্তৃতা এই প্রথম শোনা গেল। কেউ বলেছেন, এবার দেশ উন্নত হবেই। কেউ বলছেন, এদের পাঁচ বছর রেখে দিন। ‘কে এই আশিক চৌধুরী’—এই শিরোনামে কেউ কেউ তাঁর জীবনী নিয়ে আলোচনাও শুরু করেছেন।
সরকার তাঁকে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে দিয়েছে, যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর পড়ে আছেন ক্যাবিনেট সচিবের নিচে। সব মিলিয়ে এই চাপের সময়েও সরকারের ভাবমূর্তি ভালো হয়েছে। অনুষ্ঠানে উপবিষ্ট উপদেষ্টাদের অতি আনন্দিত ও গর্বিত করেছে।
উপদেষ্টারা গর্বিত হয়েছেন দেখে প্রবাসে বসে আমিও গর্বিত হয়ে পড়েছি। বিশেষ ধন্যবাদ সরকারপ্রধানকে, যিনি আশিক চৌধুরীর মতো মেধাবী বিশেষজ্ঞকে প্রবাস থেকে নিয়ে আসতে পেরেছেন।
অধ্যাপক ইউনূস গুণগ্রাহিতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের মতো সব প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে ঝাঁকে ঝাঁকে অবসরপ্রাপ্ত আমলা বসিয়ে দেননি। এভাবে বিগত সরকার আনুগত্যের গ্যারান্টি পেয়েছিল, কিন্তু উদ্ভাবন পায়নি। প্রতিষ্ঠানের মান দিন দিন খারাপ হয়েছিল।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা পরিষদের সিংহভাগ পদে অবসরপ্রাপ্ত আমলা বসিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অফিসকে এক সমান্তরাল সচিবালয় বানানো হয়েছিল। অন্তর্বর্তী সরকার সে ধারা থেকে বেরিয়ে এসেছে। অনেক প্রবাসী বিশেষজ্ঞকে স্বদেশকর্মে নিয়োজিত করেছে। জনাব চৌধুরীর নিয়োগ এমনই এক দৃষ্টান্ত বটে।
সম্মেলনে অর্ধসহস্রাধিক বিদেশি যুক্ত হয়েছিলেন। আশিক চৌধুরী তাঁদের বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনার কথা বলেছেন। বলেছেন, বাংলাদেশ ২০৩৫ সালে সিঙ্গাপুর বা থাইল্যান্ড হবে অথবা হওয়ার পথেই রয়েছে।
কিন্তু বলেননি যে কোন অর্থনৈতিক পথে বাংলাদেশ আগামী ১০ বছরে সিঙ্গাপুর হবে। এখানে কোনো জাদুবিদ্যা কাজ করছে কি না, বোঝা গেল না। তাঁর বক্তৃতার প্রায় পুরোটাই ছিল অনেকটা বিপণনগত চমক বা ‘মার্কেটিং গিমিক’। নিজে ফাইন্যান্সের বিশেষজ্ঞ হয়ে অর্থায়নবিদ্যার প্রতিও সুবিচার করেননি। রিটার্ন অন একুইটি দেখিয়েছেন কোথাও ৫৬ শতাংশ, কোথাও ৮০, যা উদ্ভট ঠেকেছে। এত উচ্চ রিটার্নের পরও বিনিয়োগকারীরা ঝাঁপিয়ে পড়েননি কেন? মধু থাকলে মৌমাছি আসার কথা। এর পাশাপাশি বিডাপতি ‘রিটার্ন অন অ্যাসেট’ দেখালে চিত্রটি পূর্ণ হতো। বিনিয়োগকারীরা শুধু একুইটি রিটার্ন দেখেই ঝাঁপ দেন না।
ধরি ‘বস্টন’ নামক এক কোম্পানির অ্যাসেট ১০০ টাকা। উন্নত দেশে এই সম্পদের ৩০ শতাংশ ঋণের অংশে থাকে। বাকি ৭০ ভাগ মালিকানার অংশ বা একুয়িটি। বস্টন কোম্পানি যদি ১৪ টাকা আয় করে, তাহলে অ্যাসেট রিটার্ন হবে শতকরা ১৪ ভাগ আর একুয়িটি রিটার্ন হবে শতকরা (১৪/৭০) = ২০ ভাগ।
ধরা যাক, বাংলাদেশে হিম্মত আলী এ রকম এক কোম্পানি চালাচ্ছেন। হিম্মত আলী সরকারি দলকে টাকাপয়সা দিয়ে এমপি হয়েছেন এবং ব্যাংক লুট করার ‘রাজনৈতিক অনুমতি’ পেয়েছেন। এতে তিনি তাঁর ব্যবসার পুঁজিকাঠামো বিকৃতভাবে সাজাবেন।
যেহেতু ব্যাংকের টাকা অনেকটা ‘ফ্রি’, সেহেতু তার পুঁজিকাঠামোতে থাকবে ৯০ টাকার ঋণ। বাকি ১০ টাকা মালিকানার অংশ। হিম্মত কোম্পানি যদি মাত্র ১০ টাকা আয় করে, তাহলে অ্যাসেট রিটার্ন হবে শতকরা ১০ ভাগ, যা বস্টন কোম্পানির চেয়ে কম। কিন্তু হিম্মতের একুয়িটি রিটার্ন হবে শতকরা (১০/১০) = ১০০ ভাগ, যা বস্টন কোম্পানির চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি দেখাচ্ছে। অথচ হিম্মত কোম্পানি উচ্চমাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো সময় চিতপটাং হবে। তাই বিনিয়োগকারীরা দুটোই দেখেন। তাঁরা সেয়ানা। চিকিৎসকের মতো জিব, চোখ, নাড়ি সব পরখ করেন।
‘দ্য গ্লোবাল ইকোনমি’র তথ্যভান্ডার থেকে দেখা যায় যে ‘রিটার্ন অন একুইটি’র বৈশ্বিক তালিকায় ১৩৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৫৩তম। খুব একটা মন্দ নয়। ২১ বছরের গড় হিসেবে এটি শতকরা ১৩ দশমিক ৮৫ ভাগ। কিন্তু ‘রিটার্ন অন অ্যাসেট’ তালিকায় বাংলাদেশ নেমে পড়ে ৯৬তম স্থানে, যেখানে রিটার্ন শতকরা শূন্য দশমিক ৯৬ ভাগ। এটি ভারত, নেপাল, ভুটান , শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের চেয়ে নিচে। আশিক চৌধুরী এমবিএ করেছেন। কিন্তু রাষ্ট্রের ‘সোয়াট অ্যানালাইসিস’ এড়িয়ে গেছেন। যেখানে শক্তি, দুর্বলতা, সুযোগ ও হুমকি—এই সবকিছুই থাকতে হয়। দুর্বলতাকেও সুযোগ হিসেবে দেখানোর উপায় থাকে।
সম্মেলনের সময়ে একদিকে বিদেশিদের নিজ নিজ ব্র্যান্ড নিয়ে বাংলাদেশ আসতে বলা হচ্ছে। অন্যদিকে বাটা, কোকাকোলা বা কেএফসি-জাতীয় বিদেশি ব্র্যান্ডের দোকানে ভাঙচুর হচ্ছে। চরম অসহিষ্ণু মব সংস্কৃতি এই বার্তা দিচ্ছে যে—হে বিদেশিরা, তোমরা এই দেশ ছাড়ো। কী চমৎকার বহুত্ববাদ! আশিক চৌধুরী চটে উঠেছিলেন। সম্ভবত সে কারণেই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এই প্রথমবারের মতো কিছুটা কর্মতৎপরতা দেখিয়েছেন ‘প্রশ্রয়প্রাপ্ত’ মব সংস্কৃতির বিরুদ্ধে। কিন্তু এর কিছুদিন আগেই নিউইয়র্ক টাইমস এর প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে।
এরপরও এসবকে পাশ কাটিয়ে আশিক চৌধুরী বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার পথনকশা রচনা করেছেন। তাঁর কথায়, বাংলাদেশ হয়ে উঠবে আঞ্চলিক উৎপাদনকর্মের এক কেন্দ্রবিন্দু বা ‘রিজিওনাল ম্যানুফ্যাকচারিং হাব’। আঞ্চলিক প্রতিবেশীদের সঙ্গে যে সম্পর্ক চলছে, সে বিষয়টি জনাব চৌধুরীর ‘ক্যালকুলেশন’ থেকে বাদ পড়ে গেছে বলে মনে হয়। অথবা তিনি পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে আলাপ করে নেননি।
বিগত সরকার উন্নয়নের কাজের চেয়ে বাজনা বেশি বাজিয়েছে। শুনেছি ২০৪১ সালে নাকি বাংলাদেশ ‘উন্নত দেশ’ হবেই হবে। তখন প্রধানমন্ত্রী অফিসের দু-একজন ‘ড-বিসর্গ’ বোধ হয় হিসাবটি দিয়েছিলেন। কোনো অর্থনীতিবিদ এই সালটি ঠিক করেননি। এর সম্ভাব্যতা নিয়ে গাণিতিক সংশয় প্রকাশ করায় বাংলাদেশ ব্যাংকে থাকতে আমাকে ভর্ৎসনা শুনতে হয়েছিল।
এখন জনাব চৌধুরী মাত্র ১০ বছরে বাংলাদেশকে সিঙ্গাপুর বানানোর যে স্বপ্ন দেখালেন, সেটি তার চেয়েও অদ্ভুত। বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২৩-এ বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৫৫১ ডলার। সিঙ্গাপুরে সেটি ৮৪ হাজার ৭৩৪ ডলার। বাংলাদেশের ৩৩ গুণ বেশি। সুখবর হচ্ছে, বাংলাদেশের ৫ দশমিক ৮ ভাগের প্রবৃদ্ধি সিঙ্গাপুরের ১ দশমিক ১ ভাগের প্রবৃদ্ধির চেয়ে যথেষ্ট মাত্রায় বেশি। ফলে ওকে ধরা যাবে। তবে এই তথ্যের ভিত্তিতে তার জন্য সময় লাগবে ৭৭ বছর। যদি ১০ বছরে নেহাত সিঙ্গাপুরকে ধরতেই হয়, তাহলে প্রতিবছর প্রবৃদ্ধির হার হতে হবে ৩৩ শতাংশের ওপর, যা পৃথিবীতে আজ পর্যন্ত কোথাও অর্জিত হয়নি। বিডাপতি অর্থনীতির হিসাব-নিকাশ ঠিক না করেই অর্থনীতি–সম্পর্কিত বিনিয়োগ সম্মেলন ডেকেছেন। তঁার ভাষায়, এই স্বপ্ন, এই কল্পনা আর এই দূরদৃষ্টি শুরু হয়েছে মাত্র আট মাস আগে। এটি তো অন্তর্বর্তী সরকারের একটি অংশের দাবি। এর আগে কি কেউ বাংলাদেশকে নিয়ে স্বপ্ন বা দূরদৃষ্টি বা পরিকল্পনা রচনা করেননি?
বিনিয়োগ কোনো দৈবপ্রাপ্ত ধন নয়। এর দীর্ঘ ধারাবাহিকতা থাকে। বাংলাদেশেও তা রয়েছে। বিনিয়োগ জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়িয়েছে। আবার প্রবৃদ্ধিও বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। একটি দেশের প্রবৃদ্ধির ইতিহাস ও প্রবণতারেখা না বিচার করে কখনো স্বপ্নতাড়িত হয়েই বিদেশি বিনিয়োগ আসে না। বাংলাদেশে আশির দশকে গড় প্রবৃদ্ধি ছিল ৩ দশমিক ৫৪ ভাগ, নব্বইয়ে তা বেড়ে হয় ৪ দশমিক ৭১ ভাগ, দুই হাজারের দশকে তা বেড়ে হয় ৫ দশমিক ৬ ভাগ এবং দুই হাজার দশের দশকে তা সর্বোচ্চে উঠে দাঁড়ায় ৬ দশমিক ৬ ভাগে।
প্রবৃদ্ধির এই ত্বরণের ইতিহাস এই উপমহাদেশে শুধু বাংলাদেশ আর ভারতেরই রয়েছে। এটিই বিনিয়োগ আকর্ষণের সবচেয়ে বড় যুক্তি। জনাব চৌধুরী স্বপ্ন দেখতে গিয়ে অনেক বড় স্বপ্নই দেখে ফেলেছেন। কিন্তু অর্থনীতির হিসাব-নিকাশে সুবিচার করেননি। তার চেয়েও বড় বাস্তবতা হচ্ছে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এলেই বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ে। গত আট মাসে বিদেশি বিনিয়োগ তাই ২০ শতাংশ কমে গেছে। তাই সরকারকে এই বাস্তবতা মেনে দ্রুত উত্তরণের পথ খুঁজতে হবে।
● ড.
বিরূপাক্ষ পাল স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্ক অ্যাট কোর্টল্যান্ডের অর্থনীতির অধ্যাপক। সাম্প্রতিক গ্রন্থদ্বয় সংকটকালের অর্থনীতি এবং বাংলাদেশের অর্থনীতির সংস্কার
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জন ব চ ধ র র প রব দ ধ প রব দ ধ র র ট র ন অন র ট র ন হব উপদ ষ ট মন ত র হ ম মত কর ছ ন হয় ছ ল দশম ক সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
রাবির ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় সন্তোষজনক উপস্থিতি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা ও দুপুর আড়াইটা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত দুটি শিফটে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পাঁচ বিভাগীয় কেন্দ্রে এবার মোট ১ হাজার ৮৭২টি আসনের বিপরীতে পরীক্ষায় বসেছেন ৯৬ হাজার ১৬২ জন ভর্তিচ্ছু। সেই হিসেবে আসনের বিপরীতে লড়েছেন ৫১ জন শিক্ষার্থী। কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক বেলাল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
রাবি ভর্তি পরীক্ষায় শহীদ আবু সাঈদ ও জেন-জি নিয়ে প্রশ্ন
রাবিতে ভর্তিচ্ছুদের পাশে শিবির-ছাত্রদল
পরীক্ষার প্রথম শিফটে ৪৮ হাজার ৮২ জনের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ১৫ হাজার ৭৯২ জন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ১৬ হাজার ৬৬৪ জন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ৮ হাজার ৫৭ জন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ৫ হাজার ২৬৮ জন এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ২ হাজার ৩০১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেওয়া কথা। এর মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে শতকরা ৮৯.৪৮ শতাংশ পরীক্ষায় উপস্থিত ছিলেন।
দ্বিতীয় শিফটে ৪৮ হাজার ৮০ জন পরীক্ষার্থী মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ১৫ হাজার ৭৯২ জন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ৬ হাজার ৬৬৩ জন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ১০ হাজার জন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ৮ হাজার ৫৬ জন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ৫ হাজার ২৬৮ জন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ২ হাজার ৩০১ জন অংশ নেওয়া কথা। এর মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে শতকরা ৮৯.৮২ শতাংশ পরীক্ষায় উপস্থিত ছিলেন।
তবে বাকি কেন্দ্রগুলোতে পরীক্ষার্থী উপস্থিতির হার জানা যায়নি।
এদিকে, ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা সকাল ১০টার কিছু আগে থেকেই নির্ধারিত কেন্দ্রের সামনে আসতে শুরু করেন। পরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পরীক্ষার্থীরা সারিবদ্ধ হয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। পরীক্ষার হলে কোনো ধরনের ক্যালকুলেটর, মোবাইল ফোন, ব্লুটুথ ও মেমোরিযুক্ত অন্য কোনো ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস সঙ্গে নিতে দেওয়া হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ‘এ’ ইউনিটের অধিনে চারটি অনুষদ ও একটি ইনস্টিটিউটের জন্য ১ হাজার ৮৭২টি আসন বরাদ্দ রয়েছে। এর মধ্যে কলা অনুষদে ৮৮৬টি, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে ৬৫৬টি, আইন অনুষদে ১৬০টি, চারুকলা অনুষদে ১২০টি এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে ৫০টি আসন।
এবারের পরীক্ষার প্রথম শিফটের প্রশ্নে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদ ও এই আন্দোলনের অন্যতম শক্তি জেনারেশন-জি নিয়ে প্রশ্ন এসেছে। এছাড়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়েও প্রশ্ন এসেছে। তবে এ ইউনিটের প্রথম শিফটের প্রশ্নপত্রে তিনটি প্রশ্নে ভুল পাওয়া গিয়েছে।
ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলোর পাশাপাশি অরাজনৈতিক জেলা ও উপজেলা ছাত্র সংগঠনগুলোর কার্যক্রম ছিল চোখে পড়ার মতো। পুরো রাবি ক্যাম্পাসই ভরে যায় চেয়ার-টেবিল-ব্যানারে।
ভর্তি পরীক্ষায় নিরাপত্তার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. মাহবুবর রহমান বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় যেকোনো জালিয়াতি ঠেকাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সবসময় তৎপর রয়েছে। পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ৭০ জন ট্রাফিক সদস্য, ১৫০ জন পুলিশ সদস্য, ৩০ জন গোয়েন্দা পুলিশ এবং বিএনসিসি ও স্কাউটের ২০০ জন সদস্য কাজ করেছেন।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী