সত্তরতম জন্মদিনে পৃথিবীতে ফিরলেন নাসার নভোচারী
Published: 21st, April 2025 GMT
ধরুন, কয়েক দিন বাদে একজনের বয়স ৭০ পূর্ণ হবে। এই বয়সী মানুষের জন্মদিনের আয়োজন হয় সাদামাটা। সর্বোচ্চ একটি কেক, কিছু উপহার আর নিকটাত্মীয়রা থাকেন। কিন্ত যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসায় কর্মরত সবচেয়ে প্রবীণ নভোচারী ডন পেট্টিটের এবারের জন্মদিনটা ছিল অন্য সবার চেয়ে আলাদা। কারণ, গতকাল রোববার সত্তরতম জন্মদিনে তিনি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস) থেকে পৃথিবীতে ফিরেছেন।
ডন পেট্টিট ও আরও দুজন রুশ নভোচারীকে নিয়ে একটি মহাকাশযান গতকাল কাজাখস্তানে অবতরণ করে। রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা রসকসমস গতকাল এক বিবৃতিতে জানায়, ‘আজ মস্কোর স্থানীয় সময় ভোররাত ৪টা ২০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টা ২০) সোইয়ুজ এমএস–২৬ ক্যাপসুল অ্যালেক্সি ওভশিনিনি, ইভান ভাগনার ও ডোনাল্ড (ডন) পেট্টিটকে নিয়ে কাজাখাস্তানের কাজাখ শহরের অদূরে অবতরণ করেছে।’
নাসায় ২৯ বছর ধরে কর্মরত ডন পেট্টিট। নভোচারী হিসেবে দীর্ঘ এই কর্মময় জীবনে ১৮ মাসের বেশি সময় তিনি মহাকাশে কাটিয়েছেন। এবার নিয়ে চার দফায় মহাকাশে গিয়েছিলেন পেট্টিট।৭ মাসের মিশনে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে ২২০ দিন কাটান পেট্টিট, ওভশিনিনি ও ভাগনার। এই সময়ে তাঁরা পৃথিবীকে ৩ হাজার ৫২০ বার প্রদক্ষিণ করেন। এই যাত্রায় ৯ কোটি ৩৩ লাখ মাইল ভ্রমণ করেছেন তিন মহাকাশচারী।
নাসায় ২৯ বছর ধরে কর্মরত ডন পেট্টিট। নভোচারী হিসেবে দীর্ঘ এই কর্মময় জীবনে ১৮ মাসের বেশি সময় তিনি মহাকাশে কাটিয়েছেন। এবার নিয়ে চার দফায় মহাকাশে গিয়েছিলেন পেট্টিট।
প্রত্যন্ত এলাকায় অবতরণের কিছু ছবি প্রকাশ করেছে নাসা। তাতে দেখা যায়, হাত উঁচু করে মহাকাশযান থেকে বের হয়ে আসছেন তিনজন। তাঁদের সেখান থেকে বের করে চিকিৎসার জন্য একটি তাঁবুতে নেওয়া হচ্ছে।মহাকাশ স্টেশন থেকে পৃথিবীতে আসতে পেট্টিট, ওভশিনিনি ও ভাগনারের সময় লেগেছে তিন ঘণ্টার একটু বেশি। তাঁদের বহনকারী মহাকাশযানটির কাজাখস্তানের দক্ষিণ–পূর্বের একটি
প্রত্যন্ত এলাকায় অবতরণের কিছু ছবি প্রকাশ করেছে নাসা। তাতে দেখা যায়, হাত উঁচু করে মহাকাশযান থেকে বের হয়ে আসছেন তিনজন। তাঁদের সেখান থেকে বের করে চিকিৎসার জন্য একটি তাঁবুতে নেওয়া হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চীন থেকে ফেরত গেল বোয়িংয়ের আরও একটি উড়োজাহাজ
ট্রাম্পের কর আগ্রাসনের শিকার হলো বোয়িংয়ের আরও একটি এয়ারক্রাফট। চীনের জন্য নির্মিত দ্বিতীয় বোয়িং উড়োজাহাজটিও নিজ দেশ যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে গেছে। দুই দেশের পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ ও চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাবে এয়ারক্রাফটিকে ফিরতে হলো বলে মত বিশ্লেষকদের। খবর রয়টার্সের।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট এয়ারনাভ রাডারের তথ্য বলছে, স্থানীয় সময় সোমবার সাংহাইয়ের কাছে বোয়িংয়ের ঝোশান কেন্দ্র ছেড়ে যাওয়ার পর ৭৩৭ ম্যাক্স ৮ মডেলের উড়োজাহাজটি মার্কিন ভূখণ্ডের গুয়ামে অবতরণ করে।
চীনা আকাশসেবা প্রতিষ্ঠান জিয়ামেন এয়ারের জন্য যাত্রীবাহী এই উড়োজাহাজটি নির্মাণ করা হয়েছিল।
এর আগে গতকাল রোববার চীনের জিয়ামেন এয়ারলাইন্সের জন্য নির্মিত ৭৩৭ ম্যাক্স মডেলের একটি উড়োজাহাজ ঝোশান থেকে ফিরতি যাত্রা করে এবং সিয়াটলের বোয়িং ফিল্ডে অবতরণ করে।
তবে কোন পক্ষ দুটির সিদ্ধান্তে এয়ারক্রাফট দুটি যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত গেছে তা স্পষ্ট করেনি কেউ।
এদিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনা ক্রেতারা ক্রয়াদেশ অনুসারে ডেলিভারি না নিলেও মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সকে বিকল্প ক্রেতা হিসেবে পেতে পারে বোয়িং। এর আগে এই ধরনের যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ কেনার বিষয়ে মার্কিন প্রস্তুতকারকের কাছে আগ্রহের কথাও জানিয়েছে মালয়েশিয়ার আকাশসেবা প্রতিষ্ঠানটি।
চলতি মাসে চীনের পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। এর জবাবে চীনের পক্ষ থেকে মার্কিন পণ্যে আরোপ করা হয় ১২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক।
উড়োজাহাজ পরিবহনবিষয়ক পরামর্শদাতা সংস্থা আইবিএ জানিয়েছে, ৭৩৭ ম্যাক্স মডেলের নতুন একটি উড়োজাহাজের বাজারমূল্য প্রায় ৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার। এর শুল্ক চীনা উড়োজাহাজ সংস্থাকে পঙ্গু করে দেওয়ার মতো।
তবে বোয়িংয়ের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। জানতে চেয়ে যোগাযোগ করলে জিয়ামিন এয়ারও কোনো জবাব দেয়নি। আকাশযানশিল্পটি কয়েক দশক ধরে শুল্কমুক্ত অবস্থায় ছিল। পাল্টাপাল্টি শুল্কের জেরে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এখন এটা নতুন উড়োজাহাজ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটার সর্বশেষ লক্ষণ।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, শুল্ক পরিবর্তন নিয়ে বিভ্রান্তি অনেক ক্ষেত্রে উড়োজাহাজ সরবরাহকে স্থবির করে দিতে পারে। বেশ কিছু উড়োজাহাজ সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তারা (সিইও) বলেছেন, তাঁরা বাড়তি শুল্ক দেওয়ার বদলে বরং আপাতত উড়োজাহাজ সরবরাহ স্থগিত রাখবেন।