রোহিত-সূর্যের ব্যাটে তিন বছর পর চেন্নাইকে হারাল মুম্বাই
Published: 21st, April 2025 GMT
মাহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বাধীন চেন্নাই সুপার কিংসকে হারানো যেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের কাছে বহু কাঙ্ক্ষিত এক লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল। টানা কয়েক বছর ধরে চেন্নাইয়ের বিপক্ষে জয় বঞ্চিত থাকার পর অবশেষে রোববারের (২০ এপ্রিল) ম্যাচে সেই জয়ের স্বাদ পেল মুম্বাই। এদিন ৯ উইকেটের দাপুটে জয় তুলে নেয় রোহিত শর্মার দল।
এই জয়ে মূল নায়ক ছিলেন মুম্বাইর দুই ব্যাটসম্যান— রোহিত শর্মা ও সূর্যকুমার যাদব। রোহিত ৪৫ বলে ৪টি চার ও ৬ ছক্কায় ঝড়ো ৭৬ রানের ইনিংস খেলেন। আর সূর্যকুমার ৩০ বলে ৬টি চার ও ৫ ছক্কায় করেন ৬৮ রান। তাতে চেন্নাইর ছুড়ে দেওয়া ১৭৭ রানের লক্ষ্য মুম্বাই ছুঁয়ে ফেলে মাত্র ১৫.
তার আগে চেন্নাই ইনিংসের শুরুটা ছিল কিছুটা ধীরগতির। তবে মিডল অর্ডারে শিভম দুবে ও রবীন্দ্র জাদেজা ফিফটি তুলে নেন। জাদেজা ৩৫ বলে ৪টি চার ও ২ ছক্কায় অপরাজিত ৫৩ ও দুবে ৩২ বলে ২টি চার ও ৪ ছক্কায় করেন ৫০ রান। এছাড়া অভিষেক ম্যাচেই আলো ছড়িয়েছেন তরুণ ব্যাটার আয়ুষ। মাত্র ১৫ বলে ৩২ রানের ইনিংসে চারটি চার ও দুটি ছক্কা হাঁকিয়ে তাক লাগিয়ে দেন।
মুম্বাইয়ের বোলিং শুরু থেকেই ছিল নিয়ন্ত্রিত। ১৩ ওভার শেষে চেন্নাইয়ের রান ছিল ৩ উইকেটে ৯২। তখন আক্রমণাত্মক রূপ নেন দুবে। হার্দিক পান্ডিয়াকে মারেন বিশাল ছক্কা, পরে বোল্টের এক ওভারে মারেন চার ও ছয়। ১৬তম ওভারে আশ্বিনী কুমারকে এক ওভারেই তিনটি ছক্কা ও একটি চারে কাঁপিয়ে দেন জাদেজা ও দুবে। এই জুটিতে আসে ৭৯ রান। ইনিংস শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে চেন্নাই তোলে ১৭৬ রান।
জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমেই তাণ্ডব শুরু করে মুম্বাই। ওপেনিং জুটিতে মাত্র ৬.৪ ওভারে আসে ৬৩ রান। রায়ান রিকেলটন আউট হয়ে ফিরলে মাঠে নামেন সূর্যকুমার। এরপর শুরু হয় রোহিত-সূর্যের রানের বন্যা। তারা দ্বিতীয় উইকেটে ৫৪ বলে গড়েন ১১৪ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি, যা চেন্নাইয়ের বিপক্ষে সহজ জয় এনে দেয়।
এই নিয়ে টানা তিনটি ম্যাচে জয় পেল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। পয়েন্ট টেবিলেও উন্নতি হয়েছে তাদের। আট ম্যাচে আট পয়েন্ট নিয়ে তারা এখন রয়েছে ছয় নম্বরে। অন্যদিকে, চেন্নাই সুপার কিংসের অবস্থা বেশ কঠিন। আট ম্যাচে মাত্র দুই জয়, ছয় হার। মাত্র ৪ পয়েন্ট নিয়ে তারা রয়েছে দশম স্থানে।
ঢাকা/আমিনুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মঙ্গল গ্রহে মানব বসতি স্থাপনে যত চ্যালেঞ্জ
লাল রঙের মঙ্গল গ্রহ নিয়ে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। তাই দীর্ঘদিন ধরে মঙ্গল গ্রহকে প্রাণধারণের উপযোগী করতে গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। শুধু বিজ্ঞানীরাই নন, মঙ্গল গ্রহে মানুষের বসতি স্থাপনের জন্য কাজ করছেন স্পেসএক্স, টেসলাসহ খুদে ব্লগ লেখার সাইট এক্সের (সাবেক টুইটার) মালিক ইলন মাস্কও। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে মঙ্গল গ্রহে বসতি গড়ার জন্য ১০ লাখ মানুষকে নিয়ে যেতে চান তিনি। তবে মানুষ কি আদৌ মঙ্গল গ্রহের প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকতে পারবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, মঙ্গল গ্রহের বায়ুমণ্ডল পৃথিবীর তুলনায় প্রায় ১০০ গুণ পাতলা এবং ৯৫ শতাংশই কার্বন ডাই–অক্সাইডে পরিপূর্ণ। অক্সিজেনের পরিমাণ খুবই কম থাকায় শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য উপযুক্ত নয়। তাই মঙ্গল গ্রহে মানুষের টিকে থাকার জন্য কৃত্রিমভাবে অক্সিজেন সরবরাহ করতে হবে। শুধু তা–ই নয়, মঙ্গল গ্রহের বায়ুমণ্ডল মানুষকে মহাজাগতিক ও সৌর বিকিরণ থেকে পর্যাপ্ত সুরক্ষা দিতে পারবে না। এর ফলে মানুষের শরীরে ক্যানসারের পাশাপাশি স্নায়বিক ক্ষতি ও অন্যান্য মারাত্মক রোগ হতে পারে।
মঙ্গল গ্রহে বসতি স্থাপনের আরেকটি ঝুঁকি হচ্ছে তাপমাত্রা। মঙ্গল গ্রহের গড় তাপমাত্রা মাইনাস ৬৫ থেকে মাইনাস ১২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা মানুষের জীবনধারণের জন্য অত্যন্ত কঠিন। তাই সেখানে বসবাস করতে হলে উষ্ণ আবাসস্থল ও বিশেষ পোশাকের প্রয়োজন হবে। আরেকটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মঙ্গল গ্রহের ধূলিঝড়। সেখানে ধূলিঝড় কয়েক সপ্তাহ বা মাস ধরে চলতে পারে। ধূলিঝড়ের সময় পুরো গ্রহ ধুলায় ঢেকে যায়। এর ফলে সৌর প্যানেল বসানো হলে তা ধূলিঝড়ের সময় অকার্যকর হয়ে যেতে পারে।
মঙ্গল গ্রহে তরল পানির অস্তিত্ব সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাই মানব বসতির জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ নিশ্চিত করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে। শুধু তা–ই নয়, খাদ্য উৎপাদন করতে হবে মানুষকে, যা মঙ্গল গ্রহের প্রতিকূল পরিবেশে কঠিন হতে পারে। এ ছাড়া মঙ্গলের মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে মানুষের হাড় এবং পেশি দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
সূত্র: রয়েল মিউজিয়াম গ্রিনউইচ ও প্ল্যানেটারি সোসাইটি