গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে জড়িত বিভিন্ন বাহিনীর কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে গুমবিরোধী সংগঠন ‘মায়ের ডাক’। গতকাল রোববার সুপ্রিম কোর্টের ফটকে এ কর্মসূচিতে অংশ নেন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা।
পরে মায়ের ডাকের সংগঠক সানজিদা ইসলাম তুলির নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল ছয় দাবিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের কাছে স্মারকলিপি দেয়।
মায়ের ডাকের দাবির মধ্যে রয়েছে– ‘আয়নাঘর’ ও গুম-নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন বাহিনীর কর্মকর্তা, গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য এবং সরকারি কর্মকর্তাদের নামের তালিকা প্রকাশ ও অবিলম্বে সীমান্ত পেরিয়ে পালিয়ে যাওয়া ঠেকানো, খুন-গুম ও নির্যাতনে জড়িত সবাইকে আইনি প্রক্রিয়ায় গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠাতে হবে। ভবিষ্যতে গুম, নির্যাতন ও গোপন বন্দিশালার পুনরাবৃত্তি ঠেকানোর নিশ্চয়তা দিতে হবে এবং সংবিধান ও মানবাধিকার সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় আইনি সংস্কার আনতে হবে। 

মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার আট মাস পরও গুম-খুনের বিচার নিশ্চিত করতে পারছে না। দ্রুত এসবের বিচার হওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, দ্রুত গুম-খুন ও ছাত্র-জনতা হত্যার বিচার করতে হবে। জুলাই গণহত্যার সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যদেরও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।
মানববন্ধনে সানজিদা ইসলাম তুলি বলেন, গুমের সঙ্গে জড়িত সবাইকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী খুনিদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোল চলবে। প্রয়োজনে আমরা আবারও রাজপথে নামব।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

সারা দেশে সব কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের মহাসমাবেশ আজ 

ছয় দফা দাবিতে আজ রোববার সারা দেশে মহাসমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ। সব কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে এ সমাবেশ হবে।

গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। মানববন্ধন শেষে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মূল ফটকের নামফলক লাল কাপড়ে ঢেকে দেন আন্দোলনকারীরা। গতকাল তাঁদের কর্মসূচি ছিল ‘রাইজ ইন রেড’। কর্মসূচি পালনকালে আন্দোলনকারীরা ‘মামা থেকে মাস্টার, মামাবাড়ির আবদার’, ‘এক হও এক হও, পলিটেকনিক এক হও’, ‘ষড়যন্ত্রের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘কুমিল্লায় হামলা কেন, প্রশাসন জবাব দাও’ এমন বিভিন্ন স্লোগান দেন।

কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি মাসফিক ইসলাম মানববন্ধনে বলেন, আগামীকাল (রোববার) মহাসমাবেশের মাধ্যমে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবি বাস্তবায়নে চূড়ান্ত সময়সীমা ঘোষণা করবেন।

গত বুধবার ছয় দফা দাবিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা সড়ক, মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। সড়ক আটকে রাখায় তীব্র যানজটে পড়ে দিনভর ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে। পরে তাঁরা সারা দেশে বৃহস্পতিবার ‘রেল ব্লকেড’ বা রেলপথ অবরোধ করার ঘোষণা দেন। পরে অবশ্য রেল ব্লকেড কর্মসূচি শিথিল করা হয়।

বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে অতিরিক্ত সচিব (কারিগরি অনুবিভাগ) রেহানা ইয়াছমিনের বৈঠক হয়, কিন্তু তাতে শিক্ষার্থীরা সন্তুষ্ট হননি। এ অবস্থায় তাঁরা আন্দোলনের কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

প্রসঙ্গত, পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির মধ্যে প্রথমটি হলো, জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ পদোন্নতি কোটা বাতিল করতে হবে। এ ছাড়া জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতির রায় বাতিল, ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদবি পরিবর্তন, মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চাকরিচ্যুত, ২০২১ সালে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের নিয়োগ বাতিল এবং সেই বিতর্কিত নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধন করতে হবে।

ঢাকার বাইরে বিক্ষোভ সমাবেশ

গাজীপুরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় শহরের শিববাড়ী মোড়ে শিমুলতলী-শিববাড়ী সড়ক অবরোধ করে তাঁরা এ কর্মসূচি করেন। সকাল ১০টার দিকে গাজীপুরে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট) ফটক থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন নগরের বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শিববাড়ী মোড়ে পৌঁছালে তাঁরা সড়কে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সমাবেশ শেষ করে তাঁরা ফিরে যান।

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফরিদপুর শহরের বায়তুল আমান এলাকায় অবস্থিত ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে‌ কর্মসূচি পালিত হয়। ফরিদপুর সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রধান ফটকের সামনে রাস্তায় মানববন্ধন পালন করা হয় ও মানববন্ধন–পরবর্তী প্রতিষ্ঠানের মূল ফটক অনির্দিষ্টকালের জন্য লাল কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়।

গতকাল বেলা একটার দিকে বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নগরের চৌমাথা এলাকায় এসে জড়ো হন। সেখান ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন তাঁরা। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান, ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে দাবির পক্ষে অবস্থান নেন। এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা দাবি আদায় না করে রাজপথ ছাড়ব না।’ বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তাঁরা বলেন, ‘আমরা এই হামলাকারীদের বিচার চাই।’

[প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার নিজস্ব প্রতিবেদকপ্রতিনিধিরা]

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুদ‌কের সাম‌নে জিএম কাদেরকে গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন
  • ৫ দাবিতে শেকৃবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
  • বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে গাজীপুরে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
  • হাসপাতাল চালুর দাবিতে সুনামগঞ্জে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
  • আমরা আর কত অপেক্ষা করব, প্রশ্ন গুম হওয়া বাবার সন্তানের
  • গুম-খুনে জড়িতদের বিচারের দাবিতে ‘মায়ের ডাক’র মানববন্ধন
  • পদ্মার বালু উত্তোলন ঘিরে নড়িয়ায় বিএনপির দুই পক্ষ মুখোমুখি
  • সারা দেশে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের মহাসমাবেশ আজ
  • সারা দেশে সব কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের মহাসমাবেশ আজ